বরুড়া প্রতিনিধি:
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা ইউনিয়নে সরকারি খাল দখল করে পথ, দোকানপাট ও বসতবাড়ি নির্মাণের অভিযোগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) পরিদর্শনে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান হাফিজ। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দখলের সত্যতা পান এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
এসময় তিনি বলেন, সরকারি খালের জায়গা উন্মুক্ত করতে হবে। যদি কেউ সরকারি খালকে নিজের জায়গা মনে করে পথ বা স্থাপনা তৈরি করে থাকেন,তাহলে দ্রুত কাগজপত্রসহ আড্ডা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করবেন।অন্যথায় প্রশাসন বাধ্য হয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আড্ডা ইউনিয়নের বাগমারা বাজারের বড়পুল থেকে শুরু হওয়া খালের একটি শাখা গোবিন্দপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে দখল হয়ে গেছে।খালের উপর নির্মিত হয়েছে দোকানপাট,বাড়িঘর, রাস্তা ও অন্যান্য স্থাপনা। অভিযোগ রয়েছে,স্থানীয় প্রভাবশালী মহল খাল ভরাট করে ব্যক্তিস্বার্থে দখলে নিয়েছে।এর ফলে ওই এলাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়, ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো মানুষ। স্থানীয় মহিলা কলেজ ও আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ,খালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ব্যাহত হওয়ায় ফসলি জমি দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকে। এতে চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি জানান,আমি প্রথম এই এলাকায় ঘর বানিয়েছি। তখন কোনো বাড়িঘর ছিল না, শুধু খাল ছিল। এখন পুরো খালটাই দখলে চলে গেছে। বহু বছর আগে প্রশাসন উদ্ধার অভিযান চালাতে এসেছিল, কিন্তু কাজ না করেই চলে যায়।
স্থানীয় নারীদের অভিযোগ, গরিব মানুষের কথা কেউ শোনে না। যাদের অর্থবিত্ত আছে তারাই সরকারি খাল দখল করে দোকান ও ঘর তুলেছে। তারা দাবি করেন, প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিলে বহু গ্রাম জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
অন্যদিকে দখলদারদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা নিজেদের জায়গাতেই দোকান নির্মাণ করেছেন এবং খালে পানি যাওয়ার পথ রেখেই ভরাট করেছেন।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান হাফিজ জানান, সরকারি সম্পত্তি দখল করে কেউ পার পাবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জায়গা খালি না করলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।