নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টায় কুমিল্লা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন।
মেয়র পদে চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবং তাদের মনোনয়ন বৈধতা পেয়েছে। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. তাহসিন বাহার সূচনা বাস প্রতীক পেয়েছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য নূর উর রহমান মাহমুদ তামিম চেয়েছেন হাতি প্রতীক। বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন টেবিল ঘড়ি এবং বহিষ্কৃত আরেক বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীক।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা তাদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চালাতে পারবেন। আজ থেকেই প্রার্থীদের আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে প্রতি তিন ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা। এছাড়া সভা উঠান বৈঠক করতে অবশ্যই পুলিশকে জানাতে হবে। মাইক ব্যবহারে অনুমতি নিতে হবে। কোনোভাবেই এসএসসি পরীক্ষা ব্যহত হয় এমন কোন প্রচারণা করা যাবে না।
আগামী ৯ মার্চ এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ১০৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতীক বরাদ্দ সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও জানান, দুপুর ২টা থেকে প্রতি ওয়ার্ডে একটি মাইক ব্যবহার করা যাবে, কোথাও কোনো খাবার ও পানীয় বিতরণের সুযোগ নেই, উঠান বৈঠক পথসভা অবশ্যই পুলিশকে জানাতে হবে, প্রচারণায় সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা কর্মচারিদের ব্যবহার করা যাবে না এবং মনিটরিং কমিটিতে প্রার্থীদের প্রতিনিধি থাকবে।
দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে মেয়র পদের উপনির্বাচনে কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ‘কেন্দ্রে ভোটারদের টানতে এবং দলীয় বিভেদ দূর করতে’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে উপনির্বাচনে কাউকে দলীয় প্রতীক দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেয়র প্রার্থী ডা. তাহসীন বাহার সূচনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, কুমিল্লার মানুষ আমাকে নগরকন্যা হওয়ার সুযোগ দেবেন। আমার বাবা সারা জীবন কুমিল্লার মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, কুমিল্লা সিটির মানুষ বাবার মতোই আমাকে আপন করে নেবেন; আমাকে তাঁদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আমি নির্বাচিত হয়ে স্মার্ট কুমিল্লা গড়ার স্বপ্ন দেখি।’
মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মেয়র প্রার্থী নুর-উর রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, ‘কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়। এ জন্য মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে। আমি ৪০ বছর ধরে কুমিল্লার মানুষের জন্য রাজনীতি করি। রাজনীতি করতে গিয়ে বারবার হামলা-মামলার পাশাপাশি অসংখ্যবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। তবে কুমিল্লার মানুষ সব সময় আমার পাশে ছিল। ইনশাআল্লাহ এবারও কুমিল্লার মানুষ আমার পাশে থাকবে।’তানিম বলেন, “কুমিল্লা দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্বে সংকট রয়েছে। আগামীর কুমিল্লাকে সাজাতে নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। ইনশা-আল্লাহ এবার জনগণের ভোটে আমি বিজয়ী হব।”
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘দুইবার সিটি মেয়র ছিলাম। আমার অসম্পূর্ণ কাজগুলো শেষ করার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, কুমিল্লা নগরবাসী আমাকে আবারও তাঁদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। ইনশা-আল্লাহ এবার জনগণের ভোটে আমি বিজয়ী হব।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়, দানবীয় শাসনের অবসান চায়। তবে সেই পরিবর্তন কোনো সাবেক দিয়ে নয় এবং ক্ষমতাসীন দলের কাউকে দিয়ে নয়। কুমিল্লার মানুষ আমাকে তাঁদের সেবক হিসেবে দেখতে চান।অযথা কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না। জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। ইনশা-আল্লাহ জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।