মোঃ রেজাউল হক শাকিল ।।
বাংলাদেশের অনেক স্থানেই রয়েছে ঐতিহাসিক অনেক নিদর্শন। যা দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখনও ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার একটি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের তেঁতাভূমি এলাকার তারেক রাজা চৌধুরী বাড়ি। কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও মাথা উঁচুু করে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়িটি দেখার জন্য ঐতিহ্যপ্রেমী মানুষজন ছুটে আসছেন। স্থানীয়দের অভিমত সংরক্ষণের অভাবে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কালের সাক্ষী ওই বাড়িটির প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো ইতিহাস।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই বাড়িটি তৎকালীন জমিদার তারেক রাজা চৌধুরীর। তারেক রাজা চৌধুরী তেঁতাভুমির জমিদার হিন্দু পরিবার ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ছিলেন। তিনি একজন আদর্শ মুসলিম হিসেবে পার্শ্ববর্তী চড়ানলে স্থায়ি বসতীস্তাপন করে ছিলেন। পরে একসময় সপরিবারে ভারতে চলে যান। তেতাভুমির পরিত্যক্ত ওই জমিদার বাড়ি তার নামেই তারেক রাজা চৌধুরীর বাড়ি নামে আজও পরিচয় বহন করছে।
গিয়ে দেখা গেছে, তারেক রাজা চৌধুরীর ওই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রাচীন ওই অট্টালিকা থেকে সংরক্ষণের অভাবে ইট সুরকি খসে খসে পড়ছে। খসে যাওয়া দালানটির ইটের ফাঁকে ফাঁকে গজিয়েছে পরজীবি বৃক্ষ। জমেছে শেওলার আস্তরণ। বাড়ির বিভিন্ন কামরায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে লোহার সিন্ধুক, আসবাবপত্র ও জমিদার পরিবারে ব্যবহারিক নানা সামগ্রী। কোথাও কোথাও খসে পড়ছে পলেস্তারা। বাড়িটির পাশের আরেকটি ভবন সংরক্ষণের অভাবে আগেই বিলীন হয়ে গেছে। ওই পরিত্যক্ত বাড়ির প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণের দাবি এলাকাবাসীর।
কথা হয় ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের সাথে, তিনি জানান, তারেক রাজা চৌধুরী জমিদার ছিলেন। তার জমিদারীর চিহ্ন আজও বহন করছে বাড়িটি। এই বাড়িটি সংরক্ষণ করলে নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস তুলে ধরা যাবে। সংরক্ষণের অভাবে বাড়িটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, তারেক রাজা চৌধুরী জমিদার বাড়িটি দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়িটি সংরক্ষণ করা হলে আগামী প্রজন্ম এর ইতিহাস সম্পর্কে অবগত হবে।
ঐতিহ্যপ্রেমী শশীদল ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, ঐতিহ্য ও ইতিহাস দেশের সম্পদ। প্রতিটি জাতি তাদের ঐতিহ্য ও ইতিহাস নিয়ে গর্ববোধ করে। আমাদের এ দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা পুরনো স্থাপত্য সংরক্ষণ করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। তেঁতাভূমির ওই জমিদার বাড়িটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। অনাগত প্রজন্ম এর থেকে এ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ে জানতে পারবে।