নেকবর হোসেন
দেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর থেকে কুমিল্লায় অভিযানও চলছে। তবু পলিথিন ব্যাগের বিক্রি বা এর ব্যবহার কোনোটাই কমছে না। প্রকাশ্যে এখনো চলছে পলিথিন ব্যাগের রমরমা ব্যবসা। স্থানীয়রা বলছেন, আইন অনুযায়ী বিক্রেতাকে জরিমানা করা হচ্ছে। তবে কারাদণ্ডের মতো সাজা প্রয়োগ না হওয়ার কারণে এই অবস্থা চলছে।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন বাজারজাত ও ব্যবহার শুরু হয়। ২০০২ সালের ১ মার্চ সরকার বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আইন অমান্যকারীর জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়। বাজারজাত করলে রয়েছে ৬ মাসের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা। পরিবেশ অধিদপ্তরের কুমিল্লা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার মাসে পলিথিন বন্ধে ৩৩টি অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে মোট ৫৬টি মামলা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। এ সময় পলিথিন জব্দ করা হয় ১২ হাজার ৯৯০ কেজি।
কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজিব বলেন, নিষিদ্ধঘোষিত পলিথিন উৎপাদন ও বিপণনের বিরুদ্ধে আমরা বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করছি। এ ছাড়া নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ ও ধ্বংস করা হচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার নিরুৎসাহের জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
তবে এরপরও কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়, নিউমার্কেট, রাজগঞ্জ বাজার, চকবাজার, রানীর বাজার, বাদশা মিয়ার বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে যেকোনো কিছু কিনতে গেলেই তা দেওয়া হচ্ছে ছোট-বড় পলিথিন ব্যাগে। একটি চক্র এসব বাজারে পলিথিন সরবরাহ করছে।
নগরীর কান্দিরপাড় ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়কের ভ্যান থেকে সবজি কেনেন আব্দুস সালাম বাপ্পি নামের এক ক্রেতা। তাঁর হাতে ৫-৬টি পলিথিনের ব্যাগ। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘দোকানদার আমাদের যখন যা দেয়, তাতে করেই আমরা পণ্য বহন করি। পলিথিনের উৎপাদন বন্ধ করে দিলে আমরা পলিথিন পাবও না ব্যবহারও করব না।’
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন, পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে জনসচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনকেও আরও তৎপর হতে হবে।