মো. ওমর ফারুক মুন্সী :
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ব্রীজের নিচে থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার বিকালে মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ থেকে র্যাব ও পুলিশ পৃথক দুটি অভিযান তাদের গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় পুলিশ ফারজানা বাস ও হত্যায় ব্যবহৃত লোহা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
গ্রেপ্তারকৃত হলেন, মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে ফারজানা পরিহনের বাসচালক মো. মহিউদ্দিন (৩৫) তার সহযোগী বাসের হেলপার একই উপজেলার কুলুবাড়ী গ্রামের মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে মো. সাত্তার (৫৫)।
পুলিশ বলছে, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় ওই নারীকে হত্যার পর তার হাত পা-বেঁধে ইউসুফপুর এলাকার একটি ব্রীজের নিচে ফেলে দেয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাথে ওই নারী অবৈধ সম্পর্ক ছিল। আসামীরা প্রাথমিক জবানবন্দীতে এই তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে দুইজনকে গ্রেপ্তার ও জবানবন্দী দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, এঘটনায় সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে তাদের আদালতে নেওয়া হলে সেখানে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দেন তারা। এর আগে গত ৭ মার্চ এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. সবুজ বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।
ঘটনার বিবরণ ও পুলিশ জানায়, শাহনাজ বেগমের সাথে বাসের হেলপার মো. সাত্তারের পূর্ব পরিচয় ছিল। তারা দুজন প্রায়ই শারীরিক মেলামেশা করতো। এক পর্যায়ে সাত্তারের মাধ্যমে শাহনাজের সঙ্গে পরিচয় হয় চালক মহিউদ্দিনের। পরে টাকার বিনিময়ে শাহনাজের সঙ্গে বেশ কয়েকবার শারীরিক সর্ম্পক করেন মহিউদ্দিন। এই সম্পর্ক গভীর হলে এক পর্যায়ে শাহনাজ মহিউদ্দিনকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দেন। স্ত্রী-সন্তান থাকায় তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় মহিউদ্দিন। এরপর বিয়ে না করলে ধর্ষণ মামলার হুমকি দেয় শাহনাজ। পরে গত ৫ মার্চ মহিউদ্দিন শাহনাজকে কোম্পানীগঞ্জে ডেকে নেয়। এরপর মহিউদ্দিন শাহনাজকে তার চালিত ফারজানা বাসে করে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ইউসুফপুর এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন বাসে থাকা লোহার রড দিয়ে শাহনাজের মাথায় আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে ওড়না ও রশি দিয়ে শাহনাজের হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ব্রীজের নিচে ফেলে বাস নিয়ে পালিয়ে যায় মহিউদ্দিন। পরে হেলপার মো. সাত্তার গাড়ীতে থাকা রক্ত ও অন্যান্য আলামত ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে ফেলে।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, আসামী মহিউদ্দিন ও সাত্তার কুমিল্লা আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শাহনাজ বেগমের ব্যবহৃত ওয়ালটন মোবাইল সেট উদ্ধার এবং হত্যায় ব্যবহৃত একটি লোহার রড ও ফারজানা পরিবহনের একটি বাস জব্দ করা হয়েছে।