মো: ওমর ফারুক মুন্সী :
এবার দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামীলীগ ত্যাগ করা সেই ভাইরাল ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ ছাত্র-জনতা। রোববার (১৮আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের খলিলপুরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ওই চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন তাঁরা। নাহলে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ঘেরাও সহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিবেন বলে ঘোষণা দেন তারা। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল টিম রয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
জানা গেছে, উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ গত শনিবার (১৭ আগষ্ট) দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দল ত্যাগের ঘোষণা দেন এবং দুধ দিয়ে গোসল করে নিজেকে পবিত্র করেন। এ খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ছাত্র-জনতা। রোববার সকাল থেকে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। সেখানে তারা সকাল সাড়ে ১১টায় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং ৭২ ঘন্টার মধ্যে ওই চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের দাবি জানায়। না হয় ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা করেন তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুঁটে যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল টিম। বর্তমানে সেখানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মো: সজিব, মোহাম্মদ মাহফুজ, গোলাম মোস্তফা, মাজহারুল ইসলাম, সোহাগ মিয়া, রাকিব ও হাসান প্রমুখ।
ছাত্ররা বলেন, গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য মাসুদ চেয়ারম্যান নিজেই ইট ভেঙে ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করেছেন, এই ভিডিও এখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। তিনি এখন সময় খারাপ দেখে দুধ দিয়ে গোসল করে দল ত্যাগ করছেন, আগে কি করেছিলেন। এখন ছাত্র-জনতার একটাই দাবি ওই চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করতে হবে। না হয় আমরা আরো কঠিন আন্দোলনের ডাক দেবো।
ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে দেবিদ্বারে নিয়ে গেছে। তাঁরা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশ যে সব ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে শোক র্যালি করা হবে। সেখানে গিয়ে দেখলাম ছাত্র-জনতার সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে ইট পাটকেল মারিনি। আমার সাথে নির্বাচনে পরাজিত শক্তি ও নুরপুরের সাজিদ হত্যাকারীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভূল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা দুপুর ২টা পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে সকাল থেকেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের টিম রাখা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।