1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
চৌদ্দগ্রামে গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগ - Dainik Cumilla
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
আমার পরিচয়ে কেউ তদবির-চাঁদাবাজি করলে আইনি ব্যবস্থা নিন: আবু রায়হান দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত আধুনিক দেশ গড়তে যোগ্য ও সৎ মানুষের বিকল্প নেই…ডক্টর এডভোকেট মোবারক হোসাইন ব্রাহ্মণপাড়ার সালদানদী বিজিবির অভিযানে দুই ভারতীয় নাগরিক আটক ব্রাহ্মণপাড়ায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন মালিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা, ৬শ ফোট পাইপ বিনষ্ট কুমিল্লায় বিজিবির অভিযানে ২৭ লাখ টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ কুমিল্লায় ১২ মামলার আসামি ইয়বাসহ গ্রেফতার ব্রাহ্মণপাড়ায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল পাচ্ছে প্রায় ৩৭ হাজার শিশু চৌদ্দগ্রামে পরিবারের সাথে অভিমানে বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা দাউদকান্দিতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক অটোরিকশাচালক নিহত আসন্ন ঈদকে ঘিরে কুমিল্লার দর্জিদের মাঝে নেই আগের মতো ব্যস্ততা

চৌদ্দগ্রামে গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগ

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ৮৮ বার পঠিত

 

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাকসুদা আক্তার মাহি (২১) নামে এক গৃহবধূকে নৃশংসভাবে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী সহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের উজানমুড়ি গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি মাকুসদা নিজে বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের তুলাপুষ্করণী গ্রামের মহরম আলীর মেয়ে ভুক্তভোগি মাকসুদার সাথে একই ইউনিয়নের উজানমুড়ি গ্রামের হানিফ মিয়ার ছোট ছেলে মো: মাহফুজ (২৪) এর সাথে সামাজিকভাবে শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারজীবন ভালোই চলছিলো। বিয়ের তিন মাস পর মাকসুদার স্বামী মাহফুজ প্রবাসে চলে যায়। চার মাস পর সে পুনরায় দেশে চলে আসে। দেশে আসার পর মাহফুজ মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং নিয়মিত নেশাদ্রব্য সেবন করতে থাকে। এতে মাকসুদার উপর নেমে আসে নানা রকম নির্যাতনের স্টীম রোলার। নেশার টাকা জোগাড় করতে না পারায় মাকসুদার উপর স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের মাত্রা প্রতিদিনই বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মাহফুজ তার স্ত্রী মাকসুদাকে বাবার বাড়ী থেকে মোটা অঙ্কের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে সে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর নেমে আসে আরো চরম নির্যাতন। নৃশংস নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মাকসুদা। নির্যাতনের নৃশংসতা জাহেলী যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।

কান্নাজড়িত কন্ঠে ভুক্তভোগি গৃহবধূ মাকসুদা সাংবাদিকদের জানান, বিয়ের পরে তিনমাস ভালোই কাটছিলো আমাদের সংসার। তিন মাস পরে আমার স্বামী বিদেশে চলে যায়। এর চার মাস পরে সে আবার দেশে চলে আসে। দেশে আসার পর মাদক সহ বিভিন্ন নেশায় জড়িয়ে পড়ে সে। বন্ধুদের নিয়ে বাসায় নেশার আড্ডা জমিয়ে তোলে সে। নেশা করে প্রতিদিন আমাকে মারধর করা সহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রাখে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে বসে সমাধান হওয়ায় পুনরায় সংসার জীবন-যাপন শুরু করি। নেশার টাকার জন্য সে আমাকে প্রচন্ড মারধর করে এবং মুখে তালাক দিয়ে দেয়। এ ব্যাপারে তার পরিবার কোনো সুরাহা না করায় আমি বাবার বাড়ি চলে যাই। বিগত আড়াই মাস পূর্বে আমাকে সে আমার বাবার বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক তুলে নিয়ে তার খালার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে সে আমাকে জোরপূর্বক আবার বিয়ে করেন এবং বিভিন্ন কাগজপত্রে সই-স্বাক্ষর নেন। পরে বিষয়নি নিয়ে আমার পরিবার থানায় অভিযোগ ও আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ঘরে বন্দী করে আমার উপর বিভিন্ন অমানবিক নির্যাতন শুরু করে। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই দুপুরে সে আমাকে ঘরের ভেতর খাটের সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে আমার হাত-পা, তলপেট সহ সমস্ত শরীরে জলন্ত সিগারেটের চেকা দেয়। এছাড়া আমার হাতের বিভিন্ন স্থানে বেøড দিয়ে কাটাছেড়া ও রক্তাক্ত জখম করে। ওইদিন দুপুরে তারা স্বপরিবারে গ্রামের একটি বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে আমি অনেক প্রচেষ্টার পর শিকল ভেঙ্গে পালিয়ে গিয়ে তাদের ওয়ার্ড মেম্বার এর নিকট আশ্রয় নেই। মেম্বার সাহেব আমার পরিবারকে খবর দিলে পরিবারের লোকজন এসে আমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করে। আমি তার এ নৃশংস ও বর্বর নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ সময় তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহফুজ ও তার মায়ের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল দিলে তারা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কলটি কেটে দেওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ঘোলপাশা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: বেলাল হোসেন বলেন, ‘মেয়েটি শিকলবন্দী অবস্থায় রক্তাক্ত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়ার ক্ষত নিয়ে আমার কাছে আসে। আমি তার পরিবারকে খবর দিয়ে তাকে চিকিৎসা ও আইনের আশ্রয় নিতে বলি।’

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মো: ওসমান গণি বলেন, ‘ভুক্তভোগি কর্তৃক অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। শীঘ্রই দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD