মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবদুল মালেক (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে। নিহত আবদুল মালেক ওই গ্রামের মৃত মির্জা আলীর ছেলে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মো: কামাল উদ্দিনসহ আটজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৮ মার্চ) বিকালে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত আবদুল মালেকের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে মো: কামাল উদ্দিনের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা-মোকদ্দমা চলমান ছিল।
শুক্রবার বিকেলে বিরোধপূর্ণ জমিতে কামাল উদ্দিন লোকজন নিয়ে বেড়া নির্মাণ করতে গেলে আবদুল মালেক এতে বাধা প্রদান করেন। এর জেরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ৭/৮ জন লোক আবদুল মালেককে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, হামলাকারীরা একপর্যায়ে বিদ্যুতের আলো নিভিয়ে দেয় এবং ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে বৃদ্ধ মালেককে উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার ভোরে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে আবারো ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হামলাকারী কামাল উদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় মূল অভিযুক্ত কামাল উদ্দিনসহ আটজনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও চারজন নারী রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত আবদুল মালেকের ছেলে মাইন উদ্দিন বলেন, “কামাল উদ্দিন গংদের সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। শুক্রবার বিকেলে তারা আমাদের জমিতে বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে আমার বাবা বাধা দেন। এ ঘটনার জের ধরেই রাত সাড়ে ৯টায় পরিকল্পিতভাবে আমার বাবার ওপর হামলা চালানো হয় এবং ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। আমি এ হত্যার বিচার চাই।”
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে আবদুল মালেককে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্তদের আটক করে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন একটি বেসরকারি এনজিওতে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত বলে জানা গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”