1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
কষ্টে আছেন রতন বেগম, টং দোকানের আয়ে চলছে জীবনযুদ্ধ - Dainik Cumilla
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০২:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
তাকওয়া বিহীন সমাজ হচ্ছে ক্রাইমের সমাজ -এটিএম মাছুম স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে প্রশাসনের স্বচ্ছতা পরীক্ষা হয়ে যাক: হাসনাত আবদুল্লাহ ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত এডভোকেট মো. আরিফুর রহমান শ্রাবণ কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেলেন ব্রাহ্মণপাড়া কৃতি সন্তান এডভোকেট নূরুল হুদা কুসিক কাজ না করেই ঠিকাদারের বিল উত্তোলন, দুদকের অভিযান নাঙ্গলকোটে শিবিরের পক্ষ থেকে ছাত্রদের মাঝে অর্থসহ কুরআন উপহার কুমিল্লায় দশ বছর ধরে আওয়ামী প্রভাবে বহাল তবিয়েতে গবেষণা কর্মকর্তা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত জরুরি সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ দেওয়া প্রয়োজন- সৈয়দ তাহের

কষ্টে আছেন রতন বেগম, টং দোকানের আয়ে চলছে জীবনযুদ্ধ

  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪
  • ১৬৫ বার পঠিত

মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।

গ্রামীণ মেঠোপথের পাশে খোলা জায়গায় আটটি খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা নড়বড়ে টং দোকানে সামান্য চিপসের প্যাকেট, চানাচুর, চকোলেট, বিস্কুট আর কাপড় ধোয়ার পাউডার নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। ব্যবসার এই সামান্য আয় দিয়েই কায়ক্লেশে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা রতন বেগম।

রতন বেগম উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের রামনগর এলাকার হাজারি বাড়ির মৃত আমছের আলীর মেয়ে।

জানা গেছে, আর সবার মতোই স্বামী সংসার ছিল রতন বেগমের। পারিবারিকভাবেই সিলেটের গোয়াইনঘাটের ভিতরগুল এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল তাঁর সংসার। এক কন্যা সন্তানের জননীও হয়ে ছিলেন তিনি, তবে সে সন্তানটি মারা যায়। মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় স্বামীর সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে উপয়ান্তর না দেখে তিনি তাঁর বাবা আমছের আলীর কাছে এসে আশ্রয় নেন। একসময় তাঁর বাবাও মারা যান। পরে বেঁচে থাকার তাগিদে বাবার বাড়ির কাছেই গত ১৮ বছর ধরে যৎসামান্য পুঁজির এই নড়বড়ে টং দোকান দিয়েই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সত্তর পেরোনো বৃদ্ধা রতন বেগম।

রতন বেগমের টং দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, আটটি দুর্বল খুঁটির ওপর দাঁড়ানো টং দোকানটির চারপাশ খোলা, উপরে নামমাত্র ছাওনি রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে সামান্য বাতাসেই যেন মাটিতে লুটিয়ে পড়বে ঘরটি। এই নড়বড়ে টং দোকানেই তিনি যৎসামান্য পুঁজি নিয়ে চিপসের প্যাকেট, চানাচুর, চকোলেট, বিস্কুট আর কাপড় ধোয়ার পাউডার বিক্রি করছেন। আশপাশের বাড়িঘরের শিশু ও মহিলারা তাঁর প্রতিদিনের ক্রেতা। প্রতিদিন সকালে মালপত্র দোকানে নিয়ে আসেন, সারাদিন বিক্রি শেষে থেকে যাওয়া মালপত্র সন্ধ্যায় বাড়ি নিয়ে যান। এতে তাঁর অনেক কষ্ট ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যৎসামান্য পুঁজির সামান্য আয় দিয়েই কোনোমতে চলছে তাঁর অনিশ্চয়তায় মোড়ানো একলা সংসার।
তবে এতোটা কষ্টে থেকেও তিনি মনোবল হারাননি জীবনযুদ্ধে। সময় কাটাতে দোকানে বসেই আশপাশের মানুষের সঙ্গে করছেন খোশগল্প। ছোট ছোট শিশু ক্রেতাদের সঙ্গে করছেন রসিকতা। রতন বেগমের জীবনযুদ্ধ যেন সত্যিই এক জ্বলন্ত প্রেরণার উদাহরণ।

কথা হয় রতন বেগমের সঙ্গে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় এ ব্যবসা করে প্রতিদিন কতো কাটা তাঁর আয় হয়। তিনি বলেন, এই কয়েকটা জিনিসপত্র দিয়ে দোকানদারি করে খুব সামান্য টাকাই পাই। এই আয় দিয়েই কোনোমতে বেঁচে আছি।
তিনি আরও বলেন, এখন বয়স হয়ে গেছে শরীরেও আগের মতো শক্তি পাই না। ধারে কাছে টিউবওয়েল না থাকায় দূর থেকে খাবার পানি আনতে কষ্ট হয়। কেউ যদি দয়াকরে আমার দোকানটা করে দেয় তাহলে আমার অনেক উপকার হবে। প্রতিদিন সকালে দোকানের মালপত্র বাড়ি থেকে এনে আবার সন্ধ্যার বাড়ি নিয়ে যেতে আমার কষ্ট হয়। একটা দোকান তৈরি হলে আমার আর এই কষ্টটা হবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ইসহাক মিয়া বলেন, অনেক বছর ধরে এই বৃদ্ধ মহিলাটি এখানে সামান্য পুঁজি নিয়ে কিছু জিনিসপত্র দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। তাঁর স্বামী সন্তান না থাকায় সে মূলত খারাপ অবস্থায় আছে। স্থানীয় লোকজন যতটুকু সম্ভব তাকে সহযোগিতা করে। তবে এসব সাহায্যও তার জন্য পর্যাপ্ত নয়।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, বৃদ্ধ মহিলাটি কারো কাছে হাত পাতে না, নিজের চেষ্টায় এই দোকান দিয়ে সামান্য আয়েই কষ্টেসৃষ্টে জীবনযাপন করছেন। তাঁর ভাইয়েরাও তাঁর তেমন খোঁজখবর নেন না। সারাদিনের টুকিটাকি বিক্রির আয় দিয়েই কোনোমতে চলছেন তিনি। যদি সরকারিভাবে বা কোন সংগঠনের উদ্যোগে যদি তার দোকানঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয় তবে এই বৃদ্ধার অনেক উপকার হবে।

এ ব্যপারে মালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার ইউনিয়নের রামনগর এলাকার বৃদ্ধা রতন বেগমকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হয়। ভবিষ্যতেও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD