শফিউল আলম রাজীব:
গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে প্রকৃতি যখন নিষ্প্রাণ। ঠিক তখনি সবুজ পাতার ডগায় টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিতে যেন প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে। এই ফুল নাগরিক জীবনে এনে দিয়েছে এক ভিন্ন আমেজ।
কুমিল্লার দেবীদ্বারেও চোখ ধাঁধানো টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে ফুলে সেজেছে গ্রীস্মের প্রকৃতি। কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার অংশে চলার পথে ক্ষণে ক্ষণে দেখা মিলে এ ফুলের। এছাড়াও গ্রামবাংলার পথে প্রান্তরে ফুটেছে রক্ত রাঙা কৃষ্ণচূড়া, এক পলক দেখেই যেন মন জুড়িয়ে যায়।
দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রোদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি; সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। গ্রীস্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। পথচারীরা অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে উপভোগ করেন এই স্বর্গীয় সৌন্দর্য। প্রকৃতির এই রূপ নিসর্গপ্রেমীদের দারুণভাবে মোহিত করছে। বাহারি এ ফুলের আগুন লাগানো সৌন্দর্য প্রকৃতিতে এনেছে উচ্ছলতা। কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি পথিকের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়।
তাইতো কবিদের কবিতা ও বিভিন্ন গীতিকারের জনপ্রিয় গানে নানাভাবে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার প্রতি আবেগঘন ভালোবাসা ও তার রুপ দর্শনে প্রতীক্ষার কাঙ্খিত বাস্তব চিত্র।
দেবীদ্বার উপজেলার একেকটি এলাকা এখন কৃষ্ণচূড়ার রঙে আচ্ছাদিত। রবিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা সদরের মহিলা কলেজ রোড, থানা সংলগ্ন সাব রেজিস্ট্রি অফিস, ফুলগাছতলা, গুনাইঘর শিশু পরিবার ও পান্নারপুল সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৈশাখে কৃষ্ণচূড়া তার লাল আবির নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হয় কৃষ্ণচূড়া তার সমস্ত রং প্রকৃতির মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে। লাল রঙে আচ্ছাদিত এই কৃষ্ণচূড়া গাছের দিকে তাকালেই তার মুগ্ধতায় যে কারোর মন ভরে উঠবে। দৃষ্টিতে হারিয়ে যাবে অজানা কোন এক স্বর্গরাজ্যে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, ভারত ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে থাকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৃষ্ণচূড়া শুধুমাত্র দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্লোরিডা ও টেক্সাসের নিউ গ্র্যান্ড উপত্যকায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সাধারণত মার্চের শেষ সপ্তাহে এ ফুল ফোটে। এপ্রিল থেকে জুলাই মাসজুড়ে এ ফুলের শোভা দেখা যায়।