1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
মুরাদনগর ভূমি ব্যবস্থাপনায় এসিল্যান্ড নাজমুল হুদার লড়াই - Dainik Cumilla
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে কনকাপৈত ইউনিয়নে ০৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল মাহে রমজান সংযম, ত্যাগ, ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়: সফিকুর রহমান ব্রাহ্মণপাড়ায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় অবৈধ আতশবাজি আটক কুমিল্লা আলিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল মতিনের প্রথম জানাজায় মুসল্লিদের ঢল ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার (ভিসিটি)’র ইফতার মাহফিল সম্পন্ন মনোহরগঞ্জের বিপুলাসারে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর উপর হামলা কুমিল্লায় বিজিবি’র অভিযানে ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার অবৈধ ভারতীয় বাজি জব্দ নাঙ্গলকোটে ধর্ষণ মামলায় যুবলীগ নেতা শ্রীঘরে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। যারা লুটপাট করছে তাদের কথা আসছে না -বরকত উল্লাহ বুলু

মুরাদনগর ভূমি ব্যবস্থাপনায় এসিল্যান্ড নাজমুল হুদার লড়াই

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩
  • ২৩২ বার পঠিত

মো: মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

একজন সরকারি কর্মকর্তা চাইলেই যে একটা এলাকার চেহারা পালটে দিতে পারেন, অসহায় মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেন-তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নাজমুল হুদা। তিনি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) হিসাবে কর্মরত আছেন। ৩৭তম বিসিএসের এ নবীন কর্মকর্তার হাত ধরেই যেন বদলে যাচ্ছে মুরাদনগর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ভূমি অফিসগুলো।

সাধারণ মানুষের কাছে ভূমি অফিসগুলো হচ্ছে বরাবরই দুর্নীতির আখড়া। কথায় বলে যেখানে চেয়ার-টেবিল পর্যন্ত ঘুস খায়! কিন্তু মুরাদনগর যেন সেই চিত্র যেন ভিন্ন। একজন সহকারী কমিশনার (ভূমি) যেন মানুষের চোখের জল মুছে দিয়েছেন তার যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, সাহস আর কর্মের প্রতি একাগ্রতার মধ্য দিয়ে। গত অর্থবছরে ই-নামজারী ৮ হাজার ৫৩৯টি হলেও এই অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০২টি নামজারী নিস্পত্তি করে কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১ম স্থান অর্জণ করেছেন। এছাড়াও ৩১৮টি মিস কেস নিস্পত্তি, কৃষি জমি রক্ষায় ১৫৩টি ড্রেজার মেসিন জব্দ ও ধ্বংস, ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা, ৩১ একর সরকারি খাস ভূমি উদ্ধার। যার আনুমানিক মূল্য ৬৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা এবং উদ্ধার কৃত খাস ভূমিতে ৫৫৯টি ঘর নির্মাণ করে ভূমিহীন ও গৃহহীনের মধ্যে কবুলিয়ত ও নামজারীসহ দখল হস্তান্তর করেছেন।

মুরাদনগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসাবে নাজমুল হুদা গত বছরের জুন মাসে যোগদানের পর থেকে বদলে গেছে এখানকার ভূমি অফিসের চিত্র। সাধারণ মানুষকে যেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার জায়গা করে দিয়েছেন তিনি।

২২ ইউনিয়ন ও ২টি থানা নিয়ে গঠিত মুরাদনগর উপজেলা। এখানকার প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে যাওয়া সেবাগ্রহীতারা আগে হয়রানির শিকার হয়েছেন। কিছু কিছু ইউনিয়ন ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করাতে পারেননি। অনেক সময় টাকা নিয়েও সংশ্লিষ্টরা কাজ করেছেন উলটো। এরই পরিপেক্ষিতে নাজমুল হুদা যোগদানের পর পরই দীর্ঘদিন থেকে একই কর্মস্থলে থাকা প্রায় ২০জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলী করিয়েছেন।

নাজমুল হুদা মুরাদনগরে যোগদানের পর থেকে ১১ মাসে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ছুটে গিয়েছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন এই বলে যে, ‘সেবাগ্রহীতাদের কোনো রকম হয়রানি করা যাবে না। তাৎক্ষণিক মানুষের সমস্যার সমাধান করে দিতে হবে। আর অবৈধ আর্থিক লেনদেন যেন কেউ না করেন। কারও বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেলে পরিণতি ভালো হবে না।’

সহকারী কমিশনারের এ বার্তা যেন টনিকের মতো কাজ করেছে। ইতোমধ্যে তিনি তার কর্মকান্ড দিয়ে মুরাদনগরের সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন।

ওয়ারিশদের সম্পত্তি উদ্ধারে নাজমুল হুদা যেন দেবদূত : মুরাদনগরে বছরের পর বছর নারীরা পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বোনদের সম্পত্তি ভাইয়েরা লিখে নিয়ে যাচ্ছেন। কিংবা অনেক ভাই বোনের সম্মতি ছাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ওয়ারিশ গোপন করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে সম্পত্তি কেনাবেচা করছেন। বছরের পর বছর এভাবে বোনদের ওয়ারিশ বঞ্চিত করে এলেও নাজমুল হুদা যেন সেখানে দেবদূত হয়ে হাজির হয়েছেন বঞ্চিতদের পাশে। এমনকি সৎভাইদেরও ওয়ারিশ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হতো। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ওয়ারিশদের ভাগ বুঝিয়ে দিচ্ছেন আইনানুযায়ী। নাজমুল হুদার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত অনেকেই সেই সম্পত্তি পাচ্ছেন এবং পেতে যাচ্ছেন। প্রকৃত ওয়ারিশ যাতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে না পারে, সেজন্য নামজারি করার আগে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের সরেজমিন যাচাইপূর্বক প্রত্যয়ন দেওয়ার কথা বলে দিয়েছেন।

জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ন্যায্য কর আদায় : মুরাদনগরের প্রতিটি গ্রামে এলাকাবাসী কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করে বছরের পর বছর নাল শ্রেণি দেখিয়ে খাজনা দিয়ে আসছিল। কিন্তু নতুন সহকারী কমিশনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরেজমিন তদন্ত করে শ্রেণি পরিবর্তন হওয়া জমিগুলো বাড়ি ও ভিটি দেখিয়ে শ্রেণি পরিবর্তন করে খাজনা আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। ফলে সরকারের রাজস্ব কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসবের বাইরে সাধারণ মানুষের জমিজমা সংক্রান্ত সেবা সহজ করতে ডিজিটাল ই-সেবা এখন হাতের মুঠোই। ই-নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড, অনলাইন শুনানি, আরএস খতিয়ান, খতিয়ানের করণিক ভুল সংশোধন, অনলাইন রিভিউ মামলা, ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণীর আপত্তি-নিষ্পত্তি, অনলাইনে খারিজ খতিয়ানের ডাটাবেজ প্রস্তুতকরণ কার্যক্রমসহ আরও অনেক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

দালাল ও ঘুসমুক্তের অঙ্গীকার : নাজমুল হুদা মুরাদনগরে যোগদানের পর থেকে মুরাদনগরে ভূমি অফিসকে ঘুস ও দালালমুক্ত করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সহজে সেবা দিতে বেশকিছু ভালো উদ্যোগ নেন। এর ফলে সেবাগ্রহীতারা অল্প সময়ে সহজেই সেবা পেতে শুরু করেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তাদের ডেকে ঘুস না নেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি দালালরাও যেন ভূমি অফিসের চৌহদ্দিতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেন।

সবার কথা শুনেন এসিল্যান্ড : সাধারণত দেখা যায়, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিসে অনুমতি ছাড়া সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারেন না; কিন্তু নাজমুল হুদা তার দপ্তরকে উম্মুক্ত করে রেখেছেন। যে কেউ ভূমি সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা নিয়ে তার সামনে হাজির হতে পারেন। সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ভুক্তভোগী সেবাগ্রহীতাদের সমস্যার কথা শুনেন, তাদের সমস্যা দ্রুত সমাধানেরও চেষ্টা করেন।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD