1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
সুস্থতা ও প্রবাস জীবন নিয়ে চিন্তিত ৫ আগস্টে গুলিবিদ্ধ চৌদ্দগ্রামের আজাদ - Dainik Cumilla
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে কনকাপৈত ইউনিয়নে ০৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল মাহে রমজান সংযম, ত্যাগ, ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়: সফিকুর রহমান ব্রাহ্মণপাড়ায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় অবৈধ আতশবাজি আটক কুমিল্লা আলিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল মতিনের প্রথম জানাজায় মুসল্লিদের ঢল ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার (ভিসিটি)’র ইফতার মাহফিল সম্পন্ন মনোহরগঞ্জের বিপুলাসারে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর উপর হামলা কুমিল্লায় বিজিবি’র অভিযানে ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার অবৈধ ভারতীয় বাজি জব্দ নাঙ্গলকোটে ধর্ষণ মামলায় যুবলীগ নেতা শ্রীঘরে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। যারা লুটপাট করছে তাদের কথা আসছে না -বরকত উল্লাহ বুলু

সুস্থতা ও প্রবাস জীবন নিয়ে চিন্তিত ৫ আগস্টে গুলিবিদ্ধ চৌদ্দগ্রামের আজাদ

  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৩ বার পঠিত

 

মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম.  ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে থানা পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের বাতিসা মধ্যমপাড়ার মৃত আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে প্রবাসী মো: আজাদ হোসেন। গুলিটি তার পিঠে লেগে বাম বুকের উপরের অংশের হাড় ভেঙ্গে ও মাংশ ছিড়ে বেরিয়ে যায়। এতে তার বাম হাতটি একেবারেই ঝুলে পড়ে এবং রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকে থানা চত্ত¡রে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মুন্সীরহাট ইউনিয়নের মুমূর্ষু জামশেদুর রহমান জুয়েল এর সাথে তাকেও একই অ্যাম্বুলেন্সে করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চোখের সামনে জামশেদুর রহমান জুয়েল ইন্তেকাল করলে আহত আজাদ হোসেন ও তার আত্মীয় স্বজনরাও হতাশ হয়ে পড়েন। কায়োমনো বাক্যে স্বজনরা মহান রবের নিকট আজাদ হোসেনের প্রাণ রক্ষার আকুতি জানান। আজাদ হোসেনও শাহাদাতের মৃত্যুর প্রস্তুতি স্বরূপ কিঞ্চিৎ জ্ঞান থাকাবস্থায় কালেমা সহ দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঐদিন রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় ও ডাক্তারদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একটি সফল অপারেশনের মাধ্যমে দীর্ঘসময় পর তার জ্ঞান ফিরে আসে। উপস্থিত স্বজনরা মহান রবের শুকরিয়া জ্ঞাপন করে সমস্বরে বলে উঠেন আলহামদুলিল্লাহ্। ছয়দিন পর হাসপাতালের বেড ছেড়ে বাসায় ফিরেন আজাদ হোসেন। ঔষধ সেবন সহ যথাযথ চিকিৎসা সেবা গ্রহণের পরও ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষতে পচনের চিন্তা গেড়ে বসে সকলের মনে। এরপর আবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পান ক্ষতস্থানের ভেতরে ব্যান্ডেজ কাপড় (গজ) রেখেই সে স্থানে সেলাই করা হয়েছিলো। এটি নিতান্তই চিকিৎসা ভুল নাকি পরিস্থিতির বাস্তবতা সেটা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। পরে আজাদ হোসেনকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পাশাপাশি আবার বসতে হয় অপারেশন টেবিলে। কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আরেকটি সফল অপারেশনের মাধ্যমে গজ কাপড় বের করে পুনরায় ক্ষতস্থানে সেলাই দিতে হয়। ৫ দিন পর রিলিজ হয়ে বাড়ী ফিরেন আজাদ হোসেন। এরপর থেকে অদ্যবদি চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। বর্তমানে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ঠিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন না এখনো। চিকিৎসক জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ সুস্থ হতে কমপক্ষে আরো ছয় মাসের অধিক সময় লাগবে। গুলির আঘাতে ভাঙ্গা হাড়ের চিকিৎসায় লাগতে পারে আরো একটি জটিল অপারেশন। এরমধ্যে চিকিৎসা সেবা চলমান রাখার পাশাপাশি ভারি কাজ এড়িয়ে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে তাকে।

হৃদয়বিদারক এমন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ আজাদ হোসেন বলেন, ‘উত্তেজিত জনতা কর্তৃক চৌদ্দগ্রাম থানায় হামলার ঘটনা রুখতে উপজেলার বিভিন্ন দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে থানা ভবনের ভেতরে গিয়েছিলাম। ঘটনা কিছুটা সামাল দিয়ে থানা গেইট থেকে বের হতে গিয়ে হঠাৎ পেছন থেকে আসা একটি গুলি লাগে পিঠের বাম পাশে। যা বুক বেঁদ করে হাড়-মাংশ নিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর গুলিবিদ্ধ হাতটি একেবারে ঝুলে পড়ে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। দীর্ঘক্ষণ পরে হাসপাতালের বেডে নিজেকে খুঁজে পাই। এদিন মৃত্যু যন্ত্রণাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। বাঁচার শেষ ভরসা একমাত্র আল্লাহর উপর তায়াক্কুল করা ছাড়া আর কোনো প্রত্যাশা ছিলোনা তখন। আল্লাহ তা’য়ালার অশেষ রহমতে সকলের দোয়ার বরকতে বেঁচে ফিরেছি। এখন সুস্থতার জন্য সংগ্রাম করছি। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধিন অবস্থায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের সমন্বয়করা অন্যদের মতো আমারও সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন। মর্মান্তিক এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হওয়ায় পরিবার সহ আত্মীয়-স্বজনদের পড়তে হয়েছে নানান ভোগান্তিতে। প্রিয়তমা স্ত্রী, ভাই-বোন সহ পরিবারের সকলেই আন্তরিকভাবে আমার সেবা করেছেন। এখনো যাহা চলমান। বাড়িতে আসার পর স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ আত্মীয়-স্বজনরা সবসময় খোঁজ-খবর নিয়েছেন এবং এখনো নিচ্ছেন। এদিকে গত ১৪ আগস্ট-ই প্রবাস গমনের রিটার্ন টিকেট থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছে। পরে মেডিকেল সনদ দেখিয়ে ছুটি বাড়িয়ে নিতে পেরে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বহু সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু বিদেশের আইনী জটিলতা থাকায় এবং জীবিকার তাগিদে আগামী এক মাসের মধ্যেই হয়তো পাড়ি দিতে হবে নিজ কর্মস্থলে। এ সময় তিনি পরিবার সহ সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে দ্রুত আরোগ্য লাভ ও সুস্থতার জন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।

আজাদ হোসেন এর ছোট বোন রহিমা আক্তার রুমা বলেন, ঐদিনের বিভীষিকাময় ঘটনার বর্ণনা দেওয়া এখন স্বাভাবিক মনে হলেও তখনকার পরিস্থিতি ছিলো ভিষণ কষ্টের ও বেদনাদায়ক। তারপরও ঐদিন আহত ভাইয়ার যন্ত্রণাগুলো কাছ থেকে দেখতে হয়েছে আমাকে। যা মুখে বলার মত ভাষা আমার নেই। আমি দোয়া করি, এমন পরিস্থিতি যেন কারো জীবনে কখনো না আসে। ঐদিন পুলিশি ঝামেলা থাকায় প্রথমে যথাযথ চিকিৎসা করাতে না পেরে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। মহাসড়ক-হাসপাতাল সহ প্রতিটি স্থানেই নানান বাধা-বিপত্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে। পরে আল্লাহর অশেষ রহমতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ঘটনার দিন রাত অনুমান তিনটায় সফল অপারেশন করার পর ভাইয়ার জ্ঞান ফিরে আসে। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসা শেষে ভাইয়া এখন বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি, আমার প্রিয় ভাইটি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD