মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
বর্ষাকাল এলেই কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মকিমপুর পশ্চিম বিল হয়ে ওঠে ‘মিনি কক্সবাজার’ প্রতিদিন এই বিল দেখতে আসে হাজার হাজার দর্শনার্থী প্রতি বছর বর্ষা এলেই শত শত একর জমিতে পানি জমে সূর্যের আলোয় চিকচিক করে থইথই জলরাশি। সন্ধ্যার আগে যখন সূর্য অস্ত যায় তখন মনে হয় যেন বিলের বিশাল জলরাশিতে সূর্য লুকাচ্ছে। এ দৃশ্য যেন মন ভরিয়ে দেয়। এসব মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই এই বিলে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন হাজার হাজার নানান বয়েসী দর্শনার্থী।
এই বিল ঘেঁষেই পশ্চিমে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা ও উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা আর পূর্বে ও দক্ষিণে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা এবং দক্ষিণে দেবিদ্বার উপজেলা চার উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানটির নামই মকিমপুর পশ্চিম বিল। এই বিলের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বুড়ি নদী। বর্ষার শুরু থেকেই এ বিল পানিতে টইটুম্বুর হয়ে ওঠে। এতে এই বিলের পরিবেশ হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর। যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি আর অবসাদ দূর করতে এই বিলে ছুটে আসছেন ভ্রমণপিয়াসী অনেকেই। যে কারণে স্থানীয়রা এ বিলের নাম দিয়েছেন ‘মিনি কক্সবাজার’। চতুর্দিকের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য আর দর্শনার্থীদের ভিড়ে এই বিলে বর্ষার প্রতিটি বিকেল যেন মোহময় হয়ে ওঠে। তবে শুষ্ক মৌসুমে এই বিল থাকে সবুজ ফসলে ধান সহ বিভিন্ন শাক সবজির সমারহ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মকিমপুর বিলে নানা বয়েসী দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মকিমপুর পশ্চিম বিল। নৌকা করে কেউ কেউ ঘুরছেন বিশাল জলরাশির ঢেউয়ের ওপর। তাদের কেউ কেউ তুলছেন সেলফি, আবার কেউ কেউ ব্যস্ত প্রিয়জনদের ছবি তোলায়। বিলের মনোহর সৌন্দর্য উপভোগ করছেন সবান্ধবে অনেকেই। কেউ গাইছেন গান, আবার কেউ করছেন কবিতা আবৃত্তি। উঠতি বয়েসী কিশোররা বিলের অথৈজলে কাটছেন সাঁতার। জলরাশির মাঝখান দিয়ে বয়ে সড়কের ওপর মোটরসাইকেল চালিয়ে উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা গেছে তরুণদের।
এই বিলে সপরিবারে ঘুরতে আসা ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ইসমাইল নয়ন ও চান্দলা মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক অপু খান চৌধুরী বলেন, বর্ষার সময় এই বিলের পরিবেশটা চমৎকার হয়ে ওঠে। প্রায়ই এখানে ঘুরতে আসি। ঈদ উপলক্ষে এবার এসেছি সপরিবারে। দিনের অন্যান্য সময়ের মধ্যে বিকেলবেলা এই বিলের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। এখানকার বাতাসটাও বেশ মিষ্টি। বিলটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এখানে ঘুরতে আসছেন।
পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা থেকে এ বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পারভীন আক্তার রিয়া বলেন, বর্ষা এলেই ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড়ে এই বিল পর্যটন এলাকায় রূপ নেয়। শিরশিরে বাতাস আর মনমাতানো পরিবেশ দর্শনার্থীদের মন ভরিয়ে দেয়। আমরা কয়েকজন বান্ধবী মিলে ঘুরতে এসেছি। এখানে সময় কাটাতে বেশ ভালো লাগছে। এই বিলটি কুমিল্লা সিলেট সড়কের পশ্চিম পাশ্বে হওয়ায যানবাহনে দর্শনার্থী আসতে অনেকটা সুবিধা হয়, সারাদিন বিলে ঘুরাঘুরি করে সুবিধামত সময় চলে যেতে পারে নিজ বাড়ীতে।
মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, প্রতিবছরই বর্ষাকালে শত শত একর জমিতে পানি জমার কারনে এই বিলে ঘুরাঘুরি জন্য বিভিন্ন উপজেলা থেকে ও বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী এই বিল দেখতে আসে। বিলের পরিবেশ অনেক সুন্দর গ্রামে হওয়ায় মানুষ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে এই বিল দেখতে আসে।