নেকবর হোসেন
কুমিল্লা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আর মাত্র ০৯ দিন বাকি। তবে মঙ্গলবার ভোটারদের মাঝে ব্যাপক আকারে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নগরজুড়ে ক্রমেই নির্বাচনী প্রচারসহ ভোটারদের কাছে টানতে সরব হয়ে প্রাণান্তকর চেষ্টা অব্যাহত
রেখেছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী- সমর্থকরা। এরই মধ্যে নগরীর পাড়া-মহল্লা রাস্তাঘাট অলিগলি প্রার্থীদের ছবি সংবলিত পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। এ ছাড়া নগরীতে প্রার্থী ও তাদের অনুসারী নেতাকর্মীদের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের পাশাপাশি চলছে মাইকিং ও ডিজিটাল প্রচারও। প্রত্যেক প্রার্থীর রয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া উইং। এসব ডিজিটাল উইংয়ের সঙ্গে নেতাকর্মীরা যেমন যুক্ত
আছেন তেমনি যুক্ত করা হয়েছে গণমাধ্যম কর্মীদেরও। মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রতীকের প্রার্থী- নগর আওয়ামী লীগ সমর্থিত ডা, তাহসিন বাহার সূচনা সকাল ২৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কাপ্তানবাজার ও ৫নং ওয়ার্ড মোগলটুলির বিভিন্ন স্থানে গণ সংযোগ উঠান বৈঠক বক্তব্য এসব কথা বলেন ডা তাহসিন বাহার সূচনা। তার গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে বিভিন্ন পেশার বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষসহ সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটে। এতে মহানগর আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। বলেন -আমার মেধা এবং শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে কুমিল্লার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। তরুণদের জন্য আমার বার্তা হচ্ছে তরুনদের প্রথম ভোটটা অবশ্যই যেন উন্নয়নের পক্ষে বাস মার্কায় হয়। যেখানে যাচ্ছি নারী ভোটাররা অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে ডা. তাহসিন বাহার বলেন, আমি একজন চিকিৎসক। আমি নির্বাচিত হলে নারীদের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব দিব। নারীদের কথা শুনার জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করব।
ডা. সূচনা আরও বলেন, কুমিল্লার উন্নয়নের নতুন অধ্যায় সূচনা করতে চাই। কুমিল্লার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিগত সময়ে আমার বাবার পাশে থেকে কুমিল্লা মানুষের জন্য কাজ করেছি। এছাড়া সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমেও আমার সারা কুমিল্লায় বিচরণ রয়েছে। বিগত সিটি নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি কাজ করেছি। কুমিল্লা মানুষের সমস্যাগুলি আমার জানা আছে। নির্বাচিত হলে একটা পরিকল্পিক সুন্দর নগরী গড়ে তুলব। অবশ্যই সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করব।
অন্যদিকে সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু মঙ্গলবার প্রচারণা চালান নগরীর রেসকোর্স এলাকায়। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি মেয়র থাকাকালে অনেক কাজ করেছি। পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা, বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করে অর্থ বরাদ্দ করেছিলাম। গেল নির্বাচনে আমাকে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছে। এবার মেয়র নির্বাচন হলে আমার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চাই।’
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার গরীর মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, লহিপুরা, ধর্মপুর, দয়াপুর, চৌয়ারা, গ্রাম চৌয়ারা, কালিনগর, ডুমুরিয়া, তারাফাইয়াসহ আশপাশের এলাকায় এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন।এ সময় তিনি বলেন, সরকার যে ডামি নির্বাচন করেছে জনগণ তা বর্জন করেছে। কিন্তু এখন বিএনপি আবার টেস্ট কেস হিসেবে আমাকে পর্যবেক্ষণ করছে। তাই এই নির্বাচনে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে মাঠে নামে। তারা আবার ভোটের মাঠে আসতে শুরু করেছে। তাই জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচন আরও উৎসবমূখর হয়ে উঠেছে। কিন্তু কি হচ্ছে? জনগণ মাঠে নামলে আমাকে শোকজ করে। এতে জনগনকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন কমিশন আবার আস্থা হারাবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন স্থানে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারী ও গাড়ি ব্যবহার করে এক প্রার্থী তার লিফলেট ও পোস্টার লাগানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন অভিযোগের অপেক্ষায় থাকে। নির্বাচন কমিশন যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তারা জনগণের আস্থা পাবেনা।
এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মেয়র প্রার্থী নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম প্রচারণা চালান নগরীর টিক্কাচর ও সংরাইশ এলাকায়। এ সময় তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনকে ঘিরে একটি লুটেরাজ শ্রেণি তৈরি হয়েছে। তাঁরা সিটির উন্নয়ন না করে লুটপাট করেছেন। পরিকল্পিত নগরী গড়ার কথা বলে অনেকে মেয়র নির্বাচিত হয়েও নগরবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেন। আমি কথায় নয়, মেয়র নির্বাচিত হলে পরিকল্পিতভাবে নগরকে সাজাব।’