শামীম রায়হান ॥
দাউদকান্দি উপজেলার সদর উত্তর ইউনিয়নের হাসনাবাদ কান্দারগাও গ্রামে মুক্তিপণ না পেয়ে ছয় বছরের শিশু তানিশাকে হত্যা করেছে একটি সংঘবদ্ধ অপহরনকারী চক্র৷
তানিশা হাসনাবাদ কান্দারগাঁও গ্রামের জান্নাতুল হাওয়া মহিলা মাদ্রাসার শিশু শ্রেনীর ছাত্রী এবং একই গ্রামের সৌদী প্রবাসী রাসেলের মেয়ে।
তানিশার চাচা ফয়সাল জানান, অপরিচিত নম্বর থেকে আমার কাছে ফোন করে ভাতিজি তানিশা কোথায় জানতে চায়। বাড়ীতে আছে বললে, তারা বলে বাড়ীতে নেই, তানিশা প্রাইভেটে যায়নি আমাদের কাছে আছে। নিতে হলে দুই লাখ টাকা মূক্তিপণ দিতে হবে বলে লাইনটি কেটে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ীতে এসে জানতে পারি গতকাল শনিবার(১৮ মার্চ)
বিকেল তিনটায় বাড়ী থেকে বের হয়ে প্রাইভেটে যাওয়ার পর আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ছোট্ট শিশু তানিশাকে। বিকেল থেকে সারারাত খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে বিষয়টি আমাদের স্থানীয় মেম্বার শাহজাহান সরকারকে জানাই। মেম্বার পুলিশকে জানায়।
পরে পুলিশ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় আহাম্মদ আলীর ছেলে মাহফুজকে (২৩)কে রাতে আটক করে। তার দেয়া তথ্য মতে শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় বাড়ির পাশের ভুট্টা ক্ষেত থেকে তানিশার লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় মেম্বার শাজাহান সরকার বলেন,গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে তানিশা নিখোঁজ হয়। পরে জানতে পারি যে তাকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় শনিবার রাত ৩টায় ভুট্টা ক্ষেত থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আটককৃত মাহফুজকে সঙ্গে নিয়ে বাকী আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে৷ এদিকে আজ রবিবার(১৯ মার্চ) লাশ উদ্ধারের পর সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টায় দাউদকান্দি উপজেলার বিশ্বরোডের মডেল মসজিদের সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তানিশা হত্যার প্রতিবাদে সদর উত্তর ইউনিয়নের হাসনাবাদ কান্দারগাও গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে তানিশা হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করলে রাস্তার উভয় দিকের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ এতে প্রায় ৫ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়৷ খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মহিনুল হাসান ও মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ পড়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মহিনুল হাসান তানিশা হত্যা সুষ্ঠু বিচার আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা রাস্তা থেকে অবরোধ তুলে নেয়৷ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা বলেন, তানিশা হত্যা সাথে জড়িত চারজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি৷ এঘটনায় সারাদিন অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে আশিক(২৫),হুমায়নের ছেলে রতন(২৮),বাবুলের ছেলে রনি(২৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়৷ এ ব্যাপারে দাউদকান্দি মডেল থানায় তানিশার দাদ নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ গ্রেফতার চার আসামী এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে৷তানিশা হত্যা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচার কাজ শেষ হয় সেই অবরোধকারীদের আশ্বাস দেন৷