কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের ওপর সম্প্রতি ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কুমিল্লার জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে পৃথক দুটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে মিছিল সহকারে তারা পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও যান এবং উভয় দপ্তরে চার দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো—টাউন হলে একটি নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড বরাদ্দ, অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা, অন্ধকার এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন এবং সকল পরিবহন চালকদের লাইসেন্সের আওতায় এনে নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট চালু করা।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, ুবর্তমানে কুমিল্লা শহর ও আশপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির অভাবে এসব ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতেই আমরা আজ স্মারকলিপি দিয়েছি।”
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক আল নাহিয়ান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ুআমরা আর চুপ করে থাকব না। প্রশাসন যদি আমাদের দাবির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়ব না।”
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, ুশিক্ষার্থীদের দাবি যুক্তিসঙ্গত। আমরা ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রবণ এলাকাগুলোতে পুলিশি টহল জোরদার করব। ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন দায়বদ্ধ।”
অন্যদিকে জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, ুআমি কোনো স্মারকলিপি হাতে পাইনি। শিক্ষার্থীরা যখন এসেছিল তখন আমি অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলাম, সময়টা ছিল সন্ধ্যা ৭টার মতো। আমি তাদের আগামীকাল এসে স্মারকলিপি দিতে বলেছি।”
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, ুপুলিশ সুপারের সঙ্গে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করেছি। তিনি এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে এই সময়ের মধ্যেই কুমিল্লা শহর থেকে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের উৎখাত করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।”
উল্লেখ্য, এর আগে ৯ জুলাই গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিম আহমেদ কুমিল্লা শহরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন এবং ১২ জুলাই নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরবিন্দু সরকার ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে এবং প্রশাসনের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়।