নেকবর হোসেন
কুমিল্লার হোমনায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা হলো না সামিয়া আক্তার নামের দুই স্কুলশিক্ষার্থীর। স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে নদী পার হতে গিয়ে খেয়ানৌকা ডুবে মারা গেছে এই দুই শিক্ষার্থী। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার কানাই শাহ্ ঘাট সংলগ্ন তিতাস নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃত দুই শিক্ষার্থী পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চরলহনীয়া গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার মেয়ে সামিয়া আক্তার (১২) ও মো. মুসা মিয়ার মেয়ে সামিয়া আক্তার (১৪)। এরা দুজনের নাম একই এবং হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর কামাল স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীরা খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে স্কুলে আবার স্কুল ছুটির পর একইভাবে নদী পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফেরেন। আজ সোমবার বিকালে স্কুল ছুটি শেষে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে খেয়া নৌকাযোগে নদী পার হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সামিয়ারাও।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. মনির হোসেন জানান, ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীবোঝাই খেয়ানৌকাটি কানাই শাহ্ ঘাট থেকে ছেড়ে নদীর মাঝামাঝি যেতেই পাশ দিয়ে একটি ইঞ্চিনচালিত ট্রলার দ্রুতগতিতে রামচন্দ্রপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিল। ওই ট্রলারে সৃষ্ট ঢেউয়ে খেয়ানৌকাটি হেলে-দুলে একদিকে কাঁত হয়ে ডুবে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নৌকায় থাকা সব শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে যায়। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থী পানিতে ডুবে তলিয়ে যায়। ডুবতে থাকা শিক্ষার্থীদের চিৎকার শুনে ঘাটে থাকা স্থানীয় লোকজন ও অন্য সাঁতার জানা অন্য শিক্ষার্থীরা ডুবে যাওয়া একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও বাকি দুজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় লোকজন নদীতে খোঁজাখুঁজি করে এক ঘণ্টা পর তলিয়ে যাওয়া সামিয়া নামের দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, যতটুকু শুনেছি নৌকাটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি লোকজন ছিল। যে কারণে পাশ দিয়ে একটি ট্রলার যাওয়ার কারণে ঢেউয়ের তোড়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘খেয়ানৌকায় নদী পার হতে গিয়ে দুজন শিক্ষার্থী তিতাস নদীতে ডুবে মারা গেছে। কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’