নেকবর হোসেন
কুমিল্লা প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক মুজিবের নির্বাচনী জনসভায় মানুষের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চৌদ্দগ্রাম হাইস্কুল মাঠে এই নির্বাচনি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই জনসভাটিকে চৌদ্দগ্রাম হাইস্কুল মাঠে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা বলে আখ্যায়িত করেছেন উপস্থিত নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ।
সংসদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন বৃহস্পতিবার মুজিবুল হকের নৌকা প্রতীকের বিশাল জনসভায় যোগ দিতে দুপুরের পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ চৌদ্দগ্রাম হাইস্কুল মাঠে জড়ো হতে থাকেন। স্লোগানে মুখরিত হয়ে মিছিলসহকারে চৌদ্দগ্রামের প্রতিটি ইউনিয়ন এবং চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা এসে ভরিয়ে তুলে হাইস্কুল মাঠ। সভা শুরু হওয়ার পূর্বেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে জনসভাস্থল। এক পর্যায়ে মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নেতা-কর্মীরা রাস্তার পাশে, বাসাবাড়ির ছাদে জড়ো হন।
জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক। বক্তব্য রাখেন রাখেন মুজিবুল হকের সহধর্মিণী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হনুফতা আক্তার রিক্তা, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র মীর হোসেন মিরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ বাবুল,চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবিএমএ বাহার, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ নেতৃবৃন্দ।
এ ছাড়াও জনসভার এক পর্যায়ের পিতার জন্য ভোট ও দোয়া চান মুজিবুল হক মুজিবের কন্যা জান্নাতুল মাওয়া।
জসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুজিবুল হক মুজিব বলেন, আমার সারাটা জীবন আমি চৌদ্দগ্রামের উন্নয়নের কাজ করেছি। যখনই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি, তখনই চৌদ্দগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদর থেকে শুরু করে এমন কোনো গ্রাম কিংবা পাড়া-মহল্লা নেই, যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আমি যদি আবারো এমপি হতে পারি তাহলে যা কিছু উন্নয়ন কাজ বাকি আছে এগুলো সমাপ্ত করে চৌদ্দগ্রামকে মনের মতো করে সাজিয়ে তুলবো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবারও আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি টানা আটবার নৌকার মনোনয়ন নিয়ে আপনাদের কাছে ভোট চাইতে এসেছি। আটবার মনোনয়ন পেয়ে আমি চারবার এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে চৌদ্দগ্রামের প্রায় প্রতিটি গ্রামে উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়ন করেছি।
মুজিবুল হক বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আমিসহ চৌদ্দগ্রামের আরো অনেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দলীয় সভাপতি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি যদি মনোনয়ন না পেতাম, তাহলে যিনি পেতেন আমি তার নৌকার পক্ষে কাজ করতাম। কিন্তু তারা মনোনয়ন না পেয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করছে। তাদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। মূলত তারা দলীয় আদর্শ লালন করে না। তারা বেঈমান-মুনাফিক। চৌদ্দগ্রামে যারা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের সাথে মূল দলের কেউ নেই। ইতিমধ্যে তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। সমগ্র চৌদ্দগ্রামে এখন নৌকার জোয়ার বইছে। সুতরাং যেনতেন প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আপনারা ভোটের মত পবিত্র আমানত নষ্ট করবেন না। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে চৌদ্দগ্রামের ভোটারসহ সাধারণ মানুষ ষড়যন্ত্রকারীদেরকে ঘৃণার সাথে বর্জন করে ব্যালটের মাধ্যমে দাঁতভাঙা জবাব দিবে ইনশাআল্লাহ।
আলমগীর হোসেন বিপ্লবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ কামাল উদ্দিন সিআইপি, সাবেক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আরিফুর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য এম তমিজ উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইসহাক খান, এনামুল হক খোন্দকার, আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জসিম উদ্দিন,উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডভোকেট আব্দুল মান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি ফারুক আহমেদ মিয়াজী,জাকির হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক চেয়ারম্যান জি এম জাহিদ হোসেন টিপু, সৈয়দ আহমেদ খোকন, ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের আলম, উপজেলা আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি জামশেদ আলম,জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেল ,উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক কাউছার হানিফ শুভ প্রমূখ।