নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি:
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে গরু ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার বিকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী শিশু-সহ ২০জন আহত হয়েছে। এসময় সন্ত্রাসীরা আলিয়ারা গ্রামের জাফর আহাম্মদ, একই গ্রামের আলাউদ্দিন, আব্দুল মান্নান, পেয়ার আহম্মদ, খায়ের আহম্মদ, অহিদুর রহমান, সোহাগ মিয়া, কামরুজ্জামানসহ মোট ১০ জনের বসত ঘর, টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্র ভাংচুর, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ওই ১০ পরিবারের আনুমানিক ত্রিশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় রবিবার আলিয়ারা গ্রামের শাহ আলম ভূঁইয়া বাদি হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন আলিয়ারা গ্রামের শেখ ফরিদ (৪৫), রিয়াজ (৩২), নুর উদ্দিন (৩৫), সজিব (২২), শেখ ফরিদ (৪০), ফখরুল ইসলাম (৩০), সাকিব (২৫), আব্দুল মান্নান মুন্না (৩৫), তারেকুল ইসলাম (২৬), সাখাওয়াত (৩২), শেখ ফরিদ (৩৭) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১২ জন। এছাড়াও এ ঘটনায় নাঙ্গলকোট থানায় আরো ৩টি মামলা করে ভূক্তভোগীরা। পরে পুলিশ ঘটনায় অভিযুক্ত আলিয়ারা গ্রামের মুন্না, এ ঘটনার অপর একটি মামলার প্রধান অভিযুক্ত একই গ্রামের কাউসার আক্তার রিংকু ও শাফা বেগমকে আটক করে সোমবার আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লার কারাগারে প্রেরণ করে।
ভূক্তভোগী ও মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩জুন সোমবার দুপুরে বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা ওয়ার্ড সাবেক মেম্বার খায়ের আহম্মদের গরু রশি ছিঁড়ে ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে গরুটিকে মারপিট করে প্রতিপক্ষ। এঘটনায় খায়ের মেম্বার প্রতিবাদ করায় পার্শ্ববর্তী বাড়ীর শেখ ফরিদ, আশ্রাফুল, জনি, শহীদ, সজিব, রিয়াদ একত্রিত হয়ে মেম্বার খায়ের আহম্মদের উপর হামলা চালায়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের উত্তেজনা নিরসন করার উদ্যোগ গ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে ২৫ জুন বুধবার বিকালে খায়ের মেম্বারের চাচাতো ভাই একই গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী নূর মোহাম্মদের উপর হামলা চালায় অভিযুক্তরা। সর্বশেষ রবিবার সকালে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত মুন্নাকে পুলিশ গ্রেফতার করলে এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে একই দিন বিকালে মামলার বাদি, সাক্ষী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায় অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় সোমবার সকালে জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা চেয়ে সেনা বাহিনীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূক্তভোগীরা। পরে সোমবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নাঙ্গলকোটে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী অফিসার ও সদস্যগণ।
যৌথ বাহিনীর অভিযান করার পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে অভিযুক্তদের বাড়িঘর পুরুষ শূন্য হওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ এ কে ফজলুল হক বলেন, হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে অবহিত হয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে পরিস্থিতি শান্ত করে। অভিযুক্তদের মধ্য থেকে ৩জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।