1. [email protected] : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. [email protected] : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. [email protected] : unikbd :
কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে বর্ণিল রাখের ব্রত ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত - Dainik Cumilla
সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ভোটের মাঠে আসছে “সুন্নি ও সূফী পন্থী” নতুন ইসলামী নির্বাচনী জোট! ঘোলপাশা ইউনিয়ন বিএনপি’র স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক হলেন রিয়াজ উদ্দিন বুড়িচংয়ের ভরাসার বাজারে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবদল নেতার হামলায় বিএনপি নেতা আহত ঘোলপাশা ইউনিয়ন বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক হলেন খোরশেদ আলম তরুণদের দেওয়া রক্তের বিচার না করে আমরা নির্বাচন চাই না: ড. মোবারক হোসাইন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে এ বছরের সাত মাসেই বহির্বিভাগের চিকিৎসা নিয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজার রোগী ব্রাহ্মণপাড়ায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের শিবিরের সংবর্ধণা কুমিল্লায় এশিয়া বাসচাপায় তিশা ট্রান্সপোর্টের সুপারভাইজার নিহত ডিসেম্বরে নির্বাচন দেন,সেনাবাহিনী প্রস্তুত আছে-কুমিল্লায় বরকত উল্লাহ বুলু

কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে বর্ণিল রাখের ব্রত ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত

  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৪২ বার পঠিত

 

তাপস চন্দ্র সরকার।।
প্রতিবছর কার্তিক মাসের ১৫ তারিখের পর প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ‘রাখের উপবাস’ উৎসব পালন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা। এই উৎসব ‘কার্তিক ব্রত’, ‘গোসাইর উপবাস’ কিংবা ‘ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বলন’ নামেও পরিচিত। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা নগরীর লাকসাম রোডস্থ মহেশাঙ্গণে বিশেষরূপ ধারণ করে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- কলাপাতা, ফুল, ধান-দূর্বা, মাটির প্রদীপ, ঘি, ডাব ও দুধের পসরা সাজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। যত পশ্চিমে হেলে সূর্য, ততই বাড়তে থাকে ভিড়। দুধ ঢেলে, আগরবাতি জ্বালিয়ে উৎসবের সূচনা করে নারীরা। বাড়ি থেকে আনা ফলমূল কিছুক্ষণের জন্য রাখা হয় লোকনাথের মূর্তির সামনে। তারপর সেগুলো নিয়ে উন্মুক্ত ময়দানে সারিবদ্ধভাবে বসে যায় সবাই। সামনে কলাপাতার ওপর রাখা হয় ঘিয়ের প্রদীপ। বিপদ থেকে রক্ষার জন্য যে কয়জন আপনজনের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করা হয়, গুনে গুনে সেই ক’টি প্রদীপই রাখা হয়। দুই-চার-দশ-বিশটা পর্যন্ত প্রদীপ দেখা যায়। চারপাশে সাজানো থাকে নানা রঙের কাটা ফল। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বেজে ওঠে ঘণ্টা। উলুধ্বনির মধ্যদিয়ে সবাই একযোগে জ্বালাতে শুরু করে প্রদীপ। একসঙ্গে জ্বলে ওঠে শত শত প্রদীপ। ওপর থেকে দেখা সেই দৃশ্য অনির্বচনীয়। মহেশাঙ্গণ মাট মন্দির প্রাঙ্গণজুড়ে শুরু হয় এক আলোর নাচন।
বলা হয়, বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে কার্তিক মাসে উপবাস পালন করে আশ্রম প্রাঙ্গণে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালাতে বলেছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে বারদীর ন্যায় কুমিল্লা ঐতিহ্যবাহী মহেশাঙ্গণসহ জেলা ও উপজেলাস্থিত লোকনাথ মন্দিরে প্রতিবছর এই উৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পালন করেন। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে জড়ো হন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গত ৪ঠা নভেম্বর শনিবার হতে লোকনাথের আরাধনায় নিমগ্ন থেকে এই ব্রত পালন করে তার অনুসারীরা। প্রদীপ, ধূপ, ফুল-ফল সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে নারী-পুরুষ, শিশু-তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে মগ্ন থাকেন আরাধনায়। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) মহেশাঙ্গণে সহস্রাধিক লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা রাখের ব্রত ও ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন।
কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে ব্রত উদযাপনে আসা ভক্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- এই ব্রতের আগের দিন সংযম করতে হয়। তারপর উপবাস থেকে সন্ধ্যার আগে ধূপ-প্রদীপ ইত্যাদি নিয়ে বসে যান তারা। তিনি আরও বলেন- আরাধনায় বসে প্রদীপ জ্বালানোর পর কথা বলা বারণ। সংযম ও মনোব্রতের মাধ্যমে একাগ্রচিত্তে লোকনাথকে ডাকতে হয়। এরপর ঘৃত প্রদীপ পুকুরে বাসিয়ে চরণামৃত সেবন করে উপবাস ভাঙার পর মন্দির থেকে ফলফলাদি ও চড়ুই প্রসাদ বিতরণ করা হয় পূণ্যার্থীদের মাঝে।
এদিকে, শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সভাপতি ননী গোপাল পাল বলেন- ত্রিকালদর্শী পূর্ণব্রহ্ম লোকনাথের নির্দেশ অনুসারে কলেরা বসন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য এ রাখের উপবাস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন পালিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় বারদীর ন্যায় কুমিল্লায়ও দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে পালিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার শেষদিন প্রায় ০৭ শতাধিক ব্রতী অংশগ্রহণ করেছেন।
শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভৌমিক বলেন- প্রতি বছর শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘ, লোকনাথ যুব সেবা সংঘ এবং উপদেষ্টা মন্ডলীর অক্লান্ত পরিশ্রমে এ রাখের উপবাস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও মহেশাঙ্গণে শান্তি পূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘ সিনিয়র সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলেরা-বসন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য কার্তিক মাসে উপবাস পালন এবং ঘৃত প্রদীপ ও ধূপ-ধুনা জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে বিপদ-আপদ, রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে ও আপনজনের মঙ্গল কামনা করে লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা পালন করে থাকেন “রাখের উপবাস”। প্রতি বছরের ১৫ কার্তিকের পর মাসের বাকী সময়ের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার ঘৃত প্রদীপ, ধুপ, ফল, ফুল ও বেলপাতা সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে লোকনাথ অনুসারীরা এই ব্রত পালন করে থাকেন।

 

 

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD