নেকবর হোসেন
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর বলেছেন, সরকার সদ্য গঠিত একটি রাজনৈতিক দল এনসিপিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছেন। সরকারের এমন আচরণ শুধু গণঅধিকার পরিষদ নয়, দেশের অধিকাংশ সচেতন নাগরিক ও রাজনৈতিক মহলের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি বলেন, সরকার যদি নিরপেক্ষ আচরণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে দেশবাসী আরেকটি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানাতেই পারে। তাহলে নির্বাচনের আগে নির্বাচনের জন্য আরেকটি নিরপেক্ষ সরকার গঠনের প্রয়োজন হতে পারে। আমরা মনে করি সরকার সকল দলের প্রতি সমান আচরণ করবেন।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউনহল মাঠে গণঅধিকার পরিষদ কুমিল্লা জেলার উদ্যোগে ‘গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্খা ও রাষ্ট্র সংস্কার’ শীর্ষক সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিপি নূর আরো বলেন, সরকার চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে গেলেও একটি সদ্য জন্ম নেওয়া, নিবন্ধনহীন দলকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এনসিপির প্রতি সরকারের এই সহযোগিতা পূর্বের ‘কিংস পার্টি’ গঠনের মতোই একটি নজির। আমরা বিভিন্নভাবে শুনেছি কোন কোন জেলায় বৃক্ষ মেলা বন্ধ করে পরীক্ষা স্কুল ক্লাস বন্ধ করে তাদেরকে এনসিপির সমাবেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। এটি নতুন বাংলাদেশের চিত্র নয়। এগুলো আমরা পুরনো আমলে দেখেছি।
এর আগে বিকেলে টাউনহল মাঠে ‘গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্খা ও রাষ্ট্র সংস্কার’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নূর বলেন, গত ৫০ বছরের পুরনো রাজনীতি এ দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি। হানাহানি, দখলবাজি, জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে এবং জনগণকে জিম্মি করে এই রাজনীতি বাংলাদেশকে সংঘাত-সহিংসতার অনিশ্চিত রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। সেই রাজনীতির কবর রচনা করতে হবে। সেই অবস্থা থেকে এই তরুণ প্রজন্ম জাতিকে নতুন করে পথ দেখিয়েছে। তাই নেতৃত্বের ভার তরুণদের হাতেই তুলে দিতে হবে। শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই দেশে গণঅভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
ভিপি নূর বলেন, মাইলস্টোনের ঘটনা এবং তার পরবর্তী ঘটনায় একটা স্বচ্ছ নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত দাবি করে নুরুল হক নুর বলেন, মাইলস্টোনের ঘটনাকে পুঁজি করে পতিত স্বৈরাচারের দোসরেরা ঢাকার রাজপথে নানান ধরনের অস্থিরতা তৈরি করার অপচেষ্টা করেছে। তারই অংশ হিসেবে তারা কিছু ছাত্রদেরকে উৎসাহিত করে সচিবালয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছে এবং ছাত্রদের মধ্যে ঢুকে সচিবালয়ে ভাংচুর করেছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারেরও প্রশাসনের একটি দুর্বল চিত্র আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়েছে। সচিবালয়ের মত সুরক্ষিত ও স্পর্শকাতর জায়গায় যদি সরকার নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিভাবে ১৮কোটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, সেটি নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করবে।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে নূর বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে ৩০০ আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এসময় তিনি কুমিল্লার সদর আসনসহ বিভিন্ন আসনে আগামী নির্বাচনে গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী ঘোষণা করেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন,
গণঅধিকার পরিষদ এর জেলা সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। বিকেল চারটা থেকে শুরু হওয়া সমাবেশে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন।