1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে, নিহত ৫ এক দফা দাবিতে কুবি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরীর পক্ষে নাইঘর বাসীর একাত্মতা প্রকাশ ধর্ম অবমাননার দায়ে কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার চৌদ্দগ্রামে ৫০ কেজি গাঁজাসহ আটক ১ দেবীদ্বারে আনোয়ারাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড বরুড়ায় বই ও কসমেটিক বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড, স্বামী’র কারাদণ্ড চৌদ্দগ্রামে ইটভাটায় নারী শ্রমিকের আত্মহত্যা কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হজ্ব যাত্রীদের সেবায় ভিক্টোরিয়া কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সদস্যরা

সামান্য কর্মচারী থেকে হালিমা হাইটেক পার্ক এর কর্ণধার

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৭৫১ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার।।

শুনতে অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও ঘটনাটি বাস্তব জীবনের। পরিবারের হাল ধরতে যে ছেলে একসময় হোটেলে কাজ করেছেন, সে ছেলেটিই এখন হালিমা গ্রুপ অফ কোম্পানিজ এর মালিক। শুধু তাই নয় বাংলাদেশে বেসরকারি দুটি হাইটেক পার্ক আছে একটি হলো ওয়ালটন হাইটেক পার্ক আরেকটি কুমিল্লার হালিমা হাইটেক পার্ক।

কুমিল্লার এক তরুণের জীবন বদলের গল্প। কঠোর পরিশ্রম আর চেষ্টা তাকে পৌঁছে দিয়েছে সফলতার চরম উচ্চতায়। তার নাম আবুল কালাম হাসান টগর। এক দশক এর বেশি সময় ধরে তার হালিমা টেলিকম কোম্পানি দেশে মোবাইল ফোন সেট ও মোবাইল এক্সেসরিজ উৎপাদনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হালিমা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হালিমা টেলিকম যেসকল পণ্য তৈরি করে তার মধ্যে অন্যতম বার ফোন ও এ্যান্ড্রয়েড ফোন, ফোনের সবধরনের চার্জার, বিভিন্ন মডেলের মোবাইলের ব্যাটারি, পাওয়ার ব্যাংক,ডাটা ক্যাবল। এসব পণ্যের গুণগতমানের ক্ষেত্রে তারা আপোসহীন। হালিমা টেলিকমের এসব পণ্য তৈরি হচ্ছে কুমিল্লা আদর্শ সদরের চাঁন্দপুর এলাকার ৭ তলা বিশিষ্ট হালিমা হাইটেক পার্কের নিজস্ব ভবনে ।

সরেজমিনে হালিমা হাইটেক পার্ক ভবনে যেয়ে জানা যায়, কারখানা ও মার্কেটিং বিভাগসহ তাদের এখানে কাজ করেন ১ হাজর ৭০০ শত এর বেশি শ্রমিক। যাদের মধ্যে ৯৫ ভাগই নারী শ্রমিক। নারী শ্রমিকদের কিছুসংখ্যক শিক্ষিত হলেও অধিকাংশই শিক্ষিত নয় । সেই নারীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে শিখিয়ে হালিমা কোম্পানি তাদের স্বাবলম্বী করেছেন দূর করেছে বেকারত্ব। জানা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কৈয়নীতে আবুল হাসান টগরদের পৈতৃক বাড়ি। বাবা মো. সিরাজুল হক বাড়ি করেন নগরীর মোগলটুলীতে। তারা তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি মেঝ। টগরের বাবা ছিলেন একজন ঠিকাদার। তার সন্তানরা যখন ছোট তখন তিনি মারা যান। টগরের বয়স তখন পাঁচ বছর। তাদের মোটামুটি সচ্ছল পরিবারে নেমে আসে অসচ্ছলতার ঘোর অন্ধকারের কালো মেঘ। ১৯৯৮ সালে টগর ২০ ঊর্ধ্ব তরুণ। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজ নেন সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলের হোটেলবয় হিসেবে। সেখানে জমানো ৩ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় তিনি বিভিন্ন দোকানে গিয়ে একটি ফোন কোম্পানির কার্ড বিক্রি করতে শুরু করেন। সেখানে পরিচয় হয় ওই কোম্পানির এক কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি তাকে কুমিল্লা ফিরে গিয়ে কোম্পানির সাব-ডিলার নিতে বলেন। টগর স্বজনদের থেকে কিছু টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। সাইকেল চালিয়ে শহরের অলিগলির দোকানে দোকানে পণ্য পৌঁছে দিতেন। ওই সময় অন্য ব্যবসায়ীরা তার থেকে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতেন। আর তিনি অল্প লাভে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতেন। এতে তার প্রতি মানুষের আস্থা বেড়ে যাওয়ার কারণে তিনি ওই কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর হন। একসময় ফোনে ব্যাবহৃত সিম কার্ড ব্যবসা করতে যেয়ে দেখলেন ফোন ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ এনে দেওয়ার দাবি জানান তার কাছে। টগর ঢাকা থেকে মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ এনে তাদের দিতে থাকেন। এক সময় তার মাথায় চিন্তা আসে বড় কিছু করার। সে লক্ষ্যে ২০১০ সালেে চীনে যেয়ে সেখানে মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি এখন সফল উদ্যোক্তা ।

কুমিল্লার গন্ডি পেড়িয়ে হালিমার মোবাইল ফোন সেট ও এক্সেসরিজ পণ্য এখন দেশের  সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে। কোম্পানিটি তার মা হালিমা বেগমের নামে গড়ে তুলেছেন। আবুল কালাম হাসান টগর একজন সফল উদ্যোগতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। গড়ে তুলেছেন হালিমা হাইটেক পার্ক।

হালিমা হাইটেক পার্ক এর কর্ণধার আবুল হাসান টগর বলেন, এখানে ৯৫ ভাগই নারী শ্রমিক। একসময় তারা বাসা বাড়িতে কাজ করতাে। তাদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানকার নারী শ্রমিকরা সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে। এ এলাকার এমনও বাড়ি আছে যে এক বাড়িতে তিনজন নারী শ্রমিক কাজ করেন। টগর আরো বলেন, আমার ঢাকাায় ফ্যাক্টটরি থাকা সত্বেও আমি কুমিল্লাাকে প্রমোট করতে চাই। গোমতী নদীর ওপারে মাঝিগাছা এলাকায় আরো একটি এন্ড্ররোয়েড ফোন  তৈরির কারখানা রয়েছে। দেশের দুটি হাইটেক পার্ক এর মধ্যে শুধুমাত্র কুমিল্লার হালিমা হাইটেক পার্ক ভবনে শতভাগ হ্যান্ডসেট ও এক্সেসরিজ ম্যানুফ্যাকচারিং হয়। আমার স্টাফদের আমি একটি পরিবারের মত দেখাশোনা করি বিধায় এখানে তারা চাকরী ছেড়ে যেতে চায় না। প্রায় বেশির ভাগ স্টাফ ১০ / ১২ বছর ধরে চাকরি করছেন।

মোবাইল ট্যাকনেশিয়ান রতনা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি এ কোম্পানিতে ১০ বছর যাবত চাকরি করছি। এখানকার চেয়ারম্যান স্যার আমাদের স্টাফদের বেতনের বাইরে আমাদের কোন অসুখ হলে চিকিৎসা ,বাচ্চদের লেখা পড়ার খরচ যাবতীয় বিপদে সাহায্য করে থাকেন।

প্যাকেজিং বিভাগের ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আমরা যারা এখানে কাজ করি তাদের বিয়ের খরচের টাকা এবং যাদের বাচ্চা হবে তাদেরকেও চেয়ারম্যান স্যার সহযোগিতা করেন।

নারী নেত্রী দিলনাশি মোহসেন বলেন, কুমিল্লার চাঁনপুর এলাকায় নারীদের এমন প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে তাদের আত্মকর্মস্থান করে তাদের বেকারত্ব দূর করে স্বাবলম্বী করা হালিমা গ্রুপ একটি অনন্য উদাহরণ। এখন আর নারীরাও পিছিয়ে নেই।

শুক্রবার( ৬ জানুয়ারী) কুমিল্লার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, হালিমা টেলিকম হাইটেক পার্কের নাম শুনেছি। ওদের কর্মকান্ড সম্পর্কে জেনেছি যে ওরা ভাল  কাজ করে। ওদের এখানে অনেক শ্রমিক কর্মরত আছে। এসকল কর্মকান্ডে জেলা প্রশাসন থেকে যা প্রমোট করা লাগে জেলা প্রশাসন তা করবে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD