1. [email protected] : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. [email protected] : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. [email protected] : unikbd :
কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি জিআই স্বীকৃতি পেল - Dainik Cumilla
বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে লাকসামে জামায়াতের গণমিছিল বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ চৌদ্দগ্রামে জুলাই শহীদ জামশেদ ও মাওলানা শাহাদাতের কবর জিয়ারত করলো জামায়াত নাঙ্গলকোটে বৃষ্টিতে ভিজে জামায়াতের গণমিছিলে জনতার ঢল চৌদ্দগ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জামায়াতের গণমিছিল দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছিল বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুমিল্লায় হাজী ইয়াছিনের নেতৃত্বে বিএনপির বিজয় মিছিল কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের উদ্যোগে শহীদের কবর জিয়ারত ও দোয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে কুবিতে আলোচনা সভা মুরাদনগরে গণঅভ্যুত্থানে নিহত পাঁচ শহীদের কবরে প্রশাসনের শ্রদ্ধা কুমিল্লায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে ছাত্রশিবিরের বর্ণাঢ্য র‌্যালী

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি জিআই স্বীকৃতি পেল

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫
  • ৭১ বার পঠিত

 

নেকবর হোসেন

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদিসহ আরও ২৪টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ দিয়েছে সরকার। গত বুধবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫ এর আলোচনা সভায় সংশ্লিষ্টদের এসব সনদ হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি ও পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। এতে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে। এই জন্য সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণ জরুরি। জামদানি শাড়ি দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল।
তিনি বলেন, দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করতে হবে। জিআই পণ্য আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে লালন করে।
কুমিল্লা খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, পৃথিবীর যেখানে বাঙালি কমিউনিটি আছে, সেখানে খাদি কাপড়ের প্রসার ঘটেছে। কুমিল্লায় যেসব বিদেশি আসেন, তারাও খাদির কাপড় কিনছেন। এটা হাতে তৈরি কাপড় হওয়ায় পরে ন্যাচরাল ফিল পাওয়া যায়।
খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব হলো এটি হাতে তৈরি, পরিবেশবান্ধব এবং আরামদায়ক। কুমিল্লার কারিগররা তাদের অনন্য দক্ষতার মাধ্যমে খাদিকে একটি শিল্পে রূপান্তরিত করেছেন। তিনি বলেন, এ স্বীকৃতির ফলে কুমিল্লার খাদি পণ্যের বিপণন ও রপ্তানির সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও কুমিল্লার খাদি পণ্য নতুন মাত্রা পাবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারিগরদের জীবনমান উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনাও তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, দেশের অন্যতম প্রাচীন জেলা কুমিল্লার ঐতিহ্য বহন করে খাদি ও রসমালাই। এর আগে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছিল রসমালাই। এখন পেল খাদি। আমরা সকলকে নিয়ে এ দুটি পণ্যের মান অক্ষুন্ন রাখতে আরও কিছু পরিকল্পনা নেব।

খাদির ইতিহাস
খাদি হাতে বোনা এক ধরনের কাপড়বিশেষ। কার্পাস তুলা থেকে হাতে কাটা সুতা দিয়ে এই কাপড় বোনা হয়। এই কাপড় যে তুলা দিয়ে তৈরি হয়, সেই সুতাও হাতে তৈরি হয়। খাদি কাপড় মূলত মোটা। মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে ১৯২১ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় খাদি জাতীয় প্রতীকে পরিণত হয়। এ কাপড়ের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। ‘স্বদেশি পণ্য গ্রহণ করো আর বিদেশি পণ্য বর্জন করো’—এই স্লোগানের ওপর ভিত্তি করেই তখন খাদিশিল্পের বিকাশ হয়।

তবে খাদি কাপড়ের নামকরণ নিয়ে রয়েছে মতবাদ। দেশে যখন খাদি কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায়, তখন সাধারণ মানুষের কাপড়ের চাহিদা পূরণ করার জন্য মাটির নিচে গর্ত করে পায়ে চালানো প্যাডল দ্বারা এ কাপড় তৈরি হতো। খাদ থেকে তৈরি হতো বলে এর নাম হয় খদ্দর বা খাদি। আবার অনেকে বলে থাকে খদ্দর শব্দটি গুজরাট শব্দ। এই শব্দ থেকে খাদি বা খদ্দর হচ্ছে।

আমাদের দেশে কুমিল্লায় সর্বপ্রথম খাদিশিল্পের প্রসার ঘটে। ধীরে ধীরে বাড়ে খাদি কাপড়ের চাহিদা। এই চাহিদাকে ধরে রাখার জন্য ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর তৎকালীন কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ও বার্ডের প্রতিষ্ঠাতা ড. আখতার হামিদ খান তৎকালীন গভর্নর ফিরোজ খান নূনের সহযোগিতায় দি খাদি কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশন লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। তখন কুমিল্লার অভয়াশ্রম, চট্টগ্রামের প্রবর্তক সংঘ আর নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমে খাদি বা খদ্দর কাপড় বোনা হতো।

ড. আখতার হামিদ খান প্রতিষ্ঠিত দি খাদি কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশন লিমিটেডের হাল ধরেন চান্দিনার শৈলেন গুহ ও তার ছেলে বিজন গুহ। তারা এই খাদিশিল্পের সুনাম ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনবরত কাজ করে গেছেন। শৈলেন গুহ মারা যাওয়ার পর তার ছেলে অরুণ গুহ বাবার প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন। পরবর্তী সময়ে অরুণ গুহ মারা গেলে শৈলেন গুহের আরেক ছেলে বিজন গুহ এই শিল্পকে ধরে রেখেছেন কোনোমতে। চান্দিনায় মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত একটি তাঁতশিল্প রয়েছে আজও। ১৯৯৪ সালে কুমিল্লার খাদিশিল্প তাদের গুণগত মানের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD