নেকবর হোসেন
কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৯ মার্চের ভোট ঘিরে প্রচারে সরগরম পুরো নগরী। সেই সঙ্গে চলছে প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের কথার লড়াই। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ঝলছে পোস্টার। প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি মাইকিংয়ে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাওয়া হচ্ছে ভোট। সব মিলিয়ে এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে কুমিল্লা সিটি। স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীর মধ্যে প্রচারে এগিয়ে রয়েছেন বাস ও ঘোড়া মার্কা।
আর ভোটাররা বলছেন, প্রচারে তিনজন এগিয়ে থাকলেও লড়াই হবে মূলত বাস, ঘোড়া, টেবিল ঘড়ি মধ্যে। নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আব্দুল মান্নান বলেন, রাজগঞ্জতে এলেই বোঝা যায় কতটা উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের নির্বাচন হচ্ছে। মেয়র প্রার্থীরা পাশাপাশি তাঁদের প্রচারকেন্দ্র করেছেন। সেই সব কেন্দ্র পোস্টারে পোস্টারে সাজানো হয়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে চা- আপ্যায়ন। বিকেল থেকে সাউন্ড সিস্টেমে চলে প্রার্থীদের নিয়ে তৈরি করা গান-গজল। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রচারে এগিয়ে ঘোড়া প্রতীক । তবে ভোটের দু-এক দিন আগে বলা যাবে কে জয়ী হচ্ছেন।
শনিবার (২ মার্চ) নগরীর সকালে ১৫নং ওয়ার্ড ও ১২নং ওয়ার্ড এর বিভিন্ন স্থানে গণ সংযোগ ও ১৫,১৮নং ওয়ার্ডের উঠান বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় ডা. তাহসীন বাহার সূচনা বলেন,আমার সাথে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শক্তিশালী রাজনৈতিক ইউনিট রয়েছে। আমার সাথে চাচারা রয়েছে ,ভাইয়েরাও রয়েছে।বোনদের পাশাপাশি চাচী- ফুফিরাও রয়েছেন। দুই প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লা নগরীর উন্নয়ন করতে চাই। তাই তরুনদের ভোট হউক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে,উন্নয়নের পক্ষে ও দূর্ণীতির বিরুদ্ধে, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে। শিক্ষিত ড্রাইভার ডা. তাহসিন বাহার সূচনা এবার উন্নয়নে বাস নিয়ে এসেছে। উন্নয়নের গাড়িতে দুই প্রজন্ম মুরুব্বী আর তরুণদের নিয়ে একসাথে চলতে পারে। আমি নগরপিতা বা নগর মাতা হয়ে নয়,নগরকন্যা হয়ে এ শহরটার উন্নয়ন করতে চাই।এ দিকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন উপনির্বাচনের ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। শনিবার সকালে কুমিল্লা নগরীর ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফৌজদারি, আদালত মোড়, মগবাড়ি চৌমুহনী, কাপ্তান বাজার ও পাক্কার মাথাসহ আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ শেষে সাংবাদিকদের হতাশা প্রকাশ করেন।এসময় এই প্রার্থী বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিভাবে? এক প্রার্থীর পক্ষে তার বাবা পার্লামেন্ট মেম্বার প্রচারণা চালিয়েই
যাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনার আসলেন বলেও গেলেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। আমি আগেও বলেছি এসব কথায় আশ্বস্ত কিন্তু বিশ্বাসের সময় এখনও আসেনি। তিনি (এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার) গতকালও মিটিং করে মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন। আজও করবেন বলে জেনেছি। সংবর্ধনার নামে প্রচারণা করেই যাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন কমিশন যেই সততা দেখাচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দূরের কথা উল্টো জনগণ থেকে আরও দূরে চলে যাবেন। আর মানুষের আস্থা ফেরানোর কোন উপায় থাকবে না। এসময় অন্য প্রার্থীদের অভিভাবক একজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ঘোড়ার পক্ষে মাঠে নেমে পড়েছে। অনেক বিএনপি নেতা গত নির্বাচনে মাঠে নামেনি। কিন্তু এখন আছে। অনেকে ঘড়ির প্রার্থীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ঘোড়ায় উঠেছেন। তাদের সঙ্গে কুমিল্লার সাধারণ মানুষ যুক্ত হয়েছেন। সাবেক মেয়র কুমিল্লার মানুষকে দুইমাসের বিএনপি হয়ে আগে ধোকা দিয়েছে। এখন আর এই সুযোগ নেই। মানুষ বুঝে গেছে কি হচ্ছে। তিনি নিরাপদ সম্প্রীতির বাসযোগ্য কুমিল্লা নগরী গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা চান।
অপরদিকে সকালে রাজগঞ্জ থেকে কান্দিরপাড় সড়কে গণসংযোগ ও ১৯নং ওয়ার্ডের নেউরা- রাজাপাড়া,১৭ নং ওয়ার্ডের পাথুরিয়া পাড়ায় এবং ২২ নং ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করেন।
এসময় মেয়র প্রার্থী সাক্কু বলেন, ‘মেয়র হিসেবে আমার বিজয় সুনিশ্চিত জেনেই বাস প্রতিকের প্রার্থী ডা.তাহসিন বাহার সূচনার কর্মীরা বেসামাল হয়ে আ:লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগ লেলিয়ে দিয়ে আমার নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। আগামী ৯ মার্চ তারিখের ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে কুমিল্লাবাসী।’
এ সময় তিনি আরও বলেন আমরা কর্মীদের স্থানীয় আ:লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে ০৬ নং ওয়ার্ড শুভপুরের মোঃ কবির হোসেন ও ০২ নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমানকে এলোপাতাড়ি লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার হাত ভেঙ্গে ফেলে এবং রক্তাক্ত জখম করে।আরেক জনকে ধারালো চেনি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে।