চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আলোচিত শাহীন মজুমদার হত্যাকান্ডের ঘটনার নতুন করে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সামনে ভুক্তভোগির পরিবার ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগি ও নিহতের পিতা মো: গেদু মিয়া মজুমদার, ছোট ভাই মো: মাইন উদ্দিন মজুমদার। এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো: নয়ন মজুমদার, মো: মওদুদ আহমেদ মজুমদার, ইকবাল হোসেন মজুমদার।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চৌদ্দগ্রামে ২০২২ সালের ২৫ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম-লাকসাম সড়ক থেকে শাহীন মজুমদার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত সহ আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে জানাযা শেষে পারিবারিকভাবে নিহতের লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়। স্থানীয়রা জানান, ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে এলাকার কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি তৎকালীন সময়ে রাজনৈতিক কোন্দল ও সরকারি রাস্তার মাটি ভরাটের দ্বন্দ্বের জেরে সংগঠিত শাহীন মজুমদার হত্যার ঘটনাকে নিচক একটি দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দিয়ে প্রশাসনকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেন। এ কারণে তখন প্রশাসনের স্বাভাবিক তদন্ত প্রক্রিয়া বারবার ব্যাহত হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ওই সময়ে সংগঠিত আলোচিত এ হত্যাকান্ডের সুবিচার নিশ্চিতে নতুন করে সুষ্ঠু তদন্তের জোর দাবি জানাচ্ছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
নিহতের ছোট ভাই মো: মাইন উদ্দিন মজুমদার বলেন, ২০২২ সালের ২৫ জুলাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়ে খুন হন আমার বড় ভাই মো: শাহীন মজুমদার। পরিকল্পিত এ হত্যাকান্ডটিকে ওই সময় সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমরা এ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে ধরনা দেই। বিষয়টি এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল জানতে পারে। এরপর থেকে তারা আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি সহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। আমরা আলোচিত এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক মো: হানিফ মজুমদার, মো: খোকন মজুমদার, মোহাম্মদ মজুমদার, আবুল কাশেম মজুমদার, পলাশ মজুমদার, মিজানুর রহমান মজুমদার, জহিরুল ইসলাম মজুমদার সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, যুবসমাজের লোকজন ও সচেতন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ জানান, ‘এটা অনেক আগের ঘটনা। এ বিষয়ে আপাতত নতুন করে থানা কর্তৃপক্ষের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই। তবে, ভুক্তভোগির পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের কোনো নির্দেশনা আসলে আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করতে পারবো। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগির পরিবারকে সকল প্রকার আইনী সহায়তা প্রদান করা হবে।’