1. [email protected] : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. [email protected] : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. [email protected] : unikbd :
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ - Dainik Cumilla
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
দাউদকান্দিতে হত্যা মামলার আসামী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তার ও অপসারণ চায় বৈষম্য বিরোধীরা কুমিল্লাবাসী আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে,কুমিল্লা হবে এনসিপির ক্যান্টনমেন্ট– কুমিল্লায় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দাউদকান্দিতে হত্যা মামলার আসামী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তার ও অপসারণ চায় বৈষম্য বিরোধীরা সারজিসের কাছে বিচার চাইলেন কুমিল্লার শহীদদের স্বজনরা চৌদ্দগ্রামে শাহীন হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন দাউদকান্দিতে ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা বুড়িচংয়ের আনন্দপুরে‌ বিমান দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ আগামীকাল কুমিল্লায় এনসিপির পদযাত্রা কুমিল্লায় পানিতে ডুবে একই বিদ্যালয়ের দুই স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ

  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫
  • ৬ বার পঠিত

 

সৌরভ লোধ, বরুড়া থেকে ||

কুমিল্লার বরুড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ওয়াশব্লক নির্মাণে নানা অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিসের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়ের উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ শামীমের কাছে কাজের বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন,তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে আসলে তারপর তথ্য দিব।নয়তো তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বরাদ্দকৃত ওয়াশ ব্লকের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক শিক্ষিকারা। তথ্য অধিকারে আবেদনের পর উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায় পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় বরুড়া উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬১টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র আহবান করেন কুমিল্লা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।প্রতিটি ওয়াশব্লক নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। দোতলা ও একতলা ভবন ওয়াশব্লক গুলোতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য ৬টি ওয়াশরুমের ব্যবস্থা রাখা হয়।কিন্তু উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর উদাসীনতায় ও ঠিকাদারদের খামখেয়ালিতে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বছরের পর বছর কাজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

হাতেগোনা কয়েকটি ওয়াশব্লকের কাজ এখন পর্যন্ত সমাপ্ত দেখালেও দীর্ঘ প্রায় ২০২১ থেকে শুরু হওয়া কাজের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক এখনো আলোর মুখ দেখেনি।মান্দারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো হাই- কমোড, ফিটিংস ও বিদ্যুৎ সংযোগসহ আরও অনেক কাজ বাকি থাকলেও ঐ স্কুলকে ১০০% কাজ সম্পূর্ণ দেখিয়েছে বরুড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিস।কিন্তু ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার বলেন আমাদের চোখে ৭০% কাজ হয়েছে,তারা ১০০% কাজ হয়েছে এটা কিভাবে উল্লেখ করে।এই ছাড়াও উপজেলার কাসেড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,কামাড্ডা সালুকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ভাউকসার প্রাথমিক বিদ্যালয়,ছোটবারেরা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরো কয়েকটি বিদ্যালয়ের কাজ ৫০% এর বেশি কর‍তে পারেনি গত ৩/৪ বছরেও।পয়েলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,কালোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,নলুয়া চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,নবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বগাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,চিতোষী রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরো অনেক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণের কাজ অর্ধেক করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর। শুধুমাত্র অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ করে ভেতরের কাজ সম্পূর্ণ অসমাপ্ত রয়ে গেছে প্রায় ওয়াশ ব্লকের।

 

বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ওয়াশবক্লের দোতলা অবকাঠামো নির্মাণ করে রেখে দেওয়া হয়েছে।ওয়াশব্লকের টাংকির জন্য স্কুলের পাশেই বিশাল গর্ত করে রাখা হয়েছে।যে গর্তে এখন বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমে ডেঙ্গু মশার সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।স্কুলে এসে ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এই স্কুলে এসে আরো জানা যায়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ করতে এসে স্থানীয় বিষ্ণুপুর বাজারের রড সিমেন্টের দোকান,খাবার দোকান সহ আরো কিছু দোকানে প্রায় ১৫ হাজার টাকা বাকী করে রাখে স্কুলের নাম ব্যবহার করে। কাজ সমাপ্তি না করেই হুট করে চলে যাওয়ায় স্থানীয় দোকানিরা স্কুলের শিক্ষক ও স্টাফদের প্রতিনিয়ত বাকী টাকার পরিশোধের জন্য কথা শুনাচ্ছে।
বরুড়ার একেবারে উত্তরাঞ্চলের দক্ষিন হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা. শেরমিন আয়াজ আমাদের জানান,ভরা বৃষ্টির মৌসুমে,অনবরত বৃষ্টির মধ্যেই আমার বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাই দেওয়া হয়েছে। আমি তো প্রধানশিক্ষক আমাকেও জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি তারা। আমি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শামীম সাহেবকে বলেছিলাম বৃষ্টির মধ্যে ঢালাই কেন দিচ্ছেন। তিনি জানান, লোকরা আজকে সকল মেশিন নিয়ে চলে আসছে, আজকেই করতে হবে। তারপর আমি কাজের স্টেটমেন্ট চাইলাম ওনি আমাকে স্কুলের নকশার মত একটা কাগজ দিলো।যেটার মধ্যে কাজের কোন বিস্তারিত কিছুই নেই।ওয়াশব্লকের কাজ করতে এসে দুইজন ঠিকাদার পরিবর্তন হয়েছে আমার এখানে। প্রথম ঠিকাদারের কাজ গুলা খুবই খারাপ ছিলো। সরকার পরিবর্তনের পর আরেকজন এসে কোনমতে দৃশ্যমান করে দিয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে পারেনি।

পূর্ব নলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার বলেন, কাজের মান ভালো হয়নি। নিম্নমানের কাজ। কোনরকম শেষ করেছে। গুদামঘরের মত করে ফেলেছে।আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, ভেন্টিলেটর কই? পরে আবার দেয়াল কেটে ভেন্টিলেটর জায়গা করে গেছে। রং ভালো মানের দেওয়া হয়নি। সব মিলে নয়ছয় করে কাজ সমাপ্তি করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে।

বিজয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন মিয়াজি বলেন,প্রায় ২ মাস আগে আমাদের ওয়াশব্লকের কাজ শেষ করেছে। ২ মাসেই বাহিরের ওয়াল খসে পড়ছে।ছাদ ঢালাই দেওয়ার সময় কথা ছিলো আমি থাকবো।তারা আমাকে না জানিয়ে ছাদ ঢালাই দিয়ে ফেলছে বন্ধের দিনে। সেদিন বৃষ্টি ও ছিলো। এই কাজে আমরা সন্তুষ্ট নই।

বাড়াইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির হোসেন বলেন, কাজ শেষ হইছে, আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা ব্যবহার করতেছি। কিন্তু আমাদেরকে অনেক উপকরণ দেয়নি। যেমন- লাইট, বালতি, মগসহ আরও অন্যান্য উপকরণ। বৃষ্টি আসলে বাহিরে পানি ভিতরে ডুকে যায়। দরজা ভালো না। আরও টুকিটাকি সমস্যা। পার্সেন্টিস অনুসারে ৭০% ধরা যায় কাজের মান।

দক্ষিণ হোসেনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানায়- আমাদের এখানে টয়লেট না থাকায় আমাদের অনেক সমস্যা হয়।কিছুদিন আগেও আমরা স্কুলের পাশেই একটা বাড়িতে গিয়ে বাথরুম করতাম।

এই প্রকল্পে কাজ করা আবুল কালাম আজাদ নামের এক ঠিকাদার মুঠোফোনে জানান,আমরা খুব দ্রুতই অসম্পূর্ণ কাজ গুলো করে দিবো।
বাকী ৪ জন ঠিকাদারদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম এই বিষয়ে বলেন,অনেক স্কুল থেকেই প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসছে ওয়াশব্লক নিয়ে। জনস্বাস্থ্য অফিস যে সকল স্কুলের কাজ ১০০% বলেছে সে স্কুল গুলাতে আমরা পরিদর্শন করে দেখি হাই-কমোড এর পাশে এস এস পাইপের একটা অ্যাঙ্গেল বসানোর কথা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য,সেটাও ছিলোনা একটা স্কুলে।আরো নানা সমস্যা আছে এই কাজে।কাজের মান গুলাও ছিলো নিম্ন মানের।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ শামিম বলেন,ঠিকাদারদের কয়েকদফা চিঠি দেওয়া হয়েছে।যেগুলা অসম্পূর্ণ আছে,সেগুলা করে দেওয়া হবে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD