নেকবর হোসেন
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাজারসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে উপজেলার আসাদপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন- আব্দুল আউয়ালের ছেলে মো. ইব্রাহিম (২৪) এবং মো. আনু মিয়ার ছেলে মো.শহিদুল্লাহ (৩৩)। তাদের বাড়ি আসাদপুর গ্রামে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মীর হোসেন জানান, ইব্রাহিম ও শহিদুল্লাহ এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন। তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বুধবার হামলার পর থেকেই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উপজেলার অন্যান্য মাজারগুলোতেও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন হোমনা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত বুধবার আসাদপুর গ্রামের কফিল শাহের নাতি ও আলেক শাহের ছেলে মহসিন তার ‘বেমজা মহসিন’ নামের ফেইসবুক আইডি থেকে মহানবী (স.) সম্পর্কে কটূক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য পোস্ট করেন। যাতে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে। ওইদিনই তার পরিবার তাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেন। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনার জেরে উত্তেজিত জনতা আসাদপুর গ্রামের অভিযুক্ত মহসিনের দাদা কফিল উদ্দিন শাহের মাজারে ও বাড়িঘরে আগুন দেন। একই সঙ্গে এলাকার কালু শাহ, আবদু শাহ ও লেংটা শাহ মাজার ভাঙচুর এবং হাওয়ালী শাহ নামের একটি আস্তানা ঘর পুড়িয়ে দেন।
এ ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক বিরাজ করছে আসাদপুরে। বৃহস্পতিবার পুলিশ বাদী হয়ে ২২০০ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত নামে মামলা করেছে। রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, আসাদপুর এলাকায় পুরুষের সংখ্যা কম। গ্রেপ্তার আতঙ্কে তারা ঘরবাড়ি ছেড়েছেন।
কফিল শাহের স্ত্রী বলেন, আমার ছেলে অপরাধ করছে তাকে ধরিয়ে দিয়েছি। তারপরও আমাদের বাড়িঘর ও শ্বশুরের মাজারে আগুন দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা থাকবো কোথায়।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আসাদপুরে বাড়িঘর, মাজারে আগুন ও হামলার ঘটনায় আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের ধরতে অভিযান চলবে।