মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তিন সন্তানসহ স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন শ্যামল ও সোনালী দেবী দম্পতি। গত বৃহস্পতিবার রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা সাইয়্যেদ রাশীদুল হাসান জাহাঙ্গীর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাওহীদের কালেমা বাক্য পাঠ করান। এর আগে গত মঙ্গলবার কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ইয়াসমিনের আদালতে ধর্ম পরিবর্তন সংক্রান্ত হলফনামা করেন তারা। বর্তমানে শ্যামলের নাম মো. আবিদ উল্লাহ, সোনালী দেবীর নাম আরোহী জান্নাত, বড় মেয়ে মনিষার নাম তাসনিম জান্নাত, ছোট মেয়ে তিশার নাম আরিশা জান্নাত এবং একমাত্র ছেলে আয়ুষ্মানের পরিবর্তীত নাম মোহাম্মদ আনাস রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল-সোনালী দম্পতি প্রায় ১০ বছর যাবৎ চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ জামে মসজিদ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন। বাসার পাশেই রয়েছে শ্যামলের একটি সেলুন দোকান। ৯ বছর আগে তাদের দাম্পত্য জীবনে মেয়ে মনিষা জন্মগ্রহণ করে। মনিষার বয়স ৩-৪ বছর বয়স হলে সে পাশের মক্তব, মসজিদ, মাদরাসা ও কিন্ডার গার্টেনে পড়ুয়া ছোট ছেলে-মেয়েদের সাথে মিশে খেলাধুলা করে। একপর্যায়ে ওই শিশুদের কাছে শুনতে শুনতে মনিষার কালেমাসহ কয়েকটি সূরা মুখস্ত হয়ে যায়। মনিষা প্রায় প্রতিদিনই বাসায় তার পিতা শ্যামল ও মা সোনালীকে পবিত্র কুরআনের সূরা পড়ে শোনায়। এতে শ্যামল-সোনালী দম্পতি ধীরে ধীরে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়। গত দুই বছর আগে শ্যামল তার সেলুন দোকানের কাস্টমার এলাকার কয়েকজন তরুণ ব্যবসায়ীর সাথে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে। তারা শ্যামলকে আরও বুঝতে কিছুটা সময় দেয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার কুমিল্লার আদালতে গিয়ে শ্যামল-সোনালী দম্পতি সনাতনী হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তাকে আনুষ্ঠিানিকভাবে কালেমা পড়িয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তাদের সকলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে তিন সন্তানসহ কালেমা পাঠের মাধ্যমে শরীয়াহ মোতাবেক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তারা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মো. আকতারুজ্জামান, এমরান হোসেন বাপ্পি, তরুণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বেলাল হোসেন ইয়াছিন, মো. আরিফুর রহমান, মো. মাহফুজুর রহমান, মো. ইলিয়াছসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
শুক্রবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে মো. আবিদ উল্লাহ বলেন, ‘ছোট শিশুদের সাথে চলাফেরা করার সময় আল্লাহর রহমতে আমার বড় মেয়ে কুরআনের কয়েকটি সূরা মুখস্ত করে। মেয়ের মুখে কুরআনের তেলাওয়াত শুনে হৃদয়ে অন্যরকম অনুভ‚তি উপলব্ধি হয়। সেজন্য স্বপরিবারে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছি। আমি যেন বাকী জীবনে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায় করতে পারি, সেজন্য সকলের দোয়া কামনা করছি’।