দেবীদ্বার প্রতিনিধি :
কুমিল্লার দেবীদ্বারে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের ছেপাড়া গ্রামে।
বুধবার (৮অক্টোবর) দুুপুরে সকাল থেকে পান্নারপুল থেকে মাধাইয়া সড়কের পাশে থাকা পাঁচটি বিশাল সাইজের কড়ই গাছ কেটে নেন বিএনপি একটি চক্র। খবর পেয়ে দুুপুরে ১২টার দিকে 8ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তারা গিয়ে গাছ কাটতে নিষেধ করে আসেন। ততক্ষণে বেশ কয়েকটি গাছ কেটে ট্রাকে তোলে নিয়ে যায়। অভিযুক্ত বিএনপির নেতারা হলেন, ছেপাড়া গ্রামের যুবদল নেতা আসলাম, সোহেল, ইদ্রিস, উনঝুটি গ্রামের মো. হোসেন ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক ব্যক্তিও জড়িত বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, পান্নারপুল থেকে মাধাইয়া বাজার পর্যন্ত সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রাস্তার পাশে থাকা ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কাটার জন্য মাইকিং করা হয়। সেই সুযোগেই একটি চক্র সরকারি গাছগুলো নিজেদের মালিকানা দেখিয়ে মুরাদনগরের লোকের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত গাছ কাটা চলে নির্বিঘ্নে। এদিকে গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে কুড়াল, করাত, দা, রশি ফেলে পালিয়ে যায় গাছকাটার শ্রমিকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এ গুলো ৫০/৬০ বছরের পুরানো গাছ। হঠাৎ করেই কয়েকদিন আগে থেকে কিছু লোক রাস্তার কাজের জন্য গাছগুলো কাটতে হবে বলে কাটা শুরু করেছে। তারা ইতিমধ্যে ৪/৫টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে। আমরা জিজ্ঞাসা করেছি কারা এ গাছগুলো কাটতে বলেছে গাছকাটা শ্রমিকরা কারও নাম বলেনি। গাছগুলো প্রতিটির বাজার মূল্য প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। গাছগুলো নিজেদের দাবি করে কাটা শুরু করেছেন তাঁরা।
গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় যুবদল নেতা মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে গাছ কাটার জন্য মাইকিং করায় আমরা গাছ কাটছি তবে এগুলো যে সরকারি গাছ আমরা জানতাম না। আমাদের ভুল হয়ে গেছে, পরে তিনি এ প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান।
দেবিদ্বার উপজেলা বনবিভাগের কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, উপজেলা নির্বাহী স্যার আমাকে কল করেছেন, আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। আগামীকাল উপজেলা ভূমি অফিস থেকে সার্ভেয়ার এসে সরকারি সম্পত্তি কিনা মাপা হবে।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আপনি বলার পর পর আমার লোক পাঠিয়েছি। শুনেছি গাছগুলো একটি চক্র কেটেছে। ঠিকাদারের মধ্যে কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমরা মূলত ব্যক্তিমালিকানা গাছ কাটার জন্য বলেছি। সরকারি গাছ কাটতেও বলেনি। আমি কাছ কাটার পক্ষে না। গাছের কারণে রাস্তা না হলে আমরা সরকারিভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ কাটতে বলি। যে চক্রটি এ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায়।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমি বনবিভাগের কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন নায়েবকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। যদি সরকারি সম্পত্তির গাছ হয় তাহলে যারা কাটছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি।