নেকবর হোসেন
কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ব্যবসা বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা তাসফির আত্মহত্যার জন্য সিনিয়র শিক্ষক আনিসকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিচার দাবি করছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তদন্ত করে প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক আনিসকে বহিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
সেই সাথে অভিযুক্ত শিক্ষককে আইনের হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়া বাজার কাজী বাড়ির মেয়ে তাসফী গত সোমবার রাতে ৩০টি ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোররাতে মৃত্যু হয় তাসফীর। মৃত্যুর পূর্বে আগেও সহপাঠীদের সাথে মুঠোফোনে শিক্ষক আনিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে গেছেন তাসফি।
কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ এর সাবেক শিক্ষার্থী মোঃ মাশরাফি মান্নান মজুমদার (মাহি) ফেসবুক পোস্টে লিখেন- সকল পুরাতন এবং রানিং ব্যাচ এর শিক্ষার্থীদের আহব্বান জানাই । আমরা বর্তমান নিয়ে বলতে পারি এই প্রতিষ্ঠান এর গভর্নিং বডি ঠিক নেই। দুর্নীতি তো অবশ্যই চলছে সেটা লিখিত গেরেন্টেড। এই তদন্ত করতে যেই যদি কোনোরকম বাধা সামনে আসে , প্রয়োজন এ গভর্নিং বডিকে মাঠে নামানো হবে।
তাফসীর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক জুড়ে সমালোচনার ঝড় চলছে। শিক্ষক আনিসের বিচার দাবি করে উত্তাল সাবেক শিক্ষার্থীরা।
কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, আনিস স্যার আমাদের গণিত ক্লাসে পেতো। তিনি সব সময় অনেক বকাঝকা করতো। অনেক বাজে বাজে উল্টা পাল্টা কথাবার্তা বলতো। পারসোনাল মেটারে অনেক নাক গলাতো এবং তাসফী নামে যে মেয়াটা মারা গিয়েছে সে এসএসসি পরিক্ষার্থী ছিলো। ঘাতক এই আনিস স্যার ওনার কাছে যে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়তো তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন তাসফীকে যেন পরিক্ষার হলে কেউ সহযোগিতা না করে। সে যেন কান্না করে হল থেকে বাহির হয় এই পরামর্শ ও দিয়েছেন ঘাতক এই আনিস স্যার।
চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, এই বিষয়ে আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সাথে সাথে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কেউ আমাকে অবহিত করেনি। আমি খবর নিচ্ছি ।
উল্লেখ্য যে, কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। শিক্ষকদের বেপরোয়া কোচিং বাণিজ্য, বিশৃঙ্খল পরিবেশ, অধ্যক্ষ বিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- সব মিলিয়ে এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ এখন নিম্নমুখী।