স্টাফ রিপোর্টার ।।
আজ শনিবার ১৮ ফেব্রুয়াীি দিবাগত রাত পবিত্র শবে মিরাজ। রাতে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত ও করুণা পাবার জন্য ধর্মপ্রাণ মসজিদে মসজিদে, বিভিন্ন দরবার ও মাজার শরীফে মুসলমানরা নিজগৃহে কিংবা ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কুরআনখানি,জিকির-আজগার,মিলাদ- মাহফিল এবং ইবাদত- বন্দেগির মধ্যদিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শবে মিরাজ উদযাপন করবে।
ইসলামে মিরাজের রাত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই রাতে রাসুলুল্লাহ্ (স.) এর জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মোজেজা সংঘটিত হয়। ২৭ রজব রাতকে শবে মেরাজ বলা হয়। এই ইবাদত বন্দেগি প্রথম পাতার পর রাতে মহানবী (স.) বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আরবি শব্দ ‘মিরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্বগমন করা। লাইলাতুল মিরাজের অর্থ দাঁড়ায়-ঊর্ধ্বর্গমনের রাত। ৫০ বছর বয়সে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক শ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী মহানবী হজরত মুহম্মদ মোস্তফা(সা.) রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে জাগ্রত অবস্থায় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা, এরপর বোরাকে করে ঊর্ধ্বাকাশ পাড়ি দেয়ার মাধ্যমে আরশে আজিমে পৌঁছে আল্লাহর দিদার লাভ করেন। পবিত্র মিরাজের যাত্রা শুরু হয় মসজিদে হারাম থেকে। হজরত জিব্রাইল (আ.) বোরাকে করে নবীজিকে বায়তুল মোকাদ্দাস নিয়ে যান। ওখানে তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়েন। ওই নামাজে নবীজি (স.) সব নবীগণের ইমামতি করেন। এরপর ঊর্ধ্বাকাশে যাত্রা করেন। যাত্রাপথে প্রত্যেক আসমানে পূর্ববর্তী নবীগণের সাথে সাক্ষাৎ হয়। এরপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পবিত্র মিরাজের রাতে বিশ্বনবী (স.) স্বচক্ষে বেহেশত- দোজখ দেখেছেন। অনেক পাপের শাস্তি প্রত্যক্ষ করেছেন। সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ,আরশ-কুরসি প্রভৃতি সামনাসামনি সশরীরে দেখা, সর্বোপরি মহান রবের সঙ্গে পবিত্র দিদার লাভ করাসহ অবলোকন করেছেন সৃষ্টিজগতের অপার রহস্য। নামাজের বিধান রচিত হয় এ রাতেই। পবিত্র শবে-মিরাজ উদযাপন উপলক্ষে আজ দুপুর দেড়টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র শবে মেরাজ’র গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভা মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. বশিরুল আলম। আলোচক হিসেবে থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুল কাদির।
এদিকে পবিত্র শবে মিরাজকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ নানা কর্মসূচী গ্রহন করেছে। নগরীর মসজিদ, মাদরাসা,দরবার এবং মাজার শরীফ গুলোতে নেয়া হয়েছে বিশেষ কর্মসূচী। রাতব্যাপী নফল নামাজ,ইবাদত বন্দেগী, জিকির আজকার দিনে নফল রোজা রাখছেন তারা। কুমিল্লার দারোগা বাড়ী হযরত শাহ্ আবদুল্লাহ্ ক্বাদেরী গাজীপুরী (রহ) মাজার শরীফ, শাহপুর দরবার শরীফের হযরত শাহ নুরুদ্দীন আলক্বাদেরী বন্দী শাহ্ (রহ) ও হযরত শাহ্ সুফি ক্বারী গাজী শায়খ মাওলানা আবদুস্ সোবহান আলক্বাদেরী ( রহ) , বখশীয়া দরবার শরীফসহ বিবিন্ন মাজার শরীফ গুলোতে জেয়ারত করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
পবিত্র শবে মিরাজ উপলক্ষে কুমিল্লার আরেফে রাব্বানী শাহ্ আবদুস্ সোবহান রিসার্চ সোসাইটি সারা রাতব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। পবিত্র শবে মিরাজের তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা,কোরআন তিলাওয়াত, জিকির আজকার, মিলাদ মাহফিল, হামদ,নাত ও গাউছিয়া শরীফসহ বিভিন্ন ক্বাসিদা পরিবেশন,সালাতুস সালাম এবং ইনশাআল্লাহ রোববার বাদে ফজর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন আরেফে রাব্বানী শাহ্ আবদুস্ সোবহান রিসার্চ সোসাইটির মাননীয় প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন সাবের সোবহানী আলক্বাদেরী।