1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে কুমিল্লায় প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণঘাতী - Dainik Cumilla
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
লাকসামে সাংবাদিকদের সম্মানে জামায়াতের ইফতার মাহফিল কুমিল্লার ধর্মসাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার কুমিল্লার চান্দিনায় পুরুষকে বেঁধে নারী কর্মীকে যৌন নির্যাতন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মাদকসেবনকারীকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ইসলামী ফ্রন্টের উদ্যোগে ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত চৌদ্দগ্রামে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ, হতাহত ২০ কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে কলেজছাত্রীর মৃত্যু, আহত পাঁচজন বদর যুদ্ধের তাৎপর্য ও শিক্ষা আজ ঐতিহাসিক বদর দিবস কুমিল্লার তিতাসে কবরস্থানের পাশ থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে কুমিল্লায় প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণঘাতী

  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৬২ বার পঠিত

 

সাকলাইন যোবায়ের ।।
ঢাকা চট্টগ্রাম রেলপথের ডাবল রেল লাইন হলেও কিন্তু এখনো অরক্ষিত রয়ে গেছে লেভেলক্রসিং গুলো। এসকল লেভেলক্রসিংয়ে গেট ম্যান এবং গেট না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে । সড়ক পথের যানবাহনের সাথে রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সংঘর্ষে কিংবা ট্রেনে কাটা পড়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে প্রাণহানি। মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার ৭ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন । এদের মধ্যে একজন ৮ মাসের গর্ভবতী নারী ছিলেন। এ মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় নিহত সাত জনের লাশ ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়।
সড়ক নির্মাণ কর্তৃপক্ষ এলজিইডি, উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের এবং রেল কর্তৃপক্ষের দায় ঠেলাঠেলিতে এসব লেভেল ক্রসিং ও নিরাপদ থেকে যাচ্ছে দিনের পর দিন। রেল ক্রসিংয়ে যে দূর্ঘটনা গুলো ঘটছে তার দায় যেন কারো নেই।
লাকসাম রেলওয়ে থানার তথ্য মতে, চলতি বছর কুমিল্লার লাকসাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথে দুর্ঘটনায় ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ৫৭ টি। লাকসাম আখাউড়া ৭৬ কিলোমিটার রেলপথে অরক্ষিত অবৈধ লেবেল ক্রসিং এর সংখ্যা ৩৮ টি। যার মধ্যে ৩১ টি লেভেলক্রসিংয়ে রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব এলজিইডি কর্তৃপক্ষের।
কুমিল্লার রেলওয়ের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মোঃ লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, এলজিইডি সহ বিভিন্ন সড়ক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই রেল লাইনের উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে। বিনা অনুমতিতে যেসব রাস্তা রেললাইনের উপর দিয়ে যায় সেগুলোর ক্রসিংকেই আমরা অবৈধ লেভেল ক্রসিং হিসেবে বলে থাকি। এসব লেভেল কোচিংয়ে গেট্ম্যান এবং গেট দেয়ার ব্যবস্থাপনার রেল কর্তৃপক্ষের থাকলেও – সড়ক নির্মাণ কর্তৃপক্ষ সেজন্য সাথে কিছু ব্যবস্থাপনা মেনে চলতে হয়। নিয়মাবলির মধ্যে তিন বছরের জন্য সড়ক কর্তৃপক্ষ গেজম্যানের বেতন ও গেটের খরচ বহন করার কিছু নিয়ম রয়েছে। না হয় সেসব ক্রসিং গুলোকে নিরাপদ করা যাচ্ছে না। সড়ক বিভাগ আমাদের সহযোগিতা না করলে – আমরা শুধু সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড টানিয়ে দিতে পারি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমিল্লা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলীর সাথে এ বিষয়ে বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি কুমিল্লা জেলায় নতুন এসেছি – তাই পূর্ববর্তী সময়ে কেন লেভেল ক্রসিং গুলোতে গেট দেয়া হয়নি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
লেভেল ক্রসিং এ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সময় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হলেও সেগুলো কখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার বলেন, কোন লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত থাকতে পারবে না। রেলপথ কিংবা সড়ক বিভাগ যে কেউ এসব লেবেল কোচিং গুলোতে গেট এবং গেটম্যান দিয়ে নিরাপদ করতে হবেই। আমরা কারো অবহেলার দায় প্রাণ দিয়ে দিতে পারি না। কুমিল্লার লেভেল ক্রসিং গুলোকে নিরাপদ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে মঙ্গলবার বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর অবৈধ লেভেল ক্রসিং এ সুবর্ণ এক্সপ্রেস এর ট্রেনের ঢাকায় অটো রিক্সার ৭ যাত্রী নিহত হয়। এই ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। বুড়িচং উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জাবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর আগেও যেসব লেভেল কোচিং এ দুর্ঘটনা ঘটেছে প্রফেশন আশ্বাস দিয়েও গেইট কিংবা গেইটমান কিছুই দেয়নি। এলাকাবাসী সেটি মেনে নিবে না। এভাবে লেবেল ক্রসিং এ মানুষ প্রাণ হারালে – প্রশাসনের প্রতি আরো ক্ষোভ জমে উঠবে।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল জানান, কিছুদিন আগেও রাজাপুর রেলস্টেশনের পাশে লেভেল কোচিং এর ট্রেনে কাটা পড়ে এক শিক্ষার্থী মৃত্যুবরণ করে। সে সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় ১৫ দিনের মধ্যে রাস্তায় গেট এবং গেট্মেন দেয়া হবে। কিন্তু এখনো সেটির বাস্তবায়ন হয়নি। এইসব লেভেল কোচিংয়ে গেটম্যান এবং গেট না থাকায় দিনের পর দিন ট্রেন দুর্ঘটনায় মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের কুমিল্লার সভাপতি আলহাজ্ব শাহ্ মো. আলমগীর খান বলেন,” কুমিল্লার গ্রাম সাইডের অধিকাংশ লেভেল রেল ক্রসিন গুলোতে গেট থাকেনা। আর তিন চাকার অটোরিকশা গুলোর চালকদের নেই কোন প্রশিক্ষন। যার দরুন লেভেল রেল ক্রসিং গুলোতে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

রেলওয়ে পুলিশের কুমিল্লা স্টেশন ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা কামাল জানান, দুর্ঘটনারোধে লেভেল কোচিং গুলোতে নিরাপদ করতে আমরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা চট্টগ্রাম রেলপথটি দুই লাইনে উন্নীত হওয়ায় এ পথে রেলের গতি বেড়েছে দ্বিগুণ। এছাড়া আর আগের তুলনায় ট্রেন চলাচলেও বেড়েছে অনেক। যে কারণে কে অতিক্রম করে যেসব রাস্তা গিয়েছে, সেসব রাস্তায় লেভেল কোচিং গুলোতে বিভিন্ন সময় যানবাহন আটকে গিয়ে ট্রেনের সাথে সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এক একটি দুর্ঘটনায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে প্রতিটি পরিবার।

 

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD