মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
কাকডাকা ভোরে শুরু হয় কৃষকদের ব্যস্ততা। কৃষকদের পদ শব্দেই যেন মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠ। দিনব্যাপী চলে এ ব্যস্ততা। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার প্রতিটি গ্রামেও কৃষকরা এখন এ রকমই ব্যস্ত সময় পার করছেন। একদিকে সোনালি আউশ ধান কেটে ঘরে তোলা অন্যদিকে আমন ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত, বীজতলা থেকে চারা তোলা ও রোপণ করা। সময়ের কাজ যথাসময়ে শেষ করতে মহাব্যস্ততায় দিন পার করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, একদল কৃষক আউশের সোনালি পাকাধান কেটে ঘরে তুলছেন। ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করে আমন ধান আবাদের জন্য কেউ কেউ জমি প্রস্তুত করছেন। কোথাও আবার রোপা-আমন ধানের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত কৃষক। কেই কেউ আগাম আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত। মাঠজুড়ে এক মনোরম পরিবেশ। তবে এ বছর আমন ধান চাষের জন্য আবহাওয়া এখনও অনুকূলে নেই বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এ উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ৫ হাজার ৪ শত ২৯ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে লক্ষ্যমাত্রা অনায়াসেই অর্জিত হবে বলেও আশা করছেন কৃষি বিভাগ। তবে এ বছর যথাসময়ে বীজতলা তৈরি করতে পারেনি অনেক কৃষক। এ বছর আমনের বীজ তলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২৮২ হেক্টর। যার ফলে জমি আবাদে ধানের চারার কিছুটা সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ধানের চারা সংগ্রহের পরিকল্পনাও রেখেছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
কৃষকরা জানান, জমিতে বৃষ্টির পানি জমা থাকার কারণে তারা শুধু হালচাষের টাকা ও শ্রমিক মজুরি দিয়েই তাদের জমি রোপণ করতে পারছেন। আগাম আমন ধানের চারা রোপণে জমিতে পানির তেমন স্বল্পতা নেই।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাইঘর এলাকার কৃষক সোলেমান মিয়া জানান, এ বছর ৩০ শতক জমি আমন ধানের চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করেছি। ধানের চারাও বেড়ে উঠছে। খুব শিগগিরই চারা রোপণের উপযোগী হয়ে উঠবে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যেই আমনের চারা রোপণ করতে পারব।
উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের নাগাইশ এলাকার কৃষক মতি মিয়া বলেন, আউশধান কাটা ও ঘরে তোলার পাশাপাশি আমন ধানের চারা রোপণ করতে জমি প্রস্তুত করার কাজও করছি। আমাদের এখন খুব ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুবুল আলম বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকার কারণে বীজতলায় আমাদের কিছুটা ঘাটতি আছে। আশা করছি, দ্রুত আবহাওয়া আমন চাষের উপযোগী হয়ে উঠবে। বীজ তলার ঘাটতি পূরণেও আগাম পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছি। সব সংকট কাটিয়ে আশা করছি, আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হব।