1. [email protected] : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. [email protected] : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. [email protected] : unikbd :
‘মা আমিও আব্বুর সাথে কবরে ঘুমাব, আমাকে নিয়ে যাও’ - Dainik Cumilla
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কুমিল্লার ৫ টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কুমিল্লা সীমান্তে বিজিবির অভিযান; ৯৫ লাখ টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ নকলের দায়ে চৌদ্দগ্রাম সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী বহিষ্কার দাউদকান্দিতে ৩০ লাখ টাকার মালামালসহ কাভার্ডভ্যান ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১ চৌদ্দগ্রামে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবি’র হাতে যুবক আটক জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে- বুড়িচংয়ে জেলা প্রশাসক রাস্তা শুধু ইট-পাথরের নয় এটা মানুষের জীবনরেখা: ডক্টর মোবারক হোসাইন লাকসামে সাংবাদিকদের হুমকিদাতাকে গ্রেপ্তার দাবিতে স্মারকলিপি মাদকসেবীর পক্ষে দাঁড়ালেন কুবির এক সমন্বয়ক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সংকট; কুমিল্লা অঞ্চলে একাদশে ফাঁকা থাকবে দেড় লাখ আসন

‘মা আমিও আব্বুর সাথে কবরে ঘুমাব, আমাকে নিয়ে যাও’

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪
  • ১০২ বার পঠিত

 

মো: ওমর ফারুক মুন্সী :

‘মা আব্বু কই গেছে, আব্বুকে ফোন করো, আমি আব্বুর সাথে কথা বলব’ আব্বু কই মা, আব্বুকে এনে দাও। মা সান্ত্বনা স্বরে বলছেন ‘তোমার আব্বু কবরে ঘুমাচ্ছে’ ‘মা আমাকে কবরে নিয়ে যাও, আমিও আব্বুর সাথে কবরে ঘুমাব’ এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কাছে বায়না ধরছিলেন তিন বছরের ছোট্ট শিশু জুমা।
গত রবিবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার গুলিস্তান এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় জহিরুল ইসলাম রাসেল (২৪)। পরদিন ৫ আগষ্ট রাত ৯টার দিকে জানাজা শেষে তাকে নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জহিরুল ইসলাম রাসেল দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের মৃত শাহ আলম সরকারের একমাত্র ছেলে। সে ছৈয়দপুর কামিল মাদরাসায় থেকে ফাযিল ২য় বর্ষের ছাত্র। পাশাপাশি ঢাকায় একটি জুতার সোল্ডার কারখানায় কাজ করত।
নিহত রাসেলের স্ত্রী জান্নাত ফেরদৌসী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার মেয়ে বারবার তার বাবাকে খুঁজছে, বাবা কোথায় গেছে কখন আসবে প্রশ্ন করছে, বাবায় কবরে ঘুমাচ্ছে বললে সে কবরে গিয়ে বাবার সাথে ঘুমাতে চায়। আমি তাকে কি পরিচয়ে মানুষ করব। আমার স্বামী ফেসবুকে প্রতিদিন আন্দোলনে আসতেছি বলে বলে বিভিন্ন পোস্ট দিত, দেশ স্বাধীনের আন্দোলনে অংশ নিতে সকল ছাত্রদের বলত। তাঁর দেয়া পোস্টগুলো ফেসবুকে এখনও আছে। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করে আমার ছোট্ট মেয়েটাকে এতিম করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা মোর্শেদা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, অল্প বয়সে আমার বউ মা বিধবা হইল। নাতিন তার বাপকে হারাইলো, আমি আমার একমাত্র বুকের ধন হারাইলাম। অভাবের সংসারের ঘানি টানতে ছেলেকে ঢাকায় চাকরি করতে পাঠাইছিলাম, ফিরল লাশ হয়ে। ঢাকায় গন্ডগোলা শোনার পর ফোনে বারবার বলছিলাম বাবারে তুমি ওইসব আন্দোলনে যাইও না, নিষেধ করছি তাও শুনে নাই, উল্টো আমারে কইত ‘মা দেশ স্বাধীন করতে নামছি, স্বাধীন করেই ঘরে ফিরব, মাঝপথে ফিরে কাপুরুষ’ আমি আন্দোলনে না গেলে আর কে যাবে, যদি মরে যাই শহীদ হবো, বেঁচে থাকলে দেখা হবে। এসব বলে বলে আমাকে বুঝাইত। যে দিন আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয় সেদিন সকালে আমার সাথে কথা হয়। আমি নিষেধ করছিলাম যাইতে, তবুও গেছে। দুপুরে আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হইছে শুনে আমি বেহুশ হইয়া যাই। পরের দিন বাড়িতে দেখি কফিনে আমার ছেলে লাশ হইয়া শুইয়া আছে।
ঘটনার প্রত্যাক্ষদর্শী প্রতিবেশী মো. সোহেল রানা বলেন, রাসেল গুলিস্তানেই চাকরি করত। সেদিন আমিও গুলিস্তানে ছিলাম। রাসেল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আমাকে একজন ফোন করে জানায়, আমি তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে বলি, তাঁরা রাসেলকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। রাসেলের ডান হাতে ও ডান পাশের বুকে নিচে দুটি গুলি লাগে, প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম শহীদ বলেন, ছাত্রআন্দোলনে নিহত শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেলের বাড়ি পরিদর্শনে গিয়েছি। বাড়িতে থাকার মত একটি ঘরও নেই, প্রতিবেশীর একটি ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করত। জামায়াতের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারের জন্য একটি ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও তার মায়ের নামে একটি ব্যাংক একাউন্টে প্রতিমাসে সংসারের খরচ বাবদ নগদ টাকা দেয়া হবে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD