ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধি:
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে একযোগে খাল দখলমুক্ত ও পরিষ্কার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহানের নির্দেশে একযোগে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এতে অংশ নেয় উপজেলার মাধবপুর, দুলালপুর ও সাহেবাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ।
প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সরাসরি নেতৃত্বে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশদের অংশগ্রহণে চলে এ বিশেষ অভিযান। ময়লা-আবর্জনা অপসারণ ও কচুরিপানা, পানিপ্রবাহের বাধা অপসারণসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
দুলালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান রিপন ভূঁইয়া বলেন, দুলালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে খাল দখলের কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। ফলে প্রায় প্রতিবছরই বন্যা ও জলাবদ্ধতায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হতো। আজকের অভিযানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে খাল পরিস্কার করা হয়েছে।
মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন জানান, আমাদের এলাকায় অনেক খালই দখল ও ময়লার কারণে পানিশূন্য হয়ে পড়েছিল। এই অভিযানের মাধ্যমে খালগুলোর পুরোনো রূপ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এতে এলাকার কৃষি ব্যবস্থাও উপকৃত হবে।
সাহেবাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে খাল পরিস্কারে অংশ নিয়েছি। খাল পরিষ্কার হলে বর্ষার পানি দ্রুত নামবে এবং গ্রামীণ রাস্তাঘাটও টিকবে।
অভিযানকালে অংশ নেওয়া গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় জনগণ জানায়, খাল পরিষ্কারের এ ধরনের উদ্যোগ বহু বছর পর দেখা গেল। তারা প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যানদের ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, পরিষ্কার খাল তাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এতে খালের পানি জমি সেচে কাজে লাগানো যাবে এবং জলাবদ্ধতার ফলে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা কমবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও বন্যার ঝুঁকি কমাতে খালগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা তিনটি ইউনিয়নে একযোগে অভিযান চালিয়েছি এবং বাকি ইউনিয়নগুলোতে এই কার্যক্রম শুরু করা হবে। এছাড়া এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। দখলমুক্ত ও পরিষ্কার খাল শুধু পানি নিষ্কাশনেই নয়, পরিবেশ রক্ষায়ও বড় ভূমিকা রাখে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অভিযানে জনগণের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা সবচেয়ে বড় শক্তি। আমরা চাই প্রতিটি ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার এবং জনগণ মিলেই পরিবেশবান্ধব ও দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো নিশ্চিত করুক।