খলিলুর রহমান,কুবি।।
মধ্যবিত্ত,নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে একটা মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারের কত স্বপ্ন থাকে তাকে নিয়ে। পড়াশোনার সুবিধার জন্য মেয়েটা থেকে যায় হোস্টেলে। দুচোখভরা স্বপ্ন নিয়ে দিন রাত এক করে পড়াশোনা করতে থাকে।
আবেগের বশে কিংবা কিছু ক্ষেত্রে চাপে পড়ে কোন ধনীর দুলালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। মেয়ের মনে খারাপ চিন্তা না থাকলেও,ছেলেটার মনে সবসময় থাকে পশুবৃত্তি। কোন একদিন ক্ষমতার জোরে হোস্টেল কতৃপক্ষকে ম্যানেজ করে,মেয়েটাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে রাতের আঁধারে বের করে নিয়ে যায়। রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া দাওয়া করে। সুযোগ বুঝে কৌশলে মেয়েটিকে খাইয়ে দেয় ঘুমের ওষুধ বা নেশাদ্রব্য।
ছেলেটা ফোনে যোগাযোগ রাখে তার নেশাখোর,লম্পট বন্ধুদের সাথে। মেয়েটাকে মাতাল অবস্থায় রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে নিয়ে যায় ঝোপঝাড় বা জনমানবহীন এলাকায়। সবাই মিলে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে তার উপর। রাতভর চলে গণধর্ষণ। ধারালো নখের হিংস্র আঁচড়ে ফালা-ফালা করে ফেলে মেয়েটার শরীরে ।
২০১৬ সালে সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যা, ২০২১ সালে মোসারাত জাহান মুনিয়া,২০২৪-এ এসে ফাইরুজ অবন্তিকা; এরকম শত শত ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সংকিত করে তোলে। হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করে। এই ক্ষত না শুকাতেই আবার কোন নৃশংস হত্যাকান্ডের মাধ্যমে সেই ক্ষত থেকে আবারও রক্ত ঝরানো হয়।
হত্যা ধর্ষণের সাথে জড়িত এসব লম্পট,ধর্ষক, কুলাঙ্গারদের সম্পদ আর ক্ষমতাশালী বাবারা তাদের ‘টাকা’ নামক মহা ক্ষমতাযুক্ত জড়বস্তু এবং ক্ষমতার জোরে ম্যানেজ করে ফেলে সবকিছু।
আন্দোলন করবে সাধারণ মানুষ আর শিক্ষার্থীরা। পুলিশ লাঠিপেটা করবে শিক্ষার্থীদের,
আন্দোলনকারীদের। কখনো কখনো একটা খুনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হবে অন্য ঘটনা । হুজুগে বাঙালি ভুলে যায় তিক্ত অতীত,মেতে থাকে নতুন ঘটনা নিয়ে। অনেকদিন পর পত্রিকাগুলো নিউজ করে, অনেকটা দায়সারা গোছের। এতে কিছুই হয় না কখনো।
হত্যা-ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীরা তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার বিচারের আশা ছেড়ে দিবে। এভাবেই চলছে এবং এভাবেই চলবে…?