নেকবর হোসেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেছেন, আমার আত্মীয় স্বজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তদবির ও বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন কিছু সুবিধাবাদী। এমন অনেক অভিযোগ আমি পেয়েছি। তাদের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।
রোববার (১৬ মার্চ) বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে জেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
আবু রায়হান বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের ছাত্র জনতা রাজপথে রক্ত দিয়েছেন। এই রক্ত দেয়ার পেছনে একটাই লক্ষ্য ছিল, সেটা হলো- দেশের বিভিন্ন স্তরে চলমান বৈষম্য ও দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা। এখনও দেশের বিভিন্ন স্তরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা অবস্থান করছেন। আমরা এখনও তাদের শনাক্ত ও অপসারণ করার জন্য আন্দোলন করা যাচ্ছি। প্রতিনিয়ত আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। আমাদের এই কার্যক্রম চলাকালে কিছু অশুভ শক্তি ও সুবিধাবাদী লোকজন আমাদের নাম ভাঙিয়ে বিশেষ করে আমার লোক, কখনো আমার ভাই, কখনো আমার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে, কখনো সরাসরি কিংবা মুঠোফোনে আমার নাম ভাঙিয়ে ভুক্তভোগী কিংবা দুর্নীতিবাজ লোকজনের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। এমন কিছু রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। কখনো আমার ভাই পরিচয় দিচ্ছেন, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে এমন অনৈতিক কাজ করছেন। সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর এহেন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড আমাদের ইতিবাচক কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করছে। ছাত্র জনতার এই বিশাল অবদানকে কলঙ্কিত করার জন্য একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী মাঠে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তৎপর রয়েছে। তারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, পরিবহন, বালুমহাল, বিভিন্ন থানায় আমার নাম ভাঙিয়ে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। কখনো কাউকে মামলায় নাম জড়িয়ে দিচ্ছেন, আবার কখনো মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য তদবির করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমি আপনাদের কাছে আমার অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য উপস্থিত হয়েছি। আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে সামনে নেতৃত্ব দিয়েছি দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। আমরা সফল হয়েছি। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি আছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সমাজের কিংবা প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেসব দুর্নীতিবাজ অপশক্তি লুকিয়ে আছে, তাদের সনাক্ত করতে, সেজন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তার মানে এই নয় আমি আর্থিক সুবিধা নিয়ে কোনো অনৈতিক কাজ করব। আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার, যতদিন বাঁচবো দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করব। আমার কর্মকাণ্ডে কোন নেতিবাচক বিষয় থাকবে না, থাকবে না কোনো আর্থিক লেনদেন ও অনিয়ম। আমার নাম ভাঙিয়ে কিংবা আমার আত্মীয় পরিচয়ে যেকোনো চাঁদাবাজি কিংবা আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা যেন নেয়া হয়। আমি কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুবিধাভোগী নই। তাই কোনো অনিয়ম আমি সহ্য করব না। আর্থিক লেনদেনে জড়িত এসব সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এ সময় কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তাজওয়ার ওহীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।