স্টাফ রিপোর্টার:
দেবিদ্বারের দক্ষিণ গুনাইঘর ইউনিয়নের উজানিকান্দি গ্রামের চা দোকানদার শামীম আহমেদকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি মিথ্যা বলে দাবী করেছে ভুক্তভোগী আলীম খন্দকারের পরিবার ও এলাকার স্থানীয়রা।
ঘটনার সূত্রপাত, শামীম ও রফিকুল ইসলামের ছোট বাচ্চাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে এ ঝগড়া ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যে। দুই পরিবারের ঝগড়া মিটাতে ঈদুল ফিতরের পরের দিন রাতে সালিশি বৈঠক ডাকেন তারা। এতে স্থানীয় ইউপি সদস্য হিরন মিয়া ও গ্রাম পুলিশসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের শতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
ওই সালিশে থাকা কয়েকজন জানায়, সালিশ সুরু হওয়ার পরপরই মরহুম রফিকুল ইসলামের স্ত্রী তার জবানবন্দী পেশ করেন। শামীম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সামনে বলেন, মরহুম রফিকুল ইসলামের দশম শ্রেণী পড়ুয়া সন্তানের জন্মদাতা শামীম। একথা বলার পর উপস্থিত বিচারকরা উত্তেজিত হয়ে শামীমকে গালমন্দ করে। কেউ কেউ তাকে মারতে আসে। ওই সময় উপস্থিত গ্রাম পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে বিচারকদের জিজ্ঞাসায় শামীম বারবার একই কথার পূনরাবৃত্তি করতে থাকলে উপস্থিত বিচারক সুমন কাজী, হিরন মেম্বার, ছিদ্দিকুর রহমান, বাচ্চু মিয়া তাকে তার এই আপত্তিকর বক্তব্য পরিহার করতে বলেন। তার পরেও একই কথা বারবার বলায় উজানি জোড়ার সুমন খন্দকার শামীমকে ২ টি থাপ্পড় মারেন। ওই সময় আবদুল আলিম খন্দকার তার বসার প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে শামীমকে আঘাত করতে যায়। তবে গ্রাম পুলিশ শ্রীদাম চন্দ্র দাস এবং হারুনুর রশিদ চেয়ারটি ধরে ফেলায় শামীমের গায়ে তা লাগেনি।
অমিমাংসিত ভাবে বিচারকার্যক্রম রেখেই সবাই যে যার মতো চলে যায়। রাত ১২ টার পরে শামীমের বুকে ব্যথা হওয়ায়। তার স্ত্রী ও ছোট ছেলে প্রতিবেশীর সিএনজি দিয়ে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার শামীমকে কুমিল্লা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সিএনজি যুগে শামীমকে নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পর বুকের ব্যথা কমে যাওয়ায় বাড়ি নিয়ে আসেন তারা। ভোরবেলা আবারো বুকে ব্যথা হলে দেবিদ্বারের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ইসিজি করানো হয়। পরে দুপুর ২ টার দিকে কুমিল্লা রেলগেইটের মীম হসপিটালে শামীমের মৃত্যু হয়।
আলিম খন্দকারের পরিবার বলেন, শামীমের মৃত্যুর খবর প্রচার হওয়ার পর আলীমের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা একত্রিত হয়ে তার বিরুদ্ধে মিছিল দিতে থাকে এবং ব্যাপকভাবে প্রচার করতে থাকে যে, আলীম শামীমকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। মুহূর্তের মধ্যে এই মিথ্যা খবরটি ছড়িয়ে পড়ে সবদিকে। প্রতিপক্ষরা ফেইসবুক লাইভে এসে বলতে থাকে আলিম খন্দকার বিরুদ্ধে।
আলীম খন্দকার শামীমকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবী করে এর তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, আলীম খন্দকারের পিতা মুছা খন্দকার, এই বাড়ির বারী খন্দকারের ছেলে আউয়াল খন্দকার ও কামাল খন্দকারসহ কাদের খন্দকারের ছেলে মামুন খন্দকার।