গাজী জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ঢাকা থেকে
.
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রাঙ্গণ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণ থেকে মাজার স্থানান্তর ও বহুতল মসজিদ নির্মাণ পুনর্বিবেচনার জন্য জনৈক আইনজীবী কর্তৃক আবেদনের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।
আজ শনিবার বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন ও মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা স.উ.ম আবদুস সামাদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, নিরাপত্তার অযুহাতে হাইকোর্ট মাজার শরীফ ও মসজিদ সরানোর আবেদন করা সরাসরি ইসলাম অবমাননার শামিল। বাংলার জনগণ তা কখনও মেনে নেবে না, দেশবাসী এ ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। নিরাপত্তার প্রয়োজনে মাজার প্রাঙ্গণ থেকে হাইকোর্ট-সুপ্রীমকোর্ট অন্যত্র সরিয়ে নিন। ঢাকা যখন ঢাকা হয়নি, তখনও এ মাজার শরীফ ছিল।
হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার ৬০৭ বছর পূর্বে ওলী-এ-বাংলা হযরত শাহ্ খাজা শরফুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহির মাজার শরীফ প্রতিষ্ঠা হয়। ওলী-এ-বাংলা ৭৩৮ হিজরী মোতাবেক ১৩৪০ ইংরেজি ওফাত লাভ করেন, আর ঢাকা হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৭ সালে। হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাইকোর্ট মাজার শরীফ হিসাবে খ্যাত হয়। ভুলে গেলে চলবে না, এদেশে পবিত্র ইসলাম ধর্ম এসেছে পীর-আউলিয়াদের মাধ্যমে। বর্তমানে সেই ইসলাম প্রচারক মহান পীর আউলিয়াদের মাজার ধ্বংসের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে উগ্রবাদি ধর্মান্ধ সন্ত্রাসী, জঙ্গি গোষ্ঠী। আমরা তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আল্লাহর অলিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এ বাংলায় কখনও শান্তি স্থাপিত হবে না। ২৪’র গণ আন্দোলন পরবর্তী ১০০টির অধিক মাজার-খানকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও হামলা হয়েছে। এতদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সুফিবাদী ও অহিংস হওয়ার কারণে এসব মব-সন্ত্রাস ও সহিংসতা করে পার পেয়েছে। সুন্নীদের ধৈর্য্যের আর পরীক্ষা নেবেন না। সুন্নী জনগোষ্ঠির ধর্মীয় অনুভূতিতে বারবার আঘাত করলে সুন্নীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়তে শুরু করলে সন্ত্রাসীরা আর কোন ছাড় পাবে না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, খাজা গরীবে নওয়াজ হযরত খাজা মঈনুদ্দিন হাসান চিশতী (রহ.)-এর ২য় পুত্র হযরত খাজা হুসাম উদ্দিন আবু সালেহ চিশতী প্রকাশ ওলী-এ-বাংলা হযরত শাহ্ খাজা শরফুদ্দিন চিশতী (রহ.)। যিনি বঙ্গদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য হযরত শাহ জালাল ইয়েমেনী (রহ.) এর সফর সঙ্গী হয়ে ৩৬০ আউলিয়ার সাথে এ দেশে আসেন। যার বদৌলতে বর্তমান ঢাকা ও আশেপাশে ইসলাম প্রচার হয়। সেই আল্লাহর অলির মাজার শরীফ ও সংলগ্ন মসজিদ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা কাম্য নয়। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি দাবি জানিয়ে বলতে চাই, দেশে অযথা নৈরাজ্য সৃষ্টি করবেন না। আল্লাহর অলিদের মাজার শরীফ নিয়ে বেয়াদবি দেশের জনগণ বরদাশত করবে না।