1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
নদীর বুকজুড়ে ধান চাষ অস্তিত্ব সংকটে তিতাস নদী, রূপ নিয়েছে আবাদি জমিতে - Dainik Cumilla
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে কনকাপৈত ইউনিয়নে ০৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল মাহে রমজান সংযম, ত্যাগ, ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়: সফিকুর রহমান ব্রাহ্মণপাড়ায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় অবৈধ আতশবাজি আটক কুমিল্লা আলিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল মতিনের প্রথম জানাজায় মুসল্লিদের ঢল ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার (ভিসিটি)’র ইফতার মাহফিল সম্পন্ন মনোহরগঞ্জের বিপুলাসারে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর উপর হামলা কুমিল্লায় বিজিবি’র অভিযানে ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার অবৈধ ভারতীয় বাজি জব্দ নাঙ্গলকোটে ধর্ষণ মামলায় যুবলীগ নেতা শ্রীঘরে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। যারা লুটপাট করছে তাদের কথা আসছে না -বরকত উল্লাহ বুলু

নদীর বুকজুড়ে ধান চাষ অস্তিত্ব সংকটে তিতাস নদী, রূপ নিয়েছে আবাদি জমিতে

  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১২৯ বার পঠিত

মো: মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর।
এক সময়ের খরস্রোতা  তিতাস এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। অদ্বৈত মল্লবর্মণের কালজয়ী সেই উপন্যাস ও বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্রের বর্ণনার “তিতাস একটি নদীর নাম”। সেখানে বর্নণা করেছেন তিতাসের কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ আর প্রাণভরা উচ্ছ¡াস। এসব কথা কেবলই এখন সেই উপন্যাসে পাওয়া যায়। বাস্তব চিত্র এখন ভিন্ন। এই তিতাস এখন শুধুই ইতিহাস, শুধুই স্মৃতি। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা তিতাস নদী এবং এর শাখাগুলো এখন মুরাদনগরবাসীর দুঃখ। ইতিমধ্যে উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় ভরাট হয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে নদীটি। বর্তমানে পানি শুকিয়ে নদীটি রূপ নিয়েছে আবাদি জমিতে। সেচের অভাবে হুমকিতে পড়েছে উপজেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমির ইরি-বোরো আবাদ। অপরদিকে মাছ ধরতে না পারায় বেকার হয়ে পড়েছে ৩টি উপজেলার কয়েক হাজার জেলে পরিবার।
স্থানীয় ভূমি দস্যূরা ভূমিহীন সেজে নামে-বেনামে দখল করে বিস্তীর্ণ নদীর বুকজুড়ে চলাচ্ছে বোরো ধানের চাষ। তাই, ধান চাষের অন্যতম আধারে পরিণত হয়েছে মুরাদনগর উপজেলা অঞ্চলে শুকিয়ে যাওয়া তিতাস নদী। এক সময়ের  তিতাস নদী নাব্যতা সংকটের কারণে নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। কালের বিবর্তনে দখল-দূষণ ও প্রতিবছর পলি জমে ক্রমেই ভরাট হয়ে তিতাস এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিতাস নদীর মুরাদনগর-হোমনা সংযোগ সেতুর নিচের উত্তরাংশ থেকে শুরু করে দক্ষিণাংশের তিতাস উপজেলার দাসকান্দি বাজারের গোমতীর মুখ পর্যন্ত প্রায় ১২ কিঃ মিঃ শুকিয়ে গেছে।

তার মধ্যে নদীকে দ্বিখন্ডিত করে বিভিন্ন অংশে দখল হয়ে গেছে প্রায় ৫ কিঃ মিঃ। নদীতে পানি না থাকার ফলে যেমন বেকার হয়ে পড়েছে জেলেরা, তেমনি সেচের পানির অভাবে বিপাকে স্থানীয় কৃষকরা। নদীর উপরের ভাগে ধানের বীজতলা ও নদীর তলায় ধান রোপণ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। মনে হয় নদীর কোনও অস্তিত্ব নেই। এর ফলে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী।
তিতাস নদীতে মাছ ধরার জেলেরা জানান, এক সময় লঞ্চের শব্দ আর বড় বড় পাল তোলা ণৌকার মাঝি-মাল্লাদের কন্ঠধ্বনিতে থাকত তিতাস পারের মানুষেরা। এখন ধারণ করছে এর ভিন্ন রূপ। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী থেকে মুরাদনগর, হোমনা, নবীনগর, বাঞ্চারামপুর উপজেলার লোকজন লঞ্চদিয়ে মালামাল নিয়ে আসা-যাওয়া করতো। তখন লঞ্চই ছিলো একমাত্র যাতায়াতের উপায়। লঞ্চ যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইঞ্জিনচালিত নৌকা ব্যবহার করে এলাকার মানুষ। তিতাস নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে তাও আস্তে আস্তে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে এলাকার জেলে স¤প্রদায়, বাঁচার তাগিদে অনেকে চলে গেছে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায়।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ছলিম উদ্দিন জানান, কৃষি কাজে সেচ, গোসলসহ গৃহস্থালি কাজের জন্য পানির চরম সংকটে পড়েছেন নদী পাড়ে বসবাসকারীরা। এছাড়া পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীতে মাছ ধরারও সুযোগ নেই জেলেদের। এতে নদী পাড়ের গ্রামের জেলেরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। এলাকার জনগণের দাবি জরুরি ভিত্তিতে এই নদী খনন করা হোক।
মুরাদনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অ.দা.) মোসাম্মৎ নাজমা আক্তার বলেন, ‘নদী, খাল-বিলে এখন তেমন পানি নেই। মাছও ধরা পড়ছে না। জেলেরা এখন অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন’। কেউ কেউ পুকুরে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এতে করে উন্মুক্ত জলাশয়ের মাছ আহরণ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জেলেদের জীবন যাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে। নদীটি সংস্কার করা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। এটি খনন করা হলে কয়েক হাজার জেলে পরিবার এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার পাভেল খাঁন পাপ্পু জানায়, সারা বছরে এ উপজেলায় তিন প্রকারের ধান চাষ হয়। এর মধ্যে বোরো ১৭ হাজার ৭৫০ হেক্টর, আউশ সাত হাজার ৫০০, রোপা আমন পাঁচ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। সর্বমোট ৩১ হাজার ২৪০ হেক্টর জমি চাষ করেন কৃষক। এর মধ্যে সেচ ব্যবস্থার অভাবে উপজেলার সদর, রামচন্দ্রপুর উত্তর ও শ্রীকাইল ইউনিয়নে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। অথচ এক সময় তিতাস নদীর পানি ঐ এলাকার কৃষকদের প্রয়োজনীয়তা মেটাতো।
এ বিষয়ে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। নদীটির খনন কাজ কতটা জরুরি। এ বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য একটি টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে। রিপোর্টটি হাতে পেলেই নদী খননের পরবর্তী কার্যক্রমের বিষয়ে জানানো যাবে।

 

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD