নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের দৌলতপুর গ্রামে স্বামী পরিত্যক্তা এক অসহায় নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ওই গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে সামসুদ্দিন আলাউদ্দিনের দ্রুত শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে মুসল্লীরা। শুক্রবার জুম্মার নামজ শেষে দৌলতপুর রহিম মার্কেট এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে মুসল্লীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দৌলতপুর গ্রামের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমাজসেবক শাহ আলম, কামাল হোসেন, দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সভাপতি শাহজাহান, সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ দয়াল, সমাজ সেবক মাওলানা শাহ জাহান মোল্লা, মাঈন উদ্দিন ও মাস্টার এমদাদুল হক শাহিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন মেম্বার, আবুল কালাম মোল্লা, সাইফুদ্দিন ভূঁইয়া, মজিবুল হক খাজা, শাহ আলম ভুট্টু, আবদুল কাদের মাজেদ, শাখাওয়াত মজুমদার, মাঈন উদ্দিন, মাস্টার শাহাদাত, সালাউদ্দিন সুফল, শাহজাহান শাহিন, আইয়ুব আলী প্রমূখ।
উল্লেখ্য, স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারীর গোসলের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পেরিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সদস্য দৌলতপুর গ্রামের সামছুদ্দিন আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে নাঙ্গলকোট থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সামছুদ্দিন আলাউদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সামছুদ্দিন আলাউদ্দিন দৌলতপুর গ্রামের উত্তর পাড়ার সিদ্দিক হাজী বাড়ির ইউনুস মিয়ার ছেলে ও বাঙ্গড্ডা বাজারের সুমাইয়া টেলিকম স্বত্বাধিকারী বলে জানা গেছে।
ভূক্তভোগী নারী বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ায় আমি দীর্ঘদিন যাবৎ পিতার বাড়িতে বসবাস করি। সামছুদ্দিন আলাউদ্দিনের মোরগের খামারে আমার ভাই চাকুরি করার সুবাদে আমাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় এবং প্রায় সময় আমাদের বাড়িতে আশা যাওয়া করে। এক পর্যায়ে সে আমাকে পছন্দ করে বলে বিবাহের প্রস্তাব দেয়, আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে আমার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে যায়। সে গোপনে আমার গোসল করার ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরবর্তীতে ওই ভিডিও এবং ছবি আমাকে দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাকে বিবাহের জন্য পুনরায় প্রস্তাব দেয়। আমি তার প্রস্তাবে পুনরায় রাজি না হওয়ায় সে ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে দিবে মর্মে আমাকে হুমকি দেয়। আমি ভয়ে তার কথায় রাজি হলে সে এই সুযোগে আমাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে আমি তাকে বিবাহ করার জন্য বললে সে কালক্ষেপন করতে থাকে। সর্বশেষ গত ১০ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ২টার দিকে আমাকে ফোন করে বিবাহ করবে বলে আমাদের বাড়ির পাশ্ববর্তী বাগানে দেখা করতে বলে, এসময় আমি তার সাথে দেখা করতে গেলে পুনরায় জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষনের বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ এ.কে ফজলুল হক বলেন, অভিযুক্তকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভুক্তভোগী নারীকে মেডিকেল পরিক্ষা করানো হয়েছে।