1. [email protected] : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. [email protected] : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. [email protected] : unikbd :
চৌদ্দগ্রামের সেই মাছ শূণ্য জগন্নাথদীঘিতে বড়শি প্রতিযোগিতা হয়নি, হতাশায় ফিরে গেলেন মৎস্য শিকারীরা - Dainik Cumilla
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামের সেই মাছ শূণ্য জগন্নাথদীঘিতে বড়শি প্রতিযোগিতা হয়নি, হতাশায় ফিরে গেলেন মৎস্য শিকারীরা কুমিল্লায় পিআরপদ্ধতিসহ ৫দফা দাবিতে মহানগরী জামায়াতের গণমিছিল ও সমাবেশ বুড়িচংয়ে বিয়ে বাড়ীতে আগুন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিসের অগ্নিকাণ্ডে বসতঘর পুড়ে ছাই বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির চৌদ্দগ্রাম উপজেলা কমিটি গঠন যুবদলকে গতিশীল করার লক্ষে নাঙ্গলকোটের জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নে মতবিনিময় সভা ব্রাহ্মণপাড়ায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার কুমিল্লায় সৌদিআরবের ফল সাম্মাম, দিন দিন চাহিদা বাড়ছে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে: মনিরুজ্জামান বাহলুল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অচল করে দেয়ার হুসিয়ারী- কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে উত্তাল নগরী: রাজপথে লাখো মানুষের ঢল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতে জুলাই সনদ যথাসময়ে স্বাক্ষরিত হবে-কুমিল্লায় ধর্ম উপদেষ্টা

চৌদ্দগ্রামের সেই মাছ শূণ্য জগন্নাথদীঘিতে বড়শি প্রতিযোগিতা হয়নি, হতাশায় ফিরে গেলেন মৎস্য শিকারীরা

  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথদীঘিতে মাছ না থাকার বিষয়টি গোপন করে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো বড়শি প্রতিযোগিতা। তথ্য গোপন করে প্রতারণার মাধ্যমে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় দীঘিটি লিজ নেওয়া “চিওড়া মৎস্য চাষী সমবায় সমিতি লি:” এর সাধারণ সম্পাদক সফিউল ইসলাম জিয়ার নেতৃত্বে অপরাপর সদস্যদের বাঁধার মুখে বন্ধ হয়ে যায় বড়শি প্রতিযোগিতা। এরপরই ঘটে যত ঘটনা। মাছ শিকারীরা টিকেটের পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় রোষানলের ভয়ে প্রতিযোগিতার মূল আয়োজক “চিওড়া মৎস্য চাষী সমবায় সমিতি লি:” এর সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফয়সাল সমিতি অফিসের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। ফলে উত্তেজিত মাছ শিকারীরা বড়শি প্রতিযোগিতার জন্য তৈরীকৃত মাচায় আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। সারাদিন অপেক্ষা শেষে সন্ধায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মাছ শিকারীরা চরম হতাশায় বাড়ি ফিরে যায়।

“চিওড়া মৎস্য চাষী সমবায় সমিতি লি:” এর সাধারণ সম্পাদক সফিউল ইসলাম জিয়া জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তের ফলে জগন্নাথদীঘিটি অভিভাবক শূণ্য হয়ে পড়ে। হামলা-মামলার ভয়ে তৎকালীন জগন্নাথদীঘির ইজারাদার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মহিবুল আলম কানন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও সাধারণ লোকজন দফায় দফায় জাল ফেলে দীঘি থেকে মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এভাবে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত কোন ধরনের বাঁধা-বিপত্তি ছাড়াই যে যার মত করে দীঘি থেকে মাছ ধরে। ফলে দীঘিটি হয়ে যায় মাছ শূণ্য। চলতি বছরে এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখে জগন্নাথদীঘিটি “চিওড়া মৎস্য চাষী সমবায় সমিতি লি:” ৫ বছরের জন্য লিজ পাওয়ার পর বিভিন্ন জাতের কিছু মাছের পোনা অবমুক্ত করে। মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে সেই মাছগুলো এখনো খাওয়া বা বিক্রির উপযোগী হয়নি। কিন্তু জগন্নাথদীঘি মানে বৃহত্তর কুমিল্লার বড় ও ঐতিহ্যবাহী দীঘি। এটাকে পুঁজি করে মাছ শূণ্যতার বিষয়টি আড়াল করে আমাদের সমিতির কোন সদস্যকে কিছু না জানিয়ে সমিতির সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফয়সাল একটি লোভী ও কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দীঘিতে ২৮ হাজার টাকা হারে টিকেট বিক্রি করে বড়শি প্রতিযোগীতার নামে সাধারণ মাছ শিকারীদের সাথে প্রতারণা শুরু করে। বিষয়টি আমরা জানতে পেয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এমন প্রতারণামূলক কার্যক্রম বন্ধের লিখিত আবেদন জানিয়েছিলাম। বিভিন্ন তদবীরের ফলে জেলা প্রশাসন থেকে তাকে বড়শি প্রতিযোগীতার অনুমোদন দিলেও সেখানে টাকা নিয়ে কোন টিকেট বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তারপরও ফখরুল ইসলাম ফয়সাল এক ঘেয়েমী করে মাছ শিকারীদের কাছ থেকে পূর্ব নির্ধারিত ২৮ হাজার টাকা হারে শতাধিক ব্যক্তি থেকে অন্তত ২৮ লাখ হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালালে আমরা সমিতির সকল সদস্য মিলে তা প্রতিরোধ করি। দূর-দূরান্ত থেকে আগত কোন মাছ শিকারী যেন প্রতারিত না হয়, সেজন্য বড়শি প্রতিযোগীতা বন্ধ রাখা হয়। সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়ালে প্রতিযোগীতা শুরু না হলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মাছ শিকারীরা সমিতির সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফয়সালের কাছে তাদের বুকিংকৃত টাকা ফেরত চাইলে সে নানান টালবাহানা শুরু করে। এ সময়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সে সমিতি অফিসের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে উত্তেজিত মাছ শিকারীরা প্রতিযোগীতার জন্য তৈরীকৃত মাচায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের এসআই অভিজিৎ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বড়শি প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে আসা চট্টগ্রামের শাহাদাত হোসেন জানান, আমি অনেক আশা নিয়ে এখানে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে বড়শি প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে এসেছিলাম। দীঘিতে যে পূর্বের কোন মাছ নেই তা আমাদের কোনভাবেই বুঝতে দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছিল এখানে অনেক বড় বড় মাছ রয়েছে। প্রতিযোগীতা না হওয়ায় আমি আমার টিকেটের জন্য বুকিংকৃত ৫ হাজার টাকা ফেরত চাইলেও তা না দিয়ে আয়োজক ফয়সাল পালিয়ে যায়। ভাগ্য ভালো আমি পুরো টিকেটের টাকা পরিশোধ করিনি। সে কিন্তু আমাকে বারবার ফোন দিয়েছিল পুরো টাকা পরিশোধের জন্য।

ফেনীর সোনাগাজী থেকে আসা আতা উল্যাহ জানান, আমি পিকআপ রিজার্ভ করে ৩ হাজার টাকা হারে ভাড়া করে ৫ জন অভিজ্ঞ মাছ শিকারী নিয়ে এসেছিলাম এখানে মাছ ধরতে। গতকাল রাতেও আয়োজক ফয়সাল ফোন করে বলেছিল সকাল সকাল যেন চলে আসি। কিন্তু এসেতো হতাশা ছাড়া কিছুই পেলাম না। শূণ্য হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে এখান থেকে।

কিশোরগঞ্জ থেকে আসা শাকিল জানান, আমি পুরো ২৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে টিকেট কনফার্ম করে সখের বশে ৫ বন্ধু মিলে মাছ শিকার করতে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে যে আমাদের সাথে এমন প্রতারণা করা হচ্ছে তা জানতাম না। আমি দুপুর ১২টার দিকে আমার টিকেটের টাকা আয়োজক ফয়সালের কাছে ফেরত চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং কোন টাকা ফেরত দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। কিন্তু আমিতো এখানে অচেনা মানুষ জোর করে তো আর আমার টাকা আদায় করতে পারবো না। তাই মনের দু:খে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই অভিজিৎ বলেন, জগন্নাথদীঘির লিজ নেওয়া সমিতির দু’পক্ষের উত্তেজনার খবর পেয়ে আমি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাদের দ্বন্দ্বের জেরে বড়শি প্রতিযোগীতা হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতি শান্তই ছিলো। অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জামাল হোসেন বলেন, আমি সারাদিন ২ জন উপদেষ্টার সফরকৃত অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলাম। দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে জগন্নাথ দীঘিতে বড়শি প্রতিযোগীতা হয়নি বলে জানতে পেরেছি। তবে আইন-শৃঙ্খলা বিঘœ হওয়ার মত কোন ঘটনা ঘটেনি।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD