তাপস চন্দ্র সরকার।।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা দেবীর বিদায়ের শেষে এবার দেবী লক্ষ্মীকে ঘরে আনার পালা। তারই ধারাবাহিকতায় আজ-কাল (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) দুদিন সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা জেলার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে ও বাসাবাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে শ্রীশ্রী কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা।
জানা যায়- কোজাগরী শব্দের উৎপত্তি ‘কো জাগতি’ থেকে। যার অর্থ, ‘কে জেগে আছো’। কথিত আছে, কোজাগরী পূর্ণিমা তিথিতে দেবী লক্ষ্মী মর্ত্যে আসেন তাঁর ভক্তদের আশীর্বাদ করতে। দেবী লক্ষ্মী পার্থিব এবং অপার্থিব সম্পদ, সৌভাগ্য এবং সৌন্দর্যের দেবী। এই তিথিতে যাঁরা রাত জেগে দেবীর আরাধনা করেন এবং দেবীর আগমনের অপেক্ষায় থাকেন, তাঁরা দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পান।
আরও জানা যায়- পূর্ণিমা তিথি আরম্ভ বুধবার (১৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৮টা ১২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড গতে এবং পূর্ণিমা তিথি শেষ পরদিন বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৫টা ৪৭ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড পর্যন্ত এসময়ের মধ্যে শ্রীশ্রী কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা।
এদিকে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন- দশভূজা মা চিন্ময়ীর বিদায়ের ব্যথা ভুলে আজ আবার আনন্দে মেতে উঠবেন বাঙালী সনাতন ধর্মবিশ্বাসীরা। তিথি অনুসারে আজ-কাল দুদিন শ্রী শ্রী কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। ধন-সম্পদ-ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী পূর্ণবতী হয়ে আজ পৃথিবীতে আসবেন। ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষ এই চারটি হাতের আশীর্বাদে ধন্য করবেন ভক্তদের।
তিনি আরও বলেন- গ্রন্থানুসারে দেবী লক্ষ্মী শুধু ধনই দেন না। ষোল প্রকার সম্পদ প্রদান করেন তিনি। লক্ষ্মী পূজা করলে মানুষ সার্বিকভাবে সুন্দর ও চরিত্রবান হয়। শারদীয়া দুর্গোৎসব শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে ঘরে ঘরে সৌভাগ্য ও ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী পূজা হয়। লক্ষ্মী ছয়টি বিশেষ গুণের দেবী। আশ্বিন মাসের কোজাগরী পূর্ণিমায় দেবী আরাধনার পাশাপাশি প্রতি বৃহস্পতিবার সধবা স্ত্রীগণ তাদের ঘরে লক্ষ্মীর পূজা করেন। মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সাথে আজ ঘরে ঘরে শোভা পাবে বাহারী আল্পনা আর লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ। ধন-সম্পদের আশায় সনাতন ধর্মানুসারীরা উপবাস থেকে লক্ষ্মীর পূজা করবেন। চিড়া, মুড়ি, মুড়কি, নাড়ু, ফুল, ফল, মিষ্টি নৈবেদ্য দিয়ে আরাধনা হবে, দেবেন পুষ্পাঞ্জলি।
অপরদিকে, কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুরস্থিত শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী কালী মায়ের বাড়ীতে শ্রী শ্রী লক্ষ্মী প্রতিমাসহ পূজার নানাহ উপকরণ সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। তারা বলেন, প্রতিমা তৈরির দ্রব্য মূল্যের দাম উর্দ্ধগতি থাকায় প্রতিমার মূল্যও গেলো বছরের তুলনায় বেশি।
শ্রী শ্রী লক্ষ্মী প্রতিমা কিনতে আসা সাগর দাশ জানান- গেলো বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমার মূল্য দ্বিগুন। এরফলে প্রতিমা ক্রয়ের বাজেট এর চেয়ে বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমালয় গুলো থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে যেতে ভিড় জমান অনেকে ।