ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধি:
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় আগুনে খুন্তি পুড়িয়ে দুই শিশুর শরীরে ছ্যাঁকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আপন মায়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ( ১ আগস্ট ) বিকেলে উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের নাল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আপন মায়ের এরকম সৎ মায়ের মতো আচরণের ঘটনায় ওই এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার ( ৩ আগস্ট ) রাতে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই দুই শিশুকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসেন স্বজনরা।
নির্যাতনের শিকার শিশুদের বাবা ইব্রাহিম খলিল জানান, তার স্ত্রী আসমা বেগম ( ৩০ ) তার সাথে সংসার করতে চাইছেন না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ নিত্যদিন লেগেই থাকে। এসব বিষয় নিয়ে প্রায়ই আসমা বেগম তার শিশু সন্তানদের মারধর ও নির্যাতন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন শুক্রবার বিকেলে আগুনে খুন্তি পুড়িয়ে তাদের ঔরসজাত দুই শিশু সাবিনা আক্তার ( ৮ ) ও নুসরাত আক্তারকে ( ৫ ) ছ্যাঁকা দেয় তাদের মা আসমা বেগম।
পরে ওই দুই শিশুর বাবা রাজমিস্ত্রীর কাজ শেষ করে রাতে বাড়ি ফিরে এলে শিশুরা তাদের বাবাকে খুন্তির ছ্যাঁকার বিষয়টি জানায়। এ বিষয়ে ইব্রাহিম খলিল তার স্ত্রী আসমা বেগমকে জিজ্ঞেস করলে সে আরও খেপে ওঠে। পরদিন সকালে ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের ও মামা মনির হোসেনকে জানায়। পরিবারের সদস্যরা আসমা বেগমকে এ ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আসমা বেগম তার মা ও ভাইকে খবর দেয়। আসমা বেগমের মা-ভাই এসে ইব্রাহিম খলিলকে উল্টো গালমন্দ ও মারধর করে।
আহত শিশু সাবিনা আক্তার ও নুসরাত আক্তার বলেন, আমাদের গালে, শরীরে ও হাতে মাছ উল্টানি ( খুন্তি ) আগুনে পুড়িয়ে ছ্যাঁকা দিয়েছে আমাদের মা। এ সময় আমাদের মা আমাদেরকে মারধর করে। আমাদের মা আমাদেরকে প্রায়ই অহেতুক মারধর করে।
ইব্রাহিম খলিলের মামা মনির হোসেন বলেন, তাদের ( স্বামী-স্ত্রী ) ঝগড়াঝাঁটির বিচার অনেকবার করা হয়েছে। এসব বিষয় পুরো গ্রামের মানুষও জানে। আসমা বেগম ইব্রাহিম খলিলের সংসার করতে চায় না। এ নিয়ে প্রায়ই আসমা বেগম তার সন্তানদের অমানুষিক নির্যাতন করে। আমরা তাদের শিশুদের কথা চিন্তা করে ইব্রাহিম খলিলের বউকে বুঝিয়ে শুনিয়ে প্রতিবার ঝগড়াঝাঁটি সমাধান করে দিয়েছি। এবারও স্বামী স্ত্রীর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে ওই দুই শিশুকে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়েছে আসমা বেগম।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক ( তদন্ত ) টমাস বড়ুয়া কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তবে অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।