মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, দেশ এক ক্রান্তিলগ্নে পার করছে। আপনারা জানেন, ৬মাস আগে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করে পলায়ন করেছে কিন্তু শেখ হাসিনার অশুভ প্রেতাত্মা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এখনো ঘোরাফেরা করছে। তারা একটার পর একটা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। গত ৪৮ ঘন্টার জনতার তীব্র ক্ষোভের বহি: প্রকাশ হিসেবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের শেখ মুজিবের বাড়ী এবং সারাদেশের বহু জায়গায় আওয়ামী লীগের বাড়িঘর, অফিস ভাংচুর হয়েছে। কিন্তু চৌদ্দগ্রামে কি হয়েছে আমি জানিনা। এসব ঘটনার জন্য এককভাবে শেখ হাসিনা দায়ী। তিনি দিল্লীতে বসে একটার পর একটা উস্কানীমুলক বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার উস্কানিমুলক এমন বক্তব্য এদেশের শান্তিময় পরিবেশকে অশান্ত করে তুলছে। এ ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। জাতীয় পার্টি হানাহানির রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। জনগণকে সাথে নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে জাতীয় পার্টি।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে চৌদ্দগ্রাম পৌর মিলনায়তনে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জাতীয় পার্টি (জাফর) আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট বিরোধী আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চৌদ্দগ্রাম আসনে প্রার্থী হবে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য (সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের ভাতিজা) কাজী মোহাম্মদ নাহিদ। ইনশাআল্লাহ আমরা বিজয়ের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এ আসন উপহার দিব।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব, সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন বলেন, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী তথা চৌদ্দগ্রামের জনতার দুর্দিনের সাথী সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের ভাতিজা কাজী নাহিদ। আজকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আগামীর চৌদ্দগ্রামের কান্ডারী হিসেবে কাজী নাহিদকে আপনাদের হাতে তুলে দিবেন। আপনারা তাকে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করে সংসদে পাঠাবেন। যাতে তিনি চাচা কাজী জাফর আহমেদের মতো বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখতে পারেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, চৌদ্দগ্রামের কৃতিসন্তান কাজী নাহিদ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, কাজী জাফর উত্তরাধীকার সূত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হননি। তিনি তার যোগ্যতা, মেধা এবং বিচক্ষতার কারণে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ৮ম প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের জন্য ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষনা করেছিলেন। আজ থেকে ৪০ বছর আগে তিনি চৌদ্দগ্রামে বিদ্যুৎ এনে দিয়েছিলেন। যখন দেশের অধিকাংশ উপজেলায় সরকারি কলেজ ছিলনা তখন তিনি চৌদ্দগ্রামবাসীকে ২টি সরকারি কলেজ উপহার দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম চৌদ্দগ্রামে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপন, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ এনে দিয়েছেন। এছাড়াও চৌদ্দগ্রামের দৃশ্যমান বড় সড়কগুলোর সবগুলোতেই জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের অবদান।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুব সংহতির সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনিরের সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুব সংহতির আহবায়ক কাজী শহিদের সঞ্চালনায় কর্মী সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ চৌধুরী পাশা, উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা ওবায়েদ পাটোয়ারী, আলকরা ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির আহবায়ক জহিরুল ইসলাম, সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বাবুল, গুনবতী আহবায়ক জানে আলম দ্বোভাষী, সদস্য সচিব জাকির হোসেন জিকির, মুন্সীরহাট ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির আহবায়ক নুর হোসেন, ইউনিয়ন জাতীয় পার্টি নেতা আবদুল মালেক, বাতিসা ইউনিয়ন যুব সংহতির আহবায়ক মাহফুজ প্রমুখ।
সভাশেষে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ চৌধুরী পাশাকে সভাপতি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুব সংহতির সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনিরকে সাধারণ সম্পাদক এবং ওবায়েদ পাটোয়ারীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন।