মোঃ রেজাউল হক শাকিল, ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল ইসলাম বলেন, মাদক, চোরাচালনা, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং ও অবৈধ ড্রেজার মেশিন প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। সকল প্রকার অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসন মাঠে কাজ করছে। এখন থেকে আরও কঠোর ভাবে কাজ করবে প্রশাসন।
সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও আরও বলেন, এ উপজেলায় কৃষি জমি রক্ষায় প্রতিটি এলাকায় অবৈধ খননযন্ত্র (ড্রেজার মেশিন) এর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালান করা হবে। কোথায় কৃষি জমি নষ্ট করে মাটি উত্তলন করলে ড্রেজার মেশিন ও তার সরঞ্জাম জব্দ করা হবে। এছাড়া ড্রেজার মেশিন মলিককে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য মাদকাসক্তি হুমকি হয়ে উঠেছে। এখন মাদক এতটাই সহজলভ্য যে শুধু শহর নয়, প্রত্যন্ত গ্রামেও হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই মাদকের প্রভাব কমানো যাচ্ছে না। আগামী দিনের কর্ণধার দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে মাদক নিয়ন্ত্রণে সর্বাগ্রে সংশ্লিষ্টদের সততা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভাবে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
কিশোর গ্যাং রোধে ইউএনও বলেন, বর্তমান সময়ে সমাজে কিশোর গ্যাং কালচারের উত্থান উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। সাধারণত শহুরে এলাকাগুলোতে বেশি দেখা গেলেও এই সমস্যা এখন গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কিশোর গ্যাং কালচার একটি সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে, যা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সমাধান করা সম্ভব নয়। এটি প্রতিরোধে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ এবং প্রশাসনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। কিশোর গ্যাং কালচারের সঙ্গে জড়িতদের দ্রম্নত বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে যাতে করে অন্য কিশোররা এ ধরনের কার্যকলাপে জড়িত হতে নিরোৎসাহী হয়।
সব শেষে, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকেই এগিয়ে আসলেই বাল্যবিবাহ শতভাগ বন্ধ হবে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কোথাও কোন বাল্যবিবাহ হলে ওই বিবাহের আয়োজকদের পাশাপাশি কাজী, জনপ্রতিনিধি, ইমামদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ইউএনও সামিউল ইসলাম।
সভায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ ফারহানা পৃথা, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) টমাস বড়ুয়া, দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান রিপন ভূইয়া, সাহেবাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, শশীদল ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রিয়াদ, মালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন, শিদলাই ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম আলাউল, মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন, ব্রাহ্মণপাড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ আহাম্মদ লাভলু, মুক্তিযোদ্ধা সবেক কমান্ডার ইদ্রিস মিয়া মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা সবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলতাফ হোসেন, শশীদল ও সালদানদী বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডারসহ আইনশৃঙ্খলা কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।