মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
বাঙালির চিরচেনা ঐতিহ্যের অন্যতম একটি ঘুড়ি। সময়ের বিবর্তনে বাঙালির সংস্কৃতি থেকে দিন দিন হারাতে বসেছে। তাইতো সেই ঐতিহ্যকে বাঙালির মানসে ফেরাতে ও নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির এ ঐতিহ্য তুলে ধরতে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে বৈশাখের প্রথম দিনে উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের পশ্চিম বেড়াখোলা এলাকার ‘তারুণ্যের আলো’ সংগঠনের উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়।
এতে দুলালপুর সুরুজ মিয়া অ্যান্ড খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দীন বিএসসির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আমিনুল ইসলাম সুজন। প্রধান মেহমান ছিলেন ইউএনও স ম আজহারুল ইসলাম।
জানা গেছে, ‘চলো গ্রামীণ ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তরুণদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সামাজিক সংগঠন ‘তারুণ্যের আলো’ এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে। উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের পশ্চিম বেড়াখোলা এলাকায় এই ঘুড়ি উৎসব উপভোগ করতে ভিড় করে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
এ সময় শতাধিক প্রতিযোগী বিভিন্ন নামে ও আকার আকৃতির বাহারি ঘুড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। এ সময় অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের নানা ধরনের চমকপ্রদ ঘুড়ি প্রদর্শনের মাধ্যমে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রদর্শিত ঘুড়ির মধ্যে ছিল পঙ্খিরাজ ঘুড়ি, উড়োজাহাজ ঘুড়ি, রিকশা ঘুড়ি, তারা ঘুড়ি, ড্রাগন ঘুড়ি, অজগর ঘুড়ি, প্রজাপতি ঘুড়ি, ঈগল ঘুড়ি, মাছ ঘুড়িসহ নানা ধরনের বাহারি আকৃতির ঘুড়ি।
ইউএনও স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে এ ধরনের উদ্যোগ সত্যিই আশাব্যঞ্জক। নানা ধরনের ঘুড়ির প্রদর্শনীতে ঘুড়ি উৎসব ঘুড়িপ্রেমী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আশা করছি ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন আরও জাঁকজমকপূর্ণ হবে।
তিনি আরও বলেন, সামনের বছর থেকে উপজেলা প্রশাসনও এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করবে। এ ধরণের আয়োজনের মধ্যদিয়েই সত্যিকারের পহেলা বৈশাখের স্বাদ ও আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়।
উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, ঘুড়ি বাঙালি ঐতিহ্যের এক অন্যতম নিদর্শন। স্থানীয় তরুণের সংগঠন ‘তারুণ্যের আলো’ এর আয়োজনে চমকপ্রদ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন সত্যি প্রশংসনীয়। আধুনিক তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে এ ধরনের আয়োজনে সত্যি অভিভূত হয়েছি। তরুণদের হাত ধরেই বাঙালি সংস্কৃতির হারাতে বসা অনেক ঐতিহ্য স্ব-অবস্থানে ফিরে আসবে বাঙালি সংস্কৃতিতে।