1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
হার না মানা স্বপ্নের কারিগর রৌশন আলীর হাতে বেঁচে আছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের কাঠের খেলা - Dainik Cumilla
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক এমপি বাহারের বিলাসবহুল বাড়ি ও জমি জব্দের আদেশ দেবিদ্বারে ধান মাড়াইয়ের সময় বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু কুমিল্লা আইনজীবী সহকারী সমিতির বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার দাবিতে ব্রাহ্মণপাড়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও দোয়া কুয়েট শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও ভিসির পদত্যাগ দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপন্ন প্রজাতির লক্ষ্মীপেঁচা উদ্ধার চৌদ্দগ্রামে চিহিৃত মাদক কারবারি কর্তৃক অসহায় পরিবারের উপর হামলা চৌদ্দগ্রামে অসহায় নারীকে মারধর ও শ্লীলতাহানীর চেষ্টা, থানায় অভিযোগ ছয়দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা, যৌথবাহিনীর হস্তক্ষেপ, ফাঁকাগুলি কুমিল্লায় নববর্ষে শহীদ মুগ্ধ স্মরণে ১০ হাজার তৃষ্ণার্তকে পানি বিতরণ

হার না মানা স্বপ্নের কারিগর রৌশন আলীর হাতে বেঁচে আছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের কাঠের খেলা

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৯৬ বার পঠিত

 

মোঃ রেজাউল হক শাকিল, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।
শহরের ব্যস্ততা, উঁচু দালান আর চকচকে পণ্যের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার বহু প্রাচীন ঐতিহ্য। সময়ের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে অনেকেই ভুলে যাচ্ছেন শেকড়ের কথা। কিন্তু এরই মাঝে কিছু মানুষ এখনো আগলে রেখেছেন গ্রামীণ বাংলার সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের বাতি। তেমনি একজন মানুষ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ বাজার সংলগ্ন সওদাগর পাড়া গ্রামের রৌশন আলী।
গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে রৌশন আলী তৈরি করছেন শিশুদের কাঠের ও প্লাস্টিকের খেলনা। তাঁর জীবনজুড়ে জড়িয়ে আছে বাঙালির মাটির গন্ধ, মেলার আমেজ আর হারিয়ে যাওয়া শৈশবের স্মৃতি। বৈশাখ এলেই তার ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কারণ, বৈশাখ মানেই উৎসব, শিশুদের আনন্দ, আর সেই আনন্দে এখনো স্থান করে নেয় রৌশন আলীর হাতে তৈরি খেলনা গাড়ি।
রৌশন আলী নিজের হাতে কাঠ কেটে বানান খেলনার গঠন। শহর থেকে সংগ্রহ করেন প্লাস্টিকের পাখি, চাকা ও অন্যান্য সামগ্রী। প্রতিটি খেলনা তৈরি করতে তাঁর খরচ পড়ে মাত্র ৮ থেকে ১০ টাকা। আর বিক্রি করেন ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে এই ক্ষুদ্র আয় দিয়েই চলে যাচ্ছে তাঁর পরিবার।
এই বৈশাখে তিনি দুই থেকে আড়াই হাজার খেলনা বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর আশা, এতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ হবে, যা দিয়ে বছরের একটি বড় সময়ের খরচ সামলানো যাবে। যদিও লাভটা খুব বেশি নয়, কিন্তু তিনি সন্তুষ্ট। কারণ, তাঁর খেলনায় যখন বাচ্চারা আনন্দ পায়, মুখে হাসি ফোটে—সেই দৃশ্যই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
রৌশন আলী বলেন, বাচ্চারা যখন আমার বানানো খেলনায় খেলে, ওদের মুখে হাসি দেখলেই আমার কষ্ট সার্থক লাগে। ব্যবসার চেয়ে এই আনন্দই বেশি মূল্যবান।
তিনি বলেন, আমার মতো কারিগরদের জন্য তেমন কোনো সরকারি সহায়তা নেই। নেই কোনো স্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র বা প্রশিক্ষণের সুযোগও। তারপরও আমি আশাহত নই। বরং বিশ্বাস করি এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারলেই নতুন প্রজন্ম গ্রামীণ সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারবে।
রৌশন আলীর জীবন শুধু একটি ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প নয়, বরং এটি বাংলার গ্রামীণ শিল্প ও ঐতিহ্যের প্রতি এক গভীর ভালোবাসার প্রতিফলন। বৈশাখের মেলায় যখন তাঁর কাঠের গাড়ির শব্দ শোনা যায়, তখন সেটি যেন শুধু একটি খেলনার আওয়াজ নয়, বরং আমাদের শেকড়, স্মৃতি আর সংস্কৃতির একটি বর্ণময় প্রতিধ্বনি।
এই মানুষগুলোর হাত ধরেই হয়তো আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে, কেমন ছিল এক সময়ের আনন্দ, আর কেমন ছিল বাংলার হৃদয়ের স্পন্দন।

 

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD