নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওঠা কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি সেবা মাল্টিমিডিয়া স্কুলের সহকারী শিক্ষক রাহাতুল ইসলাম ওরফে সৌরভকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যা সাতটায় তিতাস থানা পুলিশ বাতাকান্দি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
রাহাতুল ইসলাম সৌরভ বাতাকান্দি বাজারের বাসিন্দা। তাঁকে আপাতত থানাহাজতে রাখা হয়েছে। তিনি কুমিল্লার হোমনা ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্র। ঘটনার ১০ মাস আগে রাহাতুল ওই স্কুলে চাকরি নিয়েছিলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফারহান ইসলাম রোহান (৭) তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আকালিয়া গ্রামের ওমানপ্রবাসী রবিউল ইসলামের ছেলে। ফারহানের মা মায়া আক্তার বলেন, গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর স্কুলশিক্ষকের স্কেলের আঘাতে তাঁর ছেলের রোহানের ডান চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসার জন্য আট মাস ধরে ছেলেকে নিয়ে দেশ-বিদেশে ছোটাছুটি করছেন তাঁরা। ছেলের চোখে দুবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, আঘাতে তার ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি চলে গেছে। বাঁ চোখের আলো শতকরা ১০ ভাগ কমে গেছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার সময় উপজেলার বাতাকান্দি এলাকার সেবা মাল্টিমিডিয়া স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত ফারহান। পাঠদানের সময় স্কুলটির সহকারী শিক্ষক রাহাতুল ইসলাম তার দিকে স্কেল ছুড়ে মেরেছিলেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন, শিক্ষক রাহাতুল ক্লাসে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। ফারহানসহ ক্লাসের শিশুশিক্ষার্থীরা হইচই করলে শিক্ষক প্রচণ্ড রেগে যান। তিনি প্রথমে স্কেল দিয়ে ফারহানের পিঠে বাড়ি দেন। এতে স্কেল ভেঙে যায়। শিক্ষক নিজের জায়গায় ফিরে যাওয়ার পরও হইচই বন্ধ হচ্ছিল না। তখন তিনি আরও রেগে যান। তিনি ভাঙা স্কেলটি ফারহানের দিকে ছুড়ে মারেন। স্কেলটি ফারহানের ডান চোখে গিয়ে লাগে। এ ঘটনায় গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষক রাহাতুলের বিরুদ্ধে তিতাস থানায় অভিযোগ করেন ফারহানের মা। অভিযোগে গুরুতর আঘাত করে চোখ নষ্ট করার কথা বলা হয়। অভিযোগটি মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করেছে তিতাস থানার পুলিশ।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদ উল্যাহ বলেন, শিক্ষকের স্কেলের আঘাতে সাত বছরের শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. রাহাতুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে বিধি মোতাবেক কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।