দৈনিক কুমিল্লা রিপোর্ট ।।
মামলা করেও চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন শিক্ষানবীশ আইনজীবি,ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মানবাধিকার কর্মী
মওদুদ আবদুলাহ শুভ্র।
অবসর প্রাপ্ত সরকারি স্কুলে শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ ভুইয়া এবং অবসর প্রাপ্ত সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা হালিমা বানুর শিক্ষক দম্পত্তির ছেলেছেলে মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র পেশায় একজন শিক্ষানবীশ আইনজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এব মানবধিকার কর্মী।
নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের পুরাতন চৌধুরীর পাড়ার ইসমপুর সড়কে তিনি বসবাস করেন।
মামলা করেও বাদী পক্ষের আসামী ও তাদের দোসরদের দ্বারা শুভ্র ও তার পরিবারের জীবন শংকায় কাটছে। রোববার তিনি সাংবাদিকদের জানান,গত বছরের ৩ আগষ্ট ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনের ফলে আওয়ামী সরকারের পতনের দুদিন আগে আমি টিক্কচর ব্রিজ অতিক্রম করে শহরের দিকে আসছিলাম। এসময় বিগত আওয়ামী লীগের ১৩/১৪ জন সন্ত্রাসী ৪ থেকে ৫টি মোটরসাইকেল ও একটি সিএনজিতে এসে আমার সিএনজির গতিরোধ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা আমার কাছে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমার সঙ্গে থাকা মোবাইল ও টাকা পয়সা এবং ক্যামেরা, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন সিমসহ ছিনিয়ে নেয়। তখন আমি তাদেরকে বলি দশ লাখ টাকা চাঁদা কেন দিতে হবে? তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন বলে, কুমিল্লার এই শহরে কাজ করলে আমাদেরকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি করলে তারা আমাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আমি সিএনজি চালকের সাহায্যে আমার বন্ধু কুমিল্লা জজকোর্টের আইন পেশায় নিয়োজিত মোহাম্মদ জিল্লুরসহ অন্যান্য বন্ধুদের ফোন করি।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মধ্যে পতনের দু’দিন আগে ৩ আগস্ট থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকার কারণে গত বছরের ১৯ আগস্ট দ্রুত বিচার আইনে অজ্ঞাতনামা ৩ জন পুরুষ ও একজন মহিলাকে আসামি করে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরসহ মামলা দায়ের করা করি। যা কুমিল্লা জেলা পিবিআইয়ের তদন্তনাধীন রয়েছে। মামলার ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় কুমিল্লা জেলা পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মোসলেহ উদ্দিন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিলের পর্যায়ে রয়েছে।
কোতওয়ালি মডেল চাঁদাবাজি, চুরি ও ছিনতাইয়ের কারণে মামলা দায়ের করি এবং আমাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়াসহ আমার ওপর হামলা চালানো হয় এ জন্য দ্রুত বিচার আইন আদালতে মামলা করি।
মামলা করে যেন তিনি আরও ফেঁসে গেছেন। এজহার নামীয় আসামীদের মধ্যে মাত্র একজন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাকী আসামীরা বিগত ৮ মাসেও ধরা না পরায় প্রতিনিয়ত জীবন কাটছে শংকার মাঝে ।
রোববার (১৩ এপ্রিল) শিক্ষানবীশ আইনজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মানবাধিকার কর্মী মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র সাংবাদিকদেরকে বলেন, মামলা করার কারণে এখন শুভ্র ও তার পরিবার সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন।
এজহার ভুক্ত আসামীরা অজ্ঞাত স্থান থেকে এবং বিবাদী পক্ষের আত্মীয় স্বজন এবং স্যার গ্রুপের গ্যাংয়ের সদস্যরা মিলে আমি ও আমার পরিবারকে হত্যা করে লাশ গেমতী নদীতে ফেলে দেয়াসহ তার স্ত্রী কুমিল্লা সরকারি কলেজে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত তাকে এসিড মেরে মুখ ঝলসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। এতে তিনি কলেজে যাওয়া আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজির আহমেদ খাঁন বরারবর পরিবার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত দরখাস্ত প্রদান করেন। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে কোতওয়ালি মডেল থানায় জিডি দায়ের করেন।
অজ্ঞাতনামা বিবাদীগণ ও তাদের দোসররা মাইক্রোবাস ও মোটর সাইকেল যোগে আমার বাসার আশে-পার্শ্বে বিভিন্ন লোকজনদের বাসায় অবস্থান করে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল নিয়ে মহড়া দেয়। কিছুদিন আগে বিবাদী ও তাদের দোসররা যখন আমাকে ছোড়া দিয়ে আঘাত করে যখম করে তখন আমি মেডিকেল টিকেটসহ অপরাধীদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। বিবাদীরা নিজেদেরকে ঢাকাস্থ সরকারী বিশেষ গোয়েন্দা প্রশাসনের লোক মর্মে পরিচয় দিয়ে, ুবিগত দিনে প্রশাসনের নিকট আমি আমার জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতা চেয়েছি। তারা খন মহড়া দেয় তখন একে অপরজনকে স্যার স্যার বলে সম্মোধন করে বিবাদীদের বহন করা মাইক্রোবাস যোগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে আমাকে গুম করে ফেলা, আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আমাকে হয়রানি করাসহ হুমকী ধামকি দেয়। এ অবস্থায় আমি এবং আমার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বাবা ও মা এবং আমার স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছি। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে চলেছেন। তারা আমার হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো ও ফেসবুক হ্যাক করেছেআমি এর জন্য জেলা ডিবি ও কোতওয়ালি থানায় অভিযোগ করেছি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ এই মামলাটির আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। কিন্তু এজহার নামীয় আসামীদের একএকজন একেক জায়গায় কুমিল্লার বাইরে অবস্থান করায় এবং দ্রুত আসামীরা তাদের অবস্থান পাল্টানোর কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে একটু সমস্যা হচ্ছে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজির আহমেদ খাঁন বলেন, আমি মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্রকে বলেছি, কোনো সমস্য হলে যেকোনো সময় আমাকে ফোন দিবেন আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।